রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের গাজী পাড়ার চার বেকার যুবক হাঁস পালন করে বেকারত্ব ঘুচিয়েছেন। চারজনের দুজন বর্তমানে স্নাতক সম্মান শ্রেনীতে পড়াশোন করছেন অন্য দুজন স্নাতোকোত্তর শেষ করেছেন। পড়াশোনা শেষ করে অনেক জায়গায় চাকরির পেছনে ছুটে কোন লাভ হয়নি। শুধু সময় অপচয় হয়েছে তাদের। এজন্য চার বন্ধু মিলে আর চাকরির পেছনে না ঘুরে তাদের গ্রামের পাশদিয়ে বয়ে যাওয়া মড়া পদ্মা নদীর কাছে চার বছর আগে গড়ে তুলেছেন হাঁসের খামার। বর্তমানে এ হাঁসের খামার থেকে তাদের প্রতিদিন ডিম বিক্রি করে ভালো লাভ হচ্ছে। সবাই এখন হাঁস পালন করে স্বাবলম্বি। তবে সরকারের কাছ সথেকে ঋণ সহযোগীতা পেলে তাদের খামারের পরিসর আরো বাড়াতে পাবেন বলে জানান।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের শিক্ষিত চার বেকার যুবক বন্ধু, রিপন গাজী, ইলিয়াছ মোল্লা, ছাইফুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম মিলে চাকরির পেছনে ঘুরে চাকরি না পেয়ে বেকারত্ব থেকে মুক্তি পেতে গড়ে তুলেছেন হাসের খামার। নদীতে বিভিন্ন ধরনের শামুক, শেওলা, ছোট মাছ সহ বিভিন্ন ধরনের খাবার থাকায় নদীর পাশে এই খামারটি গড়ে তুলেছেন। এতে তাদের খরচ কমেছে অর্ধেকেরও বেশি। চার বছর আগে তারা প্রায় দের হাজার হাঁস দিয়ে শুরু করেন এ খামারটি। এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় গড়ে ছয়শত থেকে ৮ শত ডিম পেয়ে থাকেন। প্রতিদিন এ ডিম বিক্রি থেকে তাদের আয় হয় ৭ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে মাসে তাদের প্রায় এক লক্ষ টাকারও বেশি আয় হয়।
খামারী চার বন্ধু বলেন, সাধারনত বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে তারা এই খামারটি গড়ে তুলেছেন। গোয়ালন্দের উজানচর ইউনিয়নের গাজী ডাঙ্গা গ্রামের মড়া পদ্মানদীর তীরে তাদের এই খামারটি গড়ে তুলেছেন। প্রতিদিন সকালে নদীতে হাঁসগুলো ছেড়ে দেন আর বিকেল বেলা হাসগুলো খামারে আনা হয়। নদীতে হাঁস পালনের কারণে বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ায় তাদের খরচ হয় অনেক কম। খামারের তারা চারজনই (স্নাতক ও স্নাতকোত্তর) শিক্ষিত। চার বছর আগে তারা দেও হাজার হাঁ কিনে এই খামারটি গড়ে তুলেছেন। প্রথম বছরের পর থেকেই হাঁগুলো ডিম দিতে শুরু করে। প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ শত ডিম দেয় যা থেকে প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার টাকার ডিম বিক্রি করতে পারেন। ডিম গুলো কামার থেকেই বিক্রি করেন তারা। প্রতি মাসে এখান থেকে তাদের প্রায় এক লক্ষ টাকার বেশি আয় হয়। বর্তমানে তারা আর বেরা নেই বলে জানান। সরকারী ঋণ পেলে তারা খামারটি সম্প্রসারনের করতে পারতেন বলে জানান। খামারটিতে একটি ছেলে রাখা হয়েছে যে সারাদিন হাঁসগুলো দেখাশুনা করে খাবার দেয়। এখান থেকে ছেলেটিকে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয় যা দিয়ে ছেলেটির সংসারও চলে বলে জানান।
প্রতিবেশিরা বলেন বেকার এই চার বন্ধু হাঁস পালন করে বেশ ভালো আছে। তাদের দেখাদেখিতে অন্যান্যরাও হাঁস সহ বিভিন্ন ধরনের খামার করতে আগ্রহী হবে বলে জানান। তবে সরকারের কাছ থেকে ঋনের সুবিধা পেলে বেকার এই খামারিদের হাঁস পালনে সুবিধা হত।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নুরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, গোয়ালন্দ উপজেলার উজান চর ইউনিয়নের গাজী ডাঙ্গা গ্রামের চার বেকার যুবক বন্ধু মিলে হাসের খামার করেছে। মড়া পদ্মা নদীতে এ হাঁস গুলো লালন পালন করার কারণে হাঁস গুলো সারাদিন নদী থেকেই খাবার খেতে পারছে যে কারণে লালন পালনে খরচ কমে গেছে অনেক। এর থেকে খামারিরা প্রতিদিন ৮ থেকে ৯শত ডিম পাচ্ছে যা থেকে প্রতিদিন ১০ হাজার থেকে ১২ টাকার ডিম বিক্রি করতে পারছে। তারা এখন তাদের বেকারত্ব ঘুচিয়েছেন এবং তাদেও দেখাদেখিতে অন্যান্যরা হাঁস পালতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন এবং দেশের উন্নয়নে ভ’মিকা রাখবেন। প্রানী সম্পদ বিভাগ তারা বিভিন্ন পরামর্শ প্রধান করেন এবং তাদের কাছে আসলে খামার বড় করার জন্য সার্বিক সহযোগীতা করবেন বলে জানান।