লক্ষ্মীপুরে তন্তুবায় সমবায় সমিতি লিমিটেডের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনের প্রতিদ্বন্ডীতা প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা রাসেল মাহমুদ মান্নার মনোনয়নপত্রে সত্যায়ন না করায় তা দাখিল করতে পারেননি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মনোনয়নপত্রে বর্তমান কমিটির সভাপতি ও এক সময়ের আলোচিত লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহেরের স্বাক্ষর করার কথা থাকলেও তিনি তা করেননি। এতে মান্নার মনোনয়নপত্র দাখিল করা সম্ভব হয়নি। সমিতির শত কোটি টাকার সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করতেই আবু তাহের পরিকল্পিতভাবে স্বাক্ষর দেয়নি বলে অভিযোগ করেন এ আওয়ামী লীগ নেতাসহ ভুক্তভোগীর। রোববার রাতে লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের হলরুমে আয়োজিত সভাপতি প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী রাসেল মাহমুদ মান্না এসব অভিযোগ করেন। একই ঘটনায় তিনি বিকেলে জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী দিপংকর রায় দিপুও একই অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে রাসেল মাহমুদ মান্না জানান, আগামী ৪ এপ্রিয় লক্ষ্মীপুর তন্তুবায় সমবায় সমিতি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সভাপতি পদে তার
প্রতিতদ্বন্দ্বী হিসেবে আবু তাহের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।
নির্বাচনী গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মনোনায়নপত্রে সমিতির সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদকের সত্যায়ন করতে হয়।কিন্তু উদ্দেশ্যমূলক সভাপতি-সম্পাদকের কেউই তার মনোনয়নপত্রে সত্যায়ন করেননি। তারা স্বাক্ষর না করায় উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাও তার (মান্না) মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করতে অসম্মতি জানায়। এতে তিনি রোববার বিকেল ৪টায় শেষ সময়েও মনোনয়ন দাখিল করতে পারেনি। একই কারণে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী দিপংকর রায় দিপুও মনোনয়ন দাখিল করতে পারেননি। সমিতিকে কুক্ষিগত করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই আবু তাহের পরিকল্পিতভাবে মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করেননি বলে অভিযোগ মান্নার।এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নজরুল ইসলাম ভুলু।
সংবাদ সম্মেলনে অন্য প্রার্থীরা অভিযোগ করেন। তারা জানান,তন্তুবায় সমিতির আগের কমিটিগুলোতে প্রান্তিক পর্যায়ের তাঁত শিল্পের কারিগররা সদস্য ছিলেন। কিন্তু বর্তমান কমিটিতে মাসিক চাঁদা ত্রিশ টাকা থেকে ৫০০ টাকা করায় অনেক তাঁতী সদস্যপদ নবায়ন করতে পারেননি। এতে অনেকের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। সমিতির শত কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করতেই আবু তাহের পরিকল্পিতভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিদের মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর দেয়নি। এ সময় আবু তাহেরের বিরুদ্ধে সমিতির বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ ও ফ্ল্যাট বরাদ্দের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ করা হয়।
জানাগেছে, ১৯৪৫ সালে লক্ষ্মীপুর তন্তুবায় সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠা হয়। আগামী ৪ এপ্রিল সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এতে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন জেলা সমবায় কার্যালয়ের পরিদর্শক ওমর ফারক, উপজেলা সমবায় কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক জোতির্ম্ময় মজুমদার ও সমিতির সদস্য কামরুল ইসলাম। ভোটার ৫০৩ জন।