নওগাঁ’র আত্রাই উপজেলায় উপজেলা জেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ছানাউল ইসলাম একটি ব্যক্তিগতভাবে চাষকৃত পুকুর থেকে সম্পূর্ন অবৈধভাবে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা মুল্যের মাছ জোরপূবর্ক কেড়ে নিয়ে আসেন। সেই সাথে মাছ আহোরনের সাথে জড়িত জেলে ও ম্যানেজারসহ ১২ জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে এসে ভ্রাম্যমান আদালতে ১৫ দিনের জেল দিয়েছেন। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনাটি আত্রাই উপজেলার বিশা ইউনিয়নে ১২ মার্চ ভোররাতে ঘটেছে।
এলাকাবাসীসূত্রে জানা গেছে বিশা মৌজায় ৮ একর ৫৯ শতক আয়তনবিশিষ্ট একটি অতি প্রাচীন জলাশয় রয়েছে। এর মধ্যে এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সিভিলসার্জন প্রয়াত ডাঃ রেবতী কান্ত স্যান্যাল-এর অংশ ৪ একর ৮৩ শতক, তার ভাতিজা বীরেন্দ্রকান্ত স্যান্যাল, প্রনবকান্ত স্যান্যাল ও দেবকান্ত স্যান্যালদের ১ একর ৮৮ শতক এবং অন্য শরীকদের ১ একর ৮৮ শতক মালিকানাশর্তে অবস্থিত। পরবর্তীতে ডাঃ রেবতীকান্ত স্যান্যাল ও তার স্ত্রী মৃত্যুবরন করলে এবং তাদের কোন সন্তান না থাকায় সেই সম্পত্তির মালিকানাও চলে আসে ভাতিজা বীরেন্দ্রনাথ গংদের উপর।
এলাকার মোঃ তোফাজ্জল হোসেন তোফা নামের এক ব্যক্তি বীরেন্দ্রনাথ স্যান্যাল, প্রনবকান্ত স্যান্যাল ও দেবকান্ত স্যান্যালের ১ একর ৮৮ শতক ক্রয় করেন। অন্যশরীকদের ১ একর ৮৮ শতক অংশ লীজ গ্রহণ করেন। এ ছাড়াও প্রয়াত ডাঃ রেবতী কান্ত স্যান্যালের ৪ একর ৮৩ শতক অংশ চাচার অংশীদার হিসেবে বীরেন্দ্রনাথ স্যান্যাল গত ১৮-০৩-২০১৯ তারিখে ওই তোফাজ্জল হোসেনের নামে পাওয়ার অব এ্যাটর্নী প্রদান করেছেন। ক্রয়, লীজ এবং পাওয়ার অব এ্যাটর্নীসূত্রে প্ররো ৮ একর ৫৯ শতক এ জলাশয়ে আইনগত মালিক ওই তোফাজ্জল হোসেন।
সেই মালিাকানাসূত্রে তোফাজ্জল হোসেন তোফা ঐ জলাশয়ে মাছ চাষ করে আসছে। কিন্তু হঠাৎ করে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঐ জলাশয়ের উপর কর্ৎৃত্ব ফলানো চেষ্টা চালাতে শুরু করেন। প্রেক্ষিতে বীরেন্দ্রনাথ স্যান্যাল এবং তোফাজ্জল হোসেন তোফা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এই মামলার প্রেক্ষিতে একটি নিদের্েেশ ওই নির্বাহী অফিসারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে হাইকোর্ট ঐ সম্পত্তির তোফাজ্জল হোসেনের পক্ষে উপর স্থিতাবস্থা জারী করেন। এই স্থিতাবস্থার ফলে তোফাজ্জল হোসেনের দখলভুক্ত থাকে এবং মাছ চাষ অব্যাহত থাকে।
এরই একপর্যায়ে গত ১১ মার্চ রাতে তোফাজ্জল হোসেন তোফা ঐ জলাশয় থেকে মাছ আহরণ করেন। ১২ মার্চ সকালে সেসব মাছ বাজারে বিক্রি করার কথা। কিন্তু সকাল হতে না হতেই ভোরবেলা উপজেলা নির্বাহ কর্মকর্তা জনাব মোঃ ছানাউল্লাহ তাঁর লোকজন এবং পুলিশ নিয়ে গিয়ে সবগুলো মাছ জোরপূর্বক নিয়ে এসে বাজারে বিক্রি করেন এবং ঐ প্রকল্পের ম্যানেজার এবং জেলেসহ মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে আটক ১২ জনকে কি মামলায় দেয় হবেক তা নিয়ে সংশয়ে পড়েন তিনি। একবার মাদক মামলায় এক মাসের কারাদণ্ড দিয়ে পরবর্তীতে সেই রায়ের কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলে তাদের সরকারী কাজে বাধা দেয়া অভিযোগ এনে ৬ জনকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন। অন্যা ৬ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়। এদিকে তোফাজ্জল হোসেন তোফা জানিয়েছেন বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে নানাভাবে হুমকী প্রদান করছেন। এমনকি তাকে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকী প্রদান করছেন। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ব্যপারে আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ ছানাউল ইসলাম এর ০১৭৩০৪৬০০৬১ মোবাইল নম্বরে বার বার যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।