ঝালকাঠি সদর উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন সময় বরাদ্ধকৃত অর্থ বিতরন না করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০১৯ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালনের বরাদ্ধের টাকা বিদ্যালয়গুলো বুঝে পায়নি ৭ মাসেও। একই বছরের অক্টোবর মাসের অনুষ্ঠিত বিজয় ফুল উৎসবের বরাদ্ধ হওয়া টাকা পায়নি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। ২০১৯ সালের পিইসি সমাপনী পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের বিল পায়নি শিক্ষকরা। ২০২০ সালের ১৪-১৬ জানুয়ারী স্কুল পর্যায়ে বাধ্যতামূলক অনুষ্ঠিত হওয়া আন্তক্রীড়া অনুষ্ঠানের বরাদ্ধের টাকা ছাড় করেনি উপজেলা শিক্ষা অফিস। বিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন খাতের বিল প্রদানে বিভিন্ন অজুহাতে দীর্ঘ সূত্রিতা করার অভিযোগও করেছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। প্রাথমিক শিক্ষা ব্যাবস্থা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন এসব বরাদ্ধ হওয়া অর্থ বিতরন না করায় জাতীয় দিবস পালনে অনিহা দেখা দিয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে। বই বিতরনের উদ্দেশ্যে পরিবহনের অর্থ ২ বছর যাবৎ ধরে পাচ্ছেননা বিদ্যালয়গুলো। সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সালেহা খাতুনের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের অভিযোগে শেষ নেই। গোডাইন থেকে বিদ্যালয়ে বই বিতরনের ক্ষেত্রে স্কুল প্রতি খরচ নিচ্ছেন শিক্ষা অফিস। উপজেলা ক্রীড়া অনুষ্ঠানের খরচ, উপকরন মেলার খরচ, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টূর্নামেন্টসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে বিদ্যালয় থেকে নিয়মিত চাদা তোলেন শিক্ষা অফিস।
অফিসিয়াল বদলী, পেনশনসহ বিভিন্ন কাজে শিক্ষা অফিসে টাকা ছাড়া ফাইল চলেনা বলেও অভিযোগ করেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। নানা অনিয়ম সত্বেও কোন শিক্ষক রোষানলে পড়ার ভয়ে কেউ কোন অভিযোগ করছেননা। কেউ কোন অভিযোগ করলে সুকৌশলে হয়রানীর স্বীকার হতে হয়।
এ বিষয়ে বিভিন্ন শিক্ষক-কর্মাচারী ও শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগের তদন্ত পুর্বক বিচার দাবী করেছেন।
শ্রীমন্তকাঠি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কল্পনা রানী ইন্দু বলেন, শিক্ষক নেতাদের ছত্র ছাড়ায় শিক্ষা কর্মকর্তা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বিল আটকে রেখেছেন। দালাল চক্রের কাছে জিম্মি রয়েছেন শিক্ষা অফিস। টাকা ছাড়া কোন ফাইল ছাড় হয়না শিক্ষা অফিস থকে। শিক্ষক নেতাদের আজ্ঞাবহ শিক্ষরাই সকল ধরনের সুগো সুবিধা ভোগ করেন। এক শ্রেনীর শিক্ষক নেতারা সিন্ডিকেট করে লুটপাট করা হচ্ছে।
এ ব্যপারে সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সালেহা খাতুন বলেন, ১৫ই আগস্ট ও বিজয় ফুলের টাকা এজি অফিস থেকে ছাড় না করায় বিদ্যালয়গুলোতে টাকা দেওয়া যাচ্ছেনা। শিক্ষকদের আমি এজি অফিস থেকে বিল ছাড়িয়ে নিতে বলেছি। কেউ না আসায় রাজাপুর স. প্রা. বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামিমকে এজি অফিস থেকে ছাড় করার জন্য বলেছি। আর ঝালকাঠির শিক্ষকরা রাজাপুর ও কাঠালিয়ার পিইসি পরীক্ষার খাতা দেখেছে। কিন্তু ঐ দুই উপজেলায় শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকায় খাতা দেখার টাকা দেওয়া যায়নি।