আর মাত্র কয়েকঘন্টা পরেই ২১ ফেব্রুয়ারি। ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর দিন। এদিন দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানায়। তবে প্রতিবারের মতো এবারও সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেভোলার মনপুরা উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
এই উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে সেখানেই শ্রদ্ধা জানায়।
উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৪৭টি, মাধ্যমিক ও নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১০টি, কলেজ রয়েছে ৩টি, মাদ্রাসা রয়েছে ৬টি। এর মধ্যে হাজিরহাট মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মনপুরা সরকারি ডিগ্রি কলেজ ও ছমেদপুর বাংলাবাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্থায়ী শহীদ মিনার রয়েছে।
সাকুচিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুফিজুর রহমান বলেন, সাকুচিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় একটি ঐতিহ্যবহী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এখানে কোনো শহীদ মিনার নেই।যদি তাদের স্কুলে একটি শহীদ মিনার থাকতো তাহলে ভালো হতো।
ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র নাজমুল হাসান জানান, ২১ ফেব্রুয়ারির দিন আমাদের বড় ভাইয়েরা বাঁশ, ইট, কলা গাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে। আমরা ওখানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাই।
এ বিষয়ে মনোয়ারা বেগম মহিলা কলেজের ছাত্রী সিমু বেগম বলেন, ভাষার জন্য যারা শহীদ হয়েছিলেন, যাদের জন্য আমরা বাংলা ভাষা পেয়েছি, যাদের জন্য আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারি সেই শহীদের জন্য আমরা গর্ব করি। দুঃখের বিষয় আমাদের কলেজে শহীদ মিনার নেই। আমাদের কলেজে একটি শহীদ মিনার তৈরির দাবি জানাই।
হাজীর হাট মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং মনপুরা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মনোয়ারা বেগম জানান, মনপুরারঅধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এটি দুঃখের ব্যাপার। এটি হলে শিক্ষার্থীরা সরাসরি ইতিহাসকে দেখতে পারে, জানতে পারে।
এদিকে শহীদ মিনার থাকা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা জানান, একুশে ফেব্রুয়ারী এলে শহীদ মিনার পরিষ্কার করা হয়। এরপর আবার অযতœ আর অবহেলায় সেটি ব্যাবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
মনপুরা উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান জানান, উপজেলার ৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নেই। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুলচন্দ্র দাস জানান, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে।