প্রায় ৫ হাজার টন পোস্টার-লিফলেটের আবর্জনা সিটি নির্বাচনের পর পরিষ্কার করেছে পরিচ্ছন্ন কর্মীগণ। এমন নিউজ দেখার কেবলই কানে বাজতে থাকে- দুই সিটিতে ভোটার সংখ্যা ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৮ লাখ ৪৩ হাজার ৮ ও নারী ভোটার ২৬ লাখ ২০ হাজার ৪৫৯ জন। সিটি কর্পোরেশন হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটিতে ভোটার রয়েছেন ৩০ লাখ ১০ হাজার ২৭৩ জন; যার মধ্যে পুরুষ ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৭ ও নারী ১৪ লাখ ৬০ হাজার ৭০৬ জন। অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ভোটার সংখ্যা ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ জন; যার মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪১ ও নারী ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৩ জন। কিন্তু ভোট দিয়েছে মাত্র ২৯%।
এমন অসংখ্য অসঙ্গতির মধ্য দিয়ে এগিয় চলছি। আমরা দেখেছি- ভোটগ্রহণের তারিখ নির্বাচন কমিশনের দূরদর্শিতার অভাবের কারণে ৩০ জানুয়ারি থাকলেও ওইদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী পূজা থাকায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তা পরিবর্তন করে ১ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়। ঢাকার দুই সিটিতে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে সবমিলিয়ে ৭৫০ প্রার্থী ছিলেন। এর মধ্যে মেয়র পদে ঢাকা উত্তরে ৬ জন ও দক্ষিণ সিটিতে ৭ জন বাকি ৭৩৭ জন কাউন্সিলর ও নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করেছেন। মেয়র পদে মূলত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন বিএনপির ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। অপরদিকে ঢাকা উত্তর সিটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. আতিকুল ইসলামের সঙ্গে প্রধান ছিলেন বিএনপির তাবিথ আউয়াল।
ঢাকার দুই সিটিতে প্রথমবার ইভিএমে ভোটগ্রহণ করতে যাচ্ছে ইসি। দুই সিটিতে ভোটগ্রহণের জন্য ২৮ হাজার ৮৬৮টি ইভিএম ছিলো এবার। ঢাকা উত্তরে ১৫ হাজার ৬৯২টি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৩ হাজার ১৭৬টি মেশিনে ভোট পড়েছে মাত্র ১.২ ও ১.৮ ভাগ। তাতে দেখা যায়- দক্ষিণে ১১৫০টি কেন্দ্রে তাপস পেয়েছেন ৪ লাখ ২৪ হাজার ৫৯৫ এবং বিএনপি প্রার্থী ইশরাক হোসেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫১২ ভোট পান। অর্থাৎ ধানের শীষের চেয়ে তাপস ১ লাখ ৮৮ হাজার ৮৩ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হন। আর উত্তরের ১৩১৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ১২০৫ টিতে আতিক ৪ লাখ ১৫ হাজার ৮০২ ও তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির তাবিথ আউয়াল ২ লাখ ৪২ হাজার ৮৪১ ভোট পেয়েছেন। নৌকার প্রার্থী এগিয়ে ছিল ১ লাখ ৭২ হাজার ৯৬১ ভোটে। যা বাকি কেন্দ্রের প্রদত্ত ভোটের চেয়ে বেশি। সেই হিসাবে অনানুষ্ঠানিকভাবে উত্তরে মেয়র পদে আতিকুলই নির্বাচিত হয়েছেন।
আমি ভোট দিতে গিয়ে দেখেছি ইভিএম নষ্ট হয়ে গেছে। দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষার পর একটা ইভিএম নিয়ে আসলেও ভোট দেয়ার সময় স্থানিয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা গোপনবুথে ঢুকে যায়। আবুজর গিফারী কলেজের ওই কেন্দ্রে সবার সামনেই আমার পছন্দসই প্রার্থীকে ভোট দেয়ার পর তারা আমাকে বের হওয়ার সময় বলেন, আপনি তো জব্বর মানুষ।
আর যখন আমি ভোট কেন্দ্রে গিয়েছি, দেখেছি- সকাল গিয়ে দুপুর হয়ে গেছে, কিন্তু ভোটারের কোনো লাইন নেই। ভোট গ্রহণ কাজে দায়িত্বরত ব্যক্তিরা বসে আছেন। মাঝেমধ্যে দু-একজন ভোটার উপস্থিত হন। ভোট দিয়ে চলে গেলে আবার অপেক্ষা করেন পরবর্তী ভোটারের জন্য। এই চিত্র রাজধানীর বেইলি রোড এলাকায় অবস্থিত সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ কেন্দ্রের। সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ কেন্দ্রে মোট তিনটি কেন্দ্র রয়েছে। নিচতলায় অবস্থিত কেন্দ্রে তথ্য সংগ্রহ করে জানা গেল, দুপুর ১২টা ১০ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়েছে মাত্র ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১৬ জন আহত হয়েছেন।
ইভিএমে ভোট দেওয়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় ভোটাররা ছিলেন সরব। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এজি চার্চ কেন্দ্রের চার নম্বর কক্ষে ৩৩৩ জন ভোটারের মধ্যে সকাল ১০টা ২৬ মিনিট পর্যন্ত ভোট দেন মাত্র ১২ জন। সোয়া ১১টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাও বলেছেন, ভোটার উপস্থিতি 'এখন পর্যন্ত' ভালো না। সময় গড়ালে উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা তার। ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী আতিকুল ইসলামের কেন্দ্র উত্তরার নবাব হাবিবুলস্নাহ মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি কক্ষে প্রথম ঘণ্টায় ভোট পড়ে মাত্র দুটো। যেখানে মোট ভোট ৩৭৬টি। আরেকটি ভোটকক্ষে ৩৭২ ভোটের মধ্যে সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত পড়ে মাত্র একটি। অন্যদিকে, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একটি ভোটকক্ষে সকাল ৮টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়ে মাত্র তিনটি, যেখানে মোট ভোটার ৩৪০ জন। সকাল সাড়ে ৮টায় ওই কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, ভেতরে-বাইরে আওয়ামী লীগ সমার্থিত প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা অবস্থান করছেন। পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তাদের তৎপরতা ছিল না। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং হাজারীবাগের সালেহা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও ভোটারের উপস্থিতি কম দেখা গেছে।
আর হাস্যকরভাবে ভোটারের উপস্থিতি কম হওয়ার জন্য সকালের শীতকে দায়ী করেছেন দক্ষিণ সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস। ভোটগ্রহণ শুরুর সোয়া দুই ঘণ্টার মাথায় তিনি গণমাধ্যমকে- ‘শীতের কারণে ভোটারের উপস্থিতি কম। ১১টার পর কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা করছি।’ বলে আবারো প্রমাণ করেন যে, শেখ মনির সন্তান হলেও আদৌতে উত্তরাধিকার চাপিয়ে দেয়া হয়েছে কাঁধে। সত্যিকারের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বা অধ্যবসায়ী তিনি নন।
নির্বাচনী সংঘর্ষে আহত ২০ জন। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগের দিন শুক্রবার রাত ১২টা থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ ১৬ জনের মতো আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। শুক্রবার রাত ১২টা থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আহতদের হাসপাতালে আনা হয়। তাদের বেশিরভাগই ইট-পাটকেলের আঘাতে আহত হয়েছেন। এছাড়া দুজন ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন, তাদের একজনকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। শুক্রবার রাতে ডেমরা কোনাপাড়ার ৬৪, ৬৫ ও ৬৬ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে আনারস মার্কার প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মনিরা চৌধুরী, তার স্বামী আতিকুর রহমান, ছোট ভাই মাসুম চৌধরী ও তার সমর্থক রাসেলকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নিলুফার ইসলামের (মোবাইল মার্কা) সমর্থকরা কিল-ঘুষি মেরে আহত করে। রাত আড়াইটার দিকে তাদের ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়। পরে চিকিৎসা শেষে রাতেই তারা হাসপাতাল থেকে চলে যান। সকালে তেজগাঁও নাখালপাড়ার শাহিনবাগ সিভিল অ্যাভিয়েশন স্কুল কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মঞ্জুর সমর্থকের ইট-পাটকেলের আঘাতে ২৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আশরাফ উদ্দিন কাঞ্চনের সমর্থক সাখাওয়াত হোসেন খোকন (৪৫) মাথায় আঘাত পেয়েছেন। একই ঘটনায় মঞ্জুর সমর্থক আ. মালেকও (৬২) আহত হন। সাখাওয়াত হোসেনের অভিযোগ, কেন্দ্রে ঢুকতে চাইলে তাদের ওপর ইটপাটকেল ছোড়া হয়। কাঠালবাগান এলাকার খান হাসান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মারধরের শিকার হয়ে বিএনপির কাউন্সিলর সমর্থক দুইজন আহত হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তাদের ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আহতরা হলেন আতিক (৩৫), তার মাথায় আঘাত লেগেছে। এছাড়া নাসির উদ্দিন (৩৩) নামে একজনের শরীরে কিল-ঘুষির আঘাত রয়েছে। সেগুনবাগিচা আইডিয়াল স্কুল কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্ট খলিলুর রহমানকে (৩২) ঢুকতে না দিয়ে মারধরের অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া লালমাটিয়া মহিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে ভোর ৪টার দিকে মোহাম্মদপুর ২৯, ৩০ ও ৩২ নং মহিলা ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী রুজি জয়ীতার (হেলিকপ্টার মার্কা) পোস্টার লাগানোর কাজ করার সময় ৩২ নং ওয়ার্ডের হাসানুল ইসলাম রাষ্ট্রন (ঠেলাগাড়ী মার্কা)-এর লোকজনের ছুরিকাঘাতে রনি (১৭) ও শিপন (১৯) আহত হন। তাদের বাম হাতে এবং মুখমন্ডলে ছুরির আঘাতের জখম রয়েছে। শনিবার মোহাম্মদপুর এলাকায় নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের সময় আহত হন সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান সুমন (৩২)। তার মাথায় আঘাত রয়েছে। তিনি বর্তমানে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এছাড়া উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টর এলাকায় ভোটকেন্দ্রে আহত হন দুজন। তারা হলেন মিরাজ (৩৫) সাদ্দাম হোসেন (২৫)। যাত্রাবাড়ী ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে ইদ্রিস আলী (৩০) নামের একজন আহত হয়। সে আওয়ামী লীগ সমর্থক বলে দাবি করে। যাত্রাবাড়ী ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে আহত হন সাগর (২৩) নামের এক যুবক। তিনি জাতীয় পার্টির সমর্থক বলে দাবি করেন। দুপুরে আজিমপুর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচন কেন্দ্রে আহত হন ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি জুবায়ের হোসেন শ্যামল (২৫)। তার দাবি বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাকে মারধর করেছে। ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংবাদ সংগ্রহের সময় সাংবাদিক মুস্তাফিজুর রহমান সুমনের ওপর হামলার ঘটনায় ফুটেজ দেখে হামলাকারীকে শনাক্ত ও আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেনর্ যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের র্(যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাংবাদিক সুমনকে দেখতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর মোহাম্মদপুর সাদেকখান রোড এলাকায় এক কাউন্সিলরের সমর্থকদের হামলায় আহত হয়েছেন সুমন। এমনটি শোনার পরই তাকে দেখতে আসি। ক্রাইম রিপোর্টার ও আমরা একই রকম শঙ্কায় থাকি। অনেক সময় হতাহতের ঘটনাও ঘটে। আমি তাকে দেখেছি এবং তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি ভালো আছেন। তার মাথার সিটি স্ক্যান করা হয়েছে।
আর এমন ন্যাক্কারজনক মারামারির পর এমন নির্বাচন তিনি চাননি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তিনি গণমাধ্যমের সামনে হাসি হাসি মুখে বলেছেন- আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আমাদের নির্দেশ, এমন ঘটনা যদি ঘটে তারা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে। সকাল থেকে যা দেখলাম, এখন পর্যন্ত (বেলা সোয়া ১১টা) ভোটার উপস্থিতি ভালো না। দেখলাম এই কেন্দ্রে (উত্তরার আইইএস স্কুল অ্যান্ড কলেজে) ২৭৬ জন ভোটার এখন পর্যন্ত এসেছে। আশা করছি, পরে আরও আসবে। তিনি বলেন, সকালের দিকে যে দু-একটি কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি সেখানেও লোকজন কম ছিল। আমরা ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি করেছি। আমাদের যে দায়িত্ব সেটা পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করেছি-রিটার্নিং অফিসার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগসহ সব কিছু। আমাদের দিক থেকে প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি নেই। যারা প্রার্থী, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে ভোটার আনার দায়িত্ব তাদের বেশি। বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে জানেন কি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কে এম নূরুল হুদা আরো একবার গৃহপালিত প্রাণির মত বলেছেন- এজেন্টদেরও টিকে থাকার সামর্থ্য থাকতে হবে। একজন বললেই বেরিয়ে গেলে সেটা ম্যানেজ করা কঠিন। বিভিন্ন কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি নির্দেশ রয়েছে, যদি কোনো কেন্দ্র থেকে কোনো দলের এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ পান, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ওই এজেন্টকে আবার ওই কেন্দ্রে ঢুকিয়ে দিন।
তবে বরবরের চেয়ে কম ভোটারের নির্বাচন কেন প্রয়োজন ছিলো বা হলো সে বিষয়ে আমার মতামত হলো- ১. ধারাবাহিকভাবে বাজে নির্বাচন হওয়া ২. ভোটের আগেই ভয়ভীতি দেখানো ৩. সন্ত্রাসীদের উপস্থিতির আশঙ্কা নিয়ে নেগিটিভ প্রচারণা ৪, ভোটকেন্দ্রের মুখে জটলা ৫. ভোটের আগেই রেজাল্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ৬. ইভিএম নিয়ে কমিশনের প্রচার-প্রচারণার ঘাটতি ও ৭. নির্বাচন কমিশনের দায়সাড়া গোছের কর্মকান্ড এবং দালালি প্রকাশ হয়ে যাওয়া।
এই ৭ কারণে ভোটারা কেন্দ্রমুখী হননি। এমন পরিস্থিতিতে দুপুরের পর অনেক প্রার্থী বাসা-বাড়িতে গিয়েও ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে পারেনি। এভাবে বাংলাদেশকে আর কতটা অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেবেন? সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের কথা মুখে মুখে নয়; আসুন কাজে বাস্তবায়ন করি। উদার নিরপেক্ষতায় আমাদের রাজনীতি এগিয়ে চলুক, এগিয়ে চলুক কন্টকহীন প্রতিটি দিন-ভয়হীন-মুক্ত স্বাধীন...
মোমিন মেহেদী : চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিবি