লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মেঘনা নদীতে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মাছ ধরার অপরাধে ২০ জেলেকে আটকের পর অর্থদন্ড করে ছেড়ে দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও রায়পুরে দায়িত্বরত সহকারী কমিশনার ভূমি আখতার জাহান সাথী এ রায় প্রদান করেন। এর আগে রোববার সকালে মেঘনা নদীর হাজিমারা পুরান বেঁিড় মাথা থেকে ২০ জেলে আটক করে মৎস্য বিভাগ।
পুলিশ জানান,অর্থদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন ভোলা মেহেদীগঞ্জের জেলে মো. মতিন (২৫),হৃদয় (১৫),মো.শামীম (১৮),রাকীব (১৫),মোজাম্মেল(২৭),মনির হোসেন মাঝি(৩৫),রফিক চকিদার (২৪),কামাল (২৫),দেলোয়ার (৩২),আলাউদ্দিন (২৬), সোহাগ (২১) ও বরিশালের রাজ্জাক (২৫),অলি উদ্দিন (২২),হোসেন আলী (২২),সহ লক্ষ্মীপুরের ইমাম হোসেন (২৫),হাসান আলী (২৬) মোট ২০ জন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রায়পুর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন। তিনি জানান, আটক করা হয়েছে ২০ হাজার মিটার কারেন্টজাল,৩ মন জাটকা,৩ টি মাছধরার ট্রলারসহ ২০ জেলেকে। পরে জেলেদের ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করা হয়ে আদালতে তারা তাদের দোষ সিকার করেন। পরে দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জেলেদের ৩ তিন জনকে ৫ হাজারসহ ১৭ জন জেলেকে ২ হাজার করে ৩৪ হাজার টাকা অর্ধদন্ড প্রদান করেন। জালগুলো প্রকাশ্যে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। জাটকা ইলিশগুলো স্থানীয় এতিম খানায় বিলিয়ে দেওয়া হয়। আটর আটককৃত তিনটি নৌকা পরবর্তীতে টেন্ডারের মাধ্যমে লিলাম দেওয়া হবে।
রায়পুর থানার ওসি তোতা মিয়া জানান, পুলিশের সহযোগীতায় মেঘনা নদী থেকে ২০ জেলেকে আটক করেছে মৎস্য বিভাগ। পরে তাদেরকে ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করা হয়। আটকের পর ২০ জেলেকে অর্থদন্ড করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলাল হোসেন জানান, এ জেলায় প্রায় ৫২ হাজার জেলে রয়েছে। এদের মধ্যে নিবন্ধধিত ৪৩ হাজার ৪ শত ৭২ জন জেলে নিবন্ধিত রয়েছে। দুই মাসের জন্য প্রতি জেলেকে ৪০ কেজি হারে খাদ্য সরবরাহ করা হবে। জাটকা সংরক্ষন ও ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ২মাস লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১শ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার।এ সময় বরফ কলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন অন্য কোথাও থেকে বরফ আসতে না দেওয়া নদী সংলগ্ন খাল থেকে নৌকা বের হতে না দেয়া,মাছঘাট সংলগ্ন বাজারের নৌকা ও ট্রলারের জ্বালানি তেলের দোকান বন্ধ রাখাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান,ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্রে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারে নিষোধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এসময মাছ শিকার,পরিবহন,মজুদ ও বাজারজাতকরন অথবা বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রতিদিন নদী মৎস্য বিভাগ,জেলা প্রশাসন ও কোষ্টগার্ডের যৌথ অভিযান চলবে। এ আইন আমান্য করলে ১ থেকে ২ বছরের জেল অথবা জরিমানা এবং উভয়দন্ডের বিধান রয়েছে।
এ দিকে স্থানীয় জেলেদের দাবী, সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে না যাওয়ার ঘোষনা দিলেও সরকারী প্রনোদনা সঠিকভাবে প্রকৃত জেলেরা পান না বলে অভিযোগ করেন জেলেরা। প্রকৃত জেলেদের মধ্যে বরাদ্ধকৃত ভিজিএফের চাউল বন্টন করার আহবান জানান। তাহলেই সরকারের এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন হবে।