অবহেলার শিকার হয়ে পড়েছে গাইবান্ধার বোনারপাড়া রেলজংশন স্টেশন। ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্বেও আন্ত:নগর ট্রেন গুলোর আসন বরাদ্দ কম, দির্ঘ দুই দশকের পুরনো অবকাঠামোর উন্নয়ন না করা, লোকো মোটিভ সহ রেলের গুরুত্ত্বপুর্ন স্থাপনা উঠিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র ও বোনারপাড়া হতে দিনাজপুর গামী রামসাগর ট্রেনটি একযুগ ধরে বন্ধ থাকা সহ নানা কারনে দিনদিন আরও অবহেলিত হয়ে পড়ছে স্টেশনটি। বিশেষ করে বন্ধ ট্রেনটি চালু না হওয়ায় যোগাযোগ কষ্টে রয়েছেন চার উপজেলার মানুষ।
স্বল্প সময়ে এ এলাকাবাসীর রংপুর, দিনাজপুর সহ উত্তর এলাকায় যাতায়াতের একমাত্র বাহন ছিলো এটি। ট্রেনটি চালুর জন্য এলাকাবাসী দির্ঘ্যদিন ধরে বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ, ও ট্রেন অবরোধ সহ আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসলেও কোন কর্ণপাত করছেনা রেলকর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিশ সময়ে নির্মাণের পর উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এ রেল স্টেশনে। ট্রেন থেকে নেমে যাওয়ার জন্য আজও ভালো কোন রাস্তা কিংবা রিক্সা-ভ্যানের স্ট্যান্ড নির্মাণ হয়নি। দির্ঘদিনের পুরনো ভবনে চলে স্টশনের কার্যক্রম। নানা অজুহাত দেখিয়ে লোকো মোটিভ সেড তুলে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। আন্ত:নগর ট্রেন গুলোর আসন বরাদ্দ কম থাকায় প্রতিদিন দুই শতাধিক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে ফিরে যায়। ্এদিকে রামসাগর নামের ট্রেনটি কোন কারন ছাড়াই বন্ধ করে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। গাইবান্ধা জেলার সদর, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও গোবিন্দগন্জ উপজেলা ছাড়াও জামালপুর জেলার কয়েকটি উপজেলার মানুষও এ ট্রেনের উপর নির্ভর করে উত্তর এলাকার জেলা গুলোতে ব্যবসা-বাণিজ্ব্য করত। রংপুর বিভাগীয় শহরে যাওয়া-আসার জন্য এটি খুবই জরুরি ছিল। বোনারপাড়া রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন সকাল ৬টায় ট্রেনটি দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করত। গাইবান্ধা, কামারপাড়া, নলডাঙ্গা, বামনডাঙ্গা, চৌধুরানী, পীরগাছা, কাউনিয়া রেল স্টেশনের পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ নিরাপদে এবং স্বাচ্ছন্দে যাতায়াত করতে পারত ট্রেনটিতে। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড হওয়ায় প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ তাদের দাপ্তরিক কাজে দিনাজপুর গিয়ে কাজ শেষ করে আবার একই ট্রেনে বাড়ি ফিরে আসার সুযোগ পেত। এতে আর্থিক ব্যয় কম হত। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী নিয়ে স্বাচ্ছন্দে যাতায়তের মাধ্যম ছিলো এটি। ট্রেনটি বন্ধ থাকায় যাত্রীদের দূর্ভোগ নেমে এসেছে। বোনারপাড়ার যাত্রী নিজাম উদ্দিন জানান, এ ট্রেন বন্ধ থাকায় খুব কষ্ট পাচ্ছি আমরা। ট্রেন বন্ধের ব্যাপারে ক্ষোভ জানিয়ে রংপুরগামী যাত্রী গৌতম চন্দ্র মোদক জানান, এই জনদাবিটি এলাকাবাসী দির্ঘদিন ধরে রেলকর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আসলেও কোন কাজ হচ্ছে না। এ ব্যাপারে কথা হলে বোনারপাড়া রেল ষ্টেশন মাষ্টার খলিলুর রহমান বলেন, আসলে ট্রেনটি বন্ধের বিষয়টি পুরোপুরি রেলওয়ের উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের। স্থানীয় ভাবে এর সমাধান সম্ভব নয়। লালমনিরহাট পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে ডিভিশনাল ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট (ডিটিএস) ¯েœহাশিস দাশ গুপ্ত জানান, এলাকাবসীর স্বারকলিপি হাতে পাওয়ার পর আমরা উপরে পাঠিয়েছি। দেখা যাক, কি সিন্ধান্ত আসে।