সম্পত্তির লোভে সৎ মাকে পিটিয়ে ঘরের ভেতর আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে সৎ ছেলেমেয়েদের বিরুদ্ধে। আপন মেয়ে মাহমুদা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে আহত মা সখিনা বেগমকে (৫০) উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে পুলিশ। সোমবার কুমিল্লার হোমনা উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের ঝগড়ার চর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মাহমুদা বেগম সম্পত্তির লোভে তার মাকে মারধরের অভিযোগে সৎ ভাই হেলাল মিয়া, মেহেদি মিয়া, ভাবি শাহিনুর আক্তার, সৎ বোন অরুণা আক্তার ও শিরিনা আক্তারের নামে হোমনা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এতে দুই ছেলে হেলাল মিয়া ও মেহেদি মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে এসেছে পুলিশ।
অভিযোগে জানা যায়, এগারো বছর আগে প্রথম স্বামীর সঙ্গে সখিনা বেগমের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পরবর্তীতে সখিনা বেগম উপজেলার ঝগড়ার চর গ্রামের হাজি আবদুল কুদ্দুসের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর দ্বিতীয় স্বামী তাকে পনেরো শতাংশ জমি দান করেন। ওই পনেরো শতাংশ জমিই তার সৎ ছেলেমেয়েদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য এগারো বছরের সাংসারিক জীবনে তাকে বহুবার নিপীড়ণ-নির্যাতন সইতে হয়েছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে তার স্বামীও রেহাই পায়নি ছেলেমেয়েদের হাত থেকে।
হাসপতালের বিছানায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে সখিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন,‘ আমার স্বামী আমারে জায়গা দিছে। জায়গার লাইগ্যা এহন ছেলেমেয়েরা আমারে ঘরের ভিতর আটকাইয়া মাইরা ধইরা, জোর কইরা জায়গা অফেজ (ফিরিয়ে) নিতে চায়। আমার স্বামী আমাকে জায়গা দিছে, তা আমি অফেজ দিব কেরে (কেন)? স্বামী আগাইয়া আসলে তারেও মাইরধইর করে। কয়দিন বাদে বাদেই আমার স্বামীরেও মাওে, আমারেও মারে। কান্নাকাটি শুনে হাটিপাড়ার মানুষ (প্রতিবেশী) আইসা বিচার আচার কইরা দিয়া যায়। এমন কইরা কয়দিন আগেও হাসপাতালে আট দিন থাইক্যা গেছি। এরইমধ্যে আজ (সোমবার) সব ছেলেমেয়েরা মিলে আবার মাইরধর করছে। কোনো রকমে ঘরের ভিতর থাইক্যা আমার মাইয়ারে ফোন করলে সে পুলিশ নিয়া আমারে উদ্ধার কইরা হাসপাতালে ভর্তি করাইছে।’
এ ব্যাপারে হোমনা থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) সিকান্দার হোসেন মোল্লা বলেন, ওই নারীর (সখিনা) স্বামী না-কি স্ত্রীকে সকল সম্পত্তি দিয়ে ফেলেছ। এই নিয়ে পারিবারিক ঝামেলায় সৎ মায়ের সঙ্গে ছেলেমেয়েদের কথাকাটি হয়েছে। একপর্যায়ে ছেলেদের ধাক্কায় পড়ে যান তিনি। এ ঘটনায় ওই নারীর আগের সংসারের মেয়ে অভিযোগ দিলে মিমাংসার স্বার্থে দুই ছেলে হেলাল মিয়া ও মেহেদি মিয়াকে থানায় এনেছি। মিমাংসা না হলে পরবর্তীতে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।