চাঁদাবাজীর অভিযোগে শাহাদাৎ হোসেন নামের বগুড়া ৪র্থ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের এক এএসআই কে বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে দিনাজপুর জেলা পুলিশ।
অভিযান কালে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর এলাকায় লোকজনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় এক নারীর অভিযোগে তাকে ২মার্চ (সোমবার) রাতে বগুড়া শহর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।বিষয়টি নিশ্চিত করে হাকিমপুর থানা জানায়, আটককৃত এসআইকে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে বলা হয়, গত ১লা মার্চ রোববার রাতে বগুড়া নিশিন্দারাস্থ ৪র্থ আর্মড পুলিশ ব্যটালিয়নের একটি অভিযানিক দল দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার মহড়াপাড়া গ্রামে অভিযান চালায়। অভিযোগ উঠে এ সময় সাদা পোশাকে ৬জনের সাদা পোষাকধারী একটি দল নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গ্রামের বিভিন্ন লোকজনকে আটক করে মাইক্রোবাসে তোলেন এবং পরে তাদের ক’জনকে টাকার বিনিময়ে সেখান থেকেই ছেড়ে দেয়।
আটকদের মধ্যে কমপক্ষে একডজন মামলার আসামি মাহেরাপাড়া এলাকার কুখ্যাত চোরাকারবারী এবং মাদক ব্যবসায়ী আরমান ইসলাম নামের একজন বিকাশে ১০হাজার টাকা দেবে মর্মে ছাড়া পায়। পরে ঘটনার রাতে আরমানের স্ত্রী তারামনি বেগম হাকিমপুর থানায় অজ্ঞাত ৬ব্যক্তিকে বিবাদী করে একটি মামলা করে।
এদিকে মামলায় দেওয়া বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরে হাকিমপুর-ঘোড়াঘাট সার্কেলের সিনিয়র এসপি আখিউল ইসলামের নেতৃত্বে দিনাজপুর পুলিশের একটি দল সোমবার সন্ধ্যায় বগুড়ায় আসে। এ সময় তারা বগুড়া সদর থানা সংলগ্ন আকবরিয়া মার্কেটে সাজুর বিকাশের দোকানে গিয়ে বিকাশ রেজিস্ট্রার দেখে জানতে পারেন এএসআই শাহাদৎ হোসেন সোমবার দুপুরে নিজে স্বাক্ষর করে ১০ হাজার টাকা গ্রহণ করেছেন।
এসময় তারা কৌশলে এসআই শাহাদৎ হোসেনকে বগুড়া সদর থানায় ডেকে আনেন। সে সময় দিনাজপুর জেলা পুলিশের দলটি বগুড়া সদর থানার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সনাতন চক্রবর্তীর রুমে যান।
এসময় সেখানে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করার একপর্যায়ে দিনাজপুর পুলিশের সাথে আসা বাদীনির স্বামী আরমান ইসলাম এএসআই শাহাদাৎকে সনাক্ত করলে সে সহ আরমান দু’জনেই রুম থেকে দৌড়ে পালাবার চেষ্টা করে। এ সময় সদর পুলিশের একটি দল তাদের ধাওয়া করে থানার সামনে রাস্তা থেকে গ্রেফতার করে।
এসময় সদর থানার এসআই নুর আলম রুম থেকে বের হন এবং বিষয়টি না জেনে এএসআই শাহাদৎকে চিনতে পারেন এবং তাকে পুলিশ সদস্য হিসাবে পরিচয় দেন। দিনাজপুর পুলিশের অভিযোগ এ সময় এএসআই শাহাদাৎকে ছাড়িয়ে নিতে ধ¯তাধস্তি হয় সেখানে । পরে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীর হস্তক্ষেপে এএসআই শাহাদৎকে দিনাজপুর জেলা পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হলে।পরে রাতেই তাকে দিনাজপুরের হাকিমপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে মঙ্গলবার দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি সার্বিক) এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদ সংস্থা এফএনএস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরে বগুড়া জেলা পুলিশের সহযোগিতায় এএসআই শাহাদৎকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে স্থানীয় থানা ও সংশ্লিষ্ট ৪র্থ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিযন ইউনিটকে পূর্ব অবহিত করার নিয়ম থাকলেও দিনাজপুর পুলিশের পক্ষে সে নিয়ম অনুসরন করা হয়নি এমনটি জানা গেছে।