বর্তমান সময়ে সর্বাধিক আলোচিত বিষয় “করোনা ভাইরাস”। পত্রÑপত্রিকা, টিভিÑরেডিও, ফেইসবুকÑইউ টিউব ইত্যাদি যে কোন ধরণের মিডিয়ায় এবং রাস্তাÑঘাটে, হাটেÑবাজারে, দোকানেÑআড্ডায়, আলোচনাÑসিম্পেজিয়ামÑসেমিনার, টক শোÑসবখানেই করোনা প্রধান ভূমিকা পালন করছে। করোনা আতংকে এর উৎপত্তিদেশ চীন শুধু নয়, সারা বিশ্ব কাঁপছে। ডিসেম্বর ২০১৯ থেকে প্রথমে চীন এবং ক্রমান্বয়ে বিশে^র প্রায় সব দেশ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ৬ মার্চ ২০২০ পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাক্রান্ত কোন ব্যক্তি সনাক্ত হয়নি। তবে কয়েকজন বাংলাদেশী অন্য দু’একটি দেশে সনাক্ত হয়েছে যেমন সিংগাপুর, আরব আমিরাত, ইতালি এসব দেশে। চীনের উহান থেকে প্রথম ধাপে আগত ৩১২ জনকে আশকোনার হজ্ব ক্যাম্পে ১৪ দিনের জন্য রাখা হয়েছিল পরীক্ষাÑনিরীক্ষার জন্য। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে কেউই আক্রান্ত হয়নি। সেই ধারা এ পর্যন্ত চলছিল যদিও সরকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগ এর প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় তৎপর ছিল প্রথম থেকেই। কিন্তু ৮ই ফেব্রুয়ারী প্রথমে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় (ফেইস বুক, ইউ টিউব এবং টিভি) এবং পরের দিন অর্থাৎ ৯ই ফেব্রুয়ারী পত্রÑপত্রিকায় হেডলাইনে খবর পরিবেশিত হয় যে ইতালি ফেরৎ দুইজন পুরুষ ও একজন মহিলা বাংলাদেশে এসে সনাক্ত হয়েছে যাদের বয়স চল্লিশের নীচে। জনমনে আতংকের ছায়া পড়ে। সরকার ও স্বাস্থ্য বিভাগ নড়েচড়ে বসে। ১৭ই মার্চ ২০২০ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য বঙ্গবন্ধুর জন্ম শত বার্ষিকীর উদ্ধোধনী অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়। এইসংগে অন্যান্য জনসমাগমের উপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়। এমনকি এই উপলক্ষে বিদেশী অতিথিদেরও আগমন বাতিল করা হয়। অবশেষে ১৬ই মার্চ বাংলাদেশও সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ বিশে^র অধিকাংশ দেশের মত করোনার আগ্রাসনে শামিল হল। সর্বশেষ জানা গেল ১৮ই মার্চ ২০২০ বাংলাদেশে একজন মারা গেল যিনি বিদেশ থেকে আগত ব্যক্তির সংস্পর্শে ছিলেন। মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ আমাদের হেফাজত করুণ, এই আপদ থেকে রক্ষা করুণ।
করোনার আগ্রাসন
বর্তমানে সারা বিশে^ দুই লক্ষের বেশী লোক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এবং আজ পর্যন্ত আট হাজারেরও বেশী মানুষ মারা যায়। শুধু চীনেই এই সংখ্য যথাক্রমে দেড় লাখ এবং পাঁচ হাজারের বেশী। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ইতালি। এরপর দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান ও জার্মানী। মৃতের সংখ্যা যাই হোক, করোনা আগ্রাসনে পুরো পৃথিবীর অর্থনীতি কাহিল হয়ে পড়েছে। করোনা ছড়ানোর প্রতিরোধে দেশের অভ্যন্তরে আন্ত: শহর বা আন্ত: জেলা ভ্রমনে অনেক দেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, বিমান চলাচল সীমিত হয়েছে, শিল্পÑকারখানা বন্ধ হয়েছে, আমদানীÑরপ্তানী কমেছে, স্কুলÑকলেজ বন্ধ করা হয়েছে, ব্যবসাÑবানিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সিনেমা হল দর্শকহীন হয়েছে, শেয়ার বাজারে র্ধ্বস নেমেছে, ইলেক্ট্রনিক ও আরো কিছু সামগ্রীর দাম বেড়েছে, ভিসা বন্ধ হয়েছে, পন্য সরবরাহ ইত্যাদি প্রতিটি সেক্টরে আঘাত হেনেছে এই ভাইরাস। সৌদি আরবে ওমরাহ বন্ধ রয়েছে, মসজিদে জামাত নিষিদ্ধ হয়েছে। অবস্থা ভেদে হজে¦র কি হবে তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যায় না। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনের প্রাদেশিক প্রধান, স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান এবং বেশ কিছু ডাক্তার ও নার্স মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়ে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর উপদেষ্টা হোসেইন শেইখুল ইসলাম ও সাংসদ মোহাম্মদ আলী রামাযানী মারা যান। অন্যান্য কয়েকজন শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তাও বিভিন্ন দেশে আক্রান্ত হয়েছেন, এমনকি প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট, সেনা কমান্ডার, মন্ত্রী এবং শেষে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী। প্রতিদিন নতুন নতুন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে, কোথাও শ্লথ, কোথাও দ্রুত হারে। মানুষ এখন দিশেহারা, আতংকগ্রস্ত।
করোণার আগ্রাসী অভিযান থেকে উত্তরণের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান চূড়ান্তভাবে সতর্কতা জারি করেন। তিনি এটিকে চীন ছাড়াও বিশে^র জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন। সর্বশেষ ০১ মার্চ ২০২০ তিনি এটিকে বিশ্ব মহামারী হিসেবে উল্লেখ করেন। বিশে^র ৯০ টি দেশ ইতিমধ্যে সংক্রমিত হয়েছে। আগামীতে হয়তো প্রায় সব দেশই এর কবলে পড়বে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান এই করোনা ভাইরাসটির নমুনা অন্যের সংগে বিনিময় করে প্রতিষেধক ও ্ঔষধ তৈরীর জন্য গবেষণা জোরদার করার উপর গুরুত্ব দেন। বাংলাদেশ এখন থেকে চীন থেকে কোন বাংলাদেশীকে সরকারিভাবে ফেরৎ আনবেনা বলে ঘোষণা দিয়েছে। বিদেশ থেকে বাংলাদেশীদেরকে আপাতত: ভাইরাস ছড়ানোর আশংকায় দেশে ফিরতে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে। তবে কেউ নিজের ইচ্ছায় ও খরচে আসলে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। চীনের উহান থেকে ফেব্রুয়ারী ২০২০ এ প্রথমবারের মত ৩১২ জন বাংলাদেশীকে দেশে ফেরৎ এনে আসকোনায় হজ্ব ক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনে ১৪ দিন রাখা হয়। পরীক্ষাÑনিরিক্ষা শেষে তাদের মধ্যে কেউ সনাক্ত হয়নি। তবুও সন্দেহজনক অনেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কিন্তু বিদেশে কয়েকজন বাংলাদেশী আক্রান্ত হয়েছে। এখনো কয়েকজন বাংলাদেশী বিশেষ করে ছাত্রÑছাত্রী দেশে ফিরতে আগ্রহী, কিন্তু চীন অনুমতি দিচ্ছে না এবং বাংলাদেশও অনাগ্রহী।
করোনা ভাইরাসের বিশ্বব্যপী আগ্রাসনে বিশ্ব স্থবির হয়ে গেছে। ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স সহ কয়েকটি দেশ পূরো দেশটাকেই কোয়ারেন্টাইন অবস্থা ঘোষণা করেছে। ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ রেখেছে যা চীন প্রথমে করেছিল কয়েকটি প্রদেশ ও শহরে। জাতীয় - আন্তর্জাতিক সব অনুষ্ঠান সমাবেশ স্থগিত করেছে। মসজিদণ্ডমন্দির-গীর্জা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফেইসবুক, টুইটার, ইউ টিউবে বিভিন্ন চটুল চিকিৎসা ও তদবীর প্রচারিত হচ্ছে দোয়া-ইবাদতের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে এবং চীন সহ আধুনিক বিশ্ব এতে আকৃষ্ট হচ্ছে। ধর্ম বিদ্বেষী চীন মসজিদমুখী হয়েছে। ভারতে গোবর ও গোমুত্র ব্যপক ব্যবহৃত হচ্ছে। বিভিন্ন ভেষজ চিকিৎসার উপদেশ আসছে। মোট কথা, সারা বিশ্ব এখন আতংকগ্রস্ত ও দিশেহারা। বিশ্বে এখন জরুরী অবস্থা। মূলত: বিশ্ব এখন অচল।
অন্যদিকে করোনা ভাইরাস ছড়ানো নিয়ে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে চীনের ঈর্ষণীয় উত্থানকে থামিয়ে দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ চীনের উহানে এই ভাইরাস ছড়ানোর ব্যবস্থা করেছে গোয়েন্দাগিরির মাধ্যমে, আবার যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে চীনের জীবানু বা জৈব অস্ত্রের গবেষনাগার থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। এইসংগে যোগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরাইল যার মতে বিশ্বকে হুমকিতে রাখার জন্য চীন তার জৈব বা জীবানু অস্ত্রের গবেষণাগার থেকে অসাবধানতাবশতঃ এটি ছড়িয়েছে। তাই গবেষনাগারটি উহানে অবস্থিত। এটি ¯œায়ুযুদ্ধের একটি চাল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সানফ্রান্সিসকো বন্দরে আটকে থাকা ‘গ্র্যান্ড প্রিন্সেস’ নামে একটি প্রমোদ তরীর ৪৬ জন আরোহীর মধ্যে ২১ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে। ফলে এর ২৫০০ যাত্রীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উল্লেখ্য, আক্রান্তের ১৯ জনই জাহাজের ক্রু। তাদের ব্যপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স জানান (৭ই মার্চ)। কিছুদিন আগে একই কারণে জাপানের ইওকোহামা বন্দরে আটকা পড়েছিল বৃটিশ প্রমোদতরী ‘ডায়মন্ড প্রিন্সেস’। আটকা পড়েছিল অন্তত: ৩৭০০ আরোহী দুই সপ্তাহের জন্য। জাহাজটির সাত শতাধিক যাত্রী আক্রান্ত হয়েছিল এবং মারা যায় ৬ জন।
করোণা ভাইরাস কি এবং এর ইতিবৃত্ত
এটি শ্বাস, ফ্লু ও নিউমোনিয়া সদৃস উপসর্গ দিয়ে শুরু একটি ভাইরাস জনিত প্রাণঘাতি রোগ। সাধারনত: ফ্লু দিয়ে শুরু এবং শ্বাসকষ্ট ও শেষে নিউমোনিয়ার পর্যায় গিয়ে এই ভাইরাস ঘাতকরূপ ধারণ করে। ফলে এপর্যন্ত চীনে ও অন্যান্য দেশে প্রায় দশ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের হুয়ানান নামের একটি কেন্দ্রীয় বা পাইকারী সামুদ্রিক মাছ ও বন্য প্রাণীর বাজার থেকে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হয়েছে যে শহরের লোকসংখ্যা ১১ মিলিয়ন বা এক কোটি দশ লাখ। এইজন্য এই ভাইরাস প্রথমে “উহান ভাইরাস” নামে এবং চীনে সনাক্ত হয়েছে বলে “চীনা ভাইরাস” নামেও পরিচিতি লাভ করে। বিশেষজ্ঞরা প্রথমে করোনা ভাইরাসকে “২০১৯ Ñএনসিও ভি করোনা” (N COV Corona) নামকরণ করেন। ২০১৯ সালে এটি সনাক্ত হওয়ায় এটাকে ২০১৯ দিয়ে শুরু করা হয়। একে বলা হয় নভেল করোনা অর্থাৎ নূতন করোনা যেহেতু এর আগে আরো ছয় প্রকার করোণা ভাইরাস সনাক্ত করা হয়েছিল। নভেলের “হ” করোনা ‘ঈঙ’ এবং ভাইরাসের ‘ঠ’ দিয়ে লেখা হয় হঈঙঠ ঈড়ৎড়হধ। চীনে প্রথমে ১৯৬০ সালে এবং পরে ২০০০ সালে করোনা ভাইরাস সনাক্ত করা হয়। কমবেশী ২০০০ ধরণের ভাইরাসের মধ্যে সাত প্রকার করোনা ভাইরাস রয়েছে যার সবগুলিই প্রাণঘাতি নয়। ২০০২-০৩ সালে চীনে “সার্স” বা গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রের লক্ষণ বা সিন্ড্রোম (SARS- Severe Acute Perperafons Symptom) দেখা দেয় এবং তখন চীনে ৬৫০ জন এবং সারা বিশে^ ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয় এবং সেটি ছড়িয়েছিল ২৪/২৫টি দেশে। তখন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল আট হাজারেরও বেশী। সার্স ক্ষুদ্রাকৃতির বন্য চিত্রা বিড়াল থেকে ভাইরাস ছড়িয়েছিল বলে সন্দেহ করা হয়েছিল। সেই ঘটনার পর চীন স্থায়ী ব্যবস্থা না নেয়ায় এটি এখন বিধংশী আকার ধারণ করে বলে ধারণা করা হয়।
“মার্স” বা মধ্যপ্রাচ্যের শ্বাস যন্ত্রের লক্ষণ বা সিন্ড্রোম (গঊজঝ –গরফফষব ঊধংঃ জবংঢ়রৎধঃড়ৎু ঝুহফৎড়সব) নামে পরিচিত ভাইরাসের আক্রমণে সৌদি আরবসহ বেশ কয়েকটি দেশে, মারাত্বকভাবে সংক্রমনে বহু লোক মারা যায়। এর মধ্যে একজন বাংলাদেশী ডাক্তারও ছিলেন। মার্স ভাইরাস উট থেকে ছড়িয়েছিল। মুকুটের মত দেখতে বলে এই ভাইরাসকে করোনা বলা হয়। কেননা, ইংরেজী করোণার মূল ল্যাটিন শব্দের অর্থ মুকুট। এছাড়া, সূর্য রশ্মির আলোকচ্ছটার মতও দেখা যায়। সূর্য বা চন্দ্রের চারিদিকে যেমন রশ্মি ছড়িয়ে একটি প্রপঞ্চমূলক প্রতিছবি সৃস্টি করে। ঠিক এই প্রজাতির অধিকাংশ ভাইরাস সেই রকম দেখতে বলে এর নামকরন করা হয়েছে ‘করোনা ভাইরাস’। বিশেষজ্ঞদের মতে করোনার মূল উৎস হচ্ছে চীনা ক্রেইট বা বাদুর এবং কোবরা সাপ। এই ভাইরাস বাতাসে মিশে প্রাথমিকভাবে স্থন্যপায়ী প্রাণী ও পাখীর শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমন করে। এর ফলে প্রাথমিকভাবে জ্বর, শর্দি ও শ্বাসকষ্ট উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়।
কভিডÑ১৯: উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনা ভাইরাস যাকে এতদিন “২০১৯ Ñএনসিও ভি করোনা” বলে জেনেছি বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা তার নুতন নামকরণ করেছে “কভিড Ñ১৯”। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডঐঙ) মহা পরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েমাস গত ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২০ তারিখে জেনেভার এক সাংবাদিক সম্মেলনে এর নূতন নামকরণ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন যে এটি “করোনা ভাইরাস ডিজিজ ২০১৯” -এর সংক্ষিপ্ত রূপ। বর্তমান নামকরণটি করা হয়েছে তিনটি শব্দ থেকে Ñ ‘করোনা’ ‘ভাইরাস’ ও ‘রোগ’। নূতন নাম করণে করোনা (ঈড়ৎড়হধ) থেকে পড়, ভাইরাস (ঠরৎঁং) থেকে ‘ার’ এবং ডিজিজ (উরংবধংব) থেকে ‘ফ’সমন্বয়ে নাম দেয়া হয়েছে ঈড়ারফ -১৯। ২০১৯ সালে সনাক্ত করা হয়েছিল বলে ১৯ যুক্ত করা হয়েছে। ভাইরাসের নাম প্রদানকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা “ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব টেক্সনামি অব ভাইরাসেস” এই ভাইরাসটিকে সার্স-সিওভি -২ হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে। এই ভাইরাসকে ‘চীনা করোনা’ বা ‘উহান করোনা নামে’ প্রথম দিকে প্রচারিত হওয়ায় চীনের প্রতি ইংগিত করা হয়। কোন বিশেষ গ্রুপ অথবা দেশকে কেন্দ্র করে যেন ভীতি না ছড়ায় সেজন্য ভাইরাসটির আনুষ্ঠানিক একটি নাম দেয়ার জন্য আহবান জানিয়েছিলেন গবেষকগণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন যে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠির দিকে ইংগিত না করে সহজ উচ্চারণযোগ্য এবং ভাইরাসটির সংগে সম্পর্কযুক্ত একটি নাম দেয়া হয়েছে। ২০০২Ñ০৩ সালের সার্স ভাইরাসের সংগে এটির সামঞ্জস্য থাকায় ২০১৯ Ñএনসিওভি Ñকে আন্তর্জাতিক ভাইরাস টেক্সেনোমি কমিটি (ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঈড়সসরঃঃবব ড়হ ঞধী ধহড়সু ড়ভ ঠরৎঁং –ওঈঞঅ) নথিভূক্ত করে সার্সÑসিওভি Ñ২ নামে। এখন থেকে এটি কভিড Ñ১৯ নামে পরিচিত হবে। আরেকটি বিষয়ও বিবেচনায় আসে যে করোণা ভাইরাস আসলে কোন রোগের নাম নয়, এটি এই ভাইরাস গ্রুপের নাম।
করোনা ভাইরাসের লক্ষণঃ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও চীনের যৌথ মিশন কোভিডের কিছু লক্ষণ ও উপসর্গ চিহ্নিত করেছে। জ্বর ও শুস্ক কাশিÑসর্দি দিয়ে শুরু, শ্বাসকষ্ট, গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা, পেটে ব্যথা, কাপুনি, অবসন্নতা এবং শেষে জ্বর থেকে নিউমোনিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে যার পরিনতি মৃত্যু। করোনা ভাইরাস শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে মানুষের ফুসফুসে আক্রমন করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিশ্চিত হয়েছে যে এটি ছোঁয়াচে। এর দ্বারা মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী উভয়ই আক্রান্ত হয়। এই ভাইরাসের অবস্থান প্রাকৃতিক পরিবেশে, সুযোগমত মানুষের শ্বাসযন্ত্রে আক্রমন করে। সংক্রমিত ব্যক্তির হাঁচি- কাশি, এবং সাথে মুখের স্পর্শ, পোশাক ও ব্যবহৃত জিনিষের সংস্পর্শে আসলে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
বাংলাদেশের প্রস্তুতি ও কার্যক্রম
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি দিয়েছে ও ব্যপক ব্যবস্থা নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ২০ জানুয়ারী ২০২০ থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চীন থেকে আগত যাত্রীদের বিশেষভাবে স্কিৃনিং(ংপৎববহরহম) করা শুরু করেছে। বিমানবন্দরে যাত্রীদের উপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ক্রমান্বয়ে অন্যান্য বিমানবন্দরেও এই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সরকারের ‘রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান’ আইইডিসিআর (ওঊউঈজ) কর্তৃক বিভিন্ন এয়ারলাইন্সকে এ ব্যপারে সতর্ক করে চিঠি দেয়া হয়েছে। সরকার বিমানবন্দরে কর্মরত কর্মীদের করোনা ভাইরাস বিষয়ে ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার উপর প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করছে এবং হাসপাতালসমূহে অনুরূপ নির্দেশনা ও ব্যবস্থা নিচ্ছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন এয়ারলাইন্স ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকও করেছে। তিনটি থার্মাল স্ক্যানারের মাধ্যমে বিমানবন্দরে আগত যাত্রীদের এই রোগে সম্ভাব্য আক্রান্তদের উত্তাপ মাপার মাধ্যমে প্রাথমিক ভাবে কেউ আক্রান্ত কিনা তা সনাক্ত করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সতর্কতা নেয়া হয়েছে বেনাপোল স্থলবন্দরেও। আইইডিসিআর সতর্কতা কার্যক্রমের উপর নিয়মিত প্রেস ব্রিফিং দিচ্ছে এবং সরকার মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। বাংলাদেশ শুরু থেকেই করোনা প্রতিরোধে সচেষ্ট। কিন্তু প্রস্তুতিটা যথেষ্টে নয় বলে অনুমিত হচ্ছে। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের অভাব, ডাক্তার নার্সদের রক্ষামূলক কীটস বা পোষাকের ঘাটতি, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও প্রশিক্ষনের সীমাবদ্ধতা সব মিলিয়ে প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনা আশাব্যঞ্জক নয়। করোনা নিয়ে রাজনীতির প্রশ্নও উঠেছে। তথ্য গোপনের বিষয়ও এসেছে।
বাংলাদেশের সরকারী কর্মকর্তারা দাবী করেছেন যে করোনা ভাইরাস নিয়ে বিশ্বব্যপী হৈ চৈ এবং আতংকের মুখে দেশের সরকারী হাসপাতালগুলোতে ১০ হাজার বেডের ব্যবস্থা করাসহ প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এব্যপারে রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রন ও গবেষনা ইনষ্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানাচ্ছে যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন এবং চীনের চিকিৎসা পদ্ধতির সাথে সামাঞ্জ্যস্য রেখে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার নীতিমালা তৈরী হচ্ছে। এখনো বাংলাদেশের কেউ কেউ আক্রান্ত না হলেও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। উপ জেলা পর্যায় পর্যন্ত এই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে আইইডিসিআর এর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছেন। এছাড়া, সারাদেশে সব হাসপাতালে ৫টি করে বেড নিয়ে আইসোলেশন ইউনিট করে রাখা হচ্ছে। এর অতিরিক্ত আরো কিছু হাসপাতালকে করোনা ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য ডেজিগনেট করা হয়েছে যেমন, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মহাখালী বক্ষ্যব্যধি হাসপাতাল, সারাদেশের বেসরকারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে। জাতীয় জেলা ও উপজেলা প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কোভিড-১৯ এ সংক্রমিত হলে চিকিৎসায়রত ডাক্তার ও নার্সসহ সংশ্লিষ্ট কেউ যেন আক্রান্ত না হন সেজন্য তাদের প্রত্যেকের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম বা চবৎংড়হধষ ঢ়ৎড়ঃবপঃরাব বয়ঁরঢ়সবহঃ (চচঊ) ব্যবহার অত্যাবশ্যক হবে। বর্তমানে যে পরিমান পিপিই মজুদ আছে তা অপ্রতুল। তাই দেশীয় একটি কোম্পানীর মাধ্যমে উন্নতমানের পিপিই উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে সরকার। ইতোমধ্যে পিপিআইয়ের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিকট আবেদন করা হচ্ছে। কিন্তু দ্রুত ও ক্রমাগত ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে তা দ্রুত পাওয়া অনিশ্চিত। তাই এই চিন্তা করা হচ্ছে। নিজ দেশে বিশ্বস্বাস্থ সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী তৈরী করার জন্য বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার অসুমোদন নেয়া হচ্ছে।
প্রতিরোধ ও চিকিৎসা: বিশ্বস্বাস্থ্য ও বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট মানুষকে সচেতন করার জন্য কিছু নির্দেশনা জারি করেছে যা প্রতিরোধ হিসেবে সহায়তা করবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রথমিক বিষয় হল হাত-মুখ পরিষ্কার রাখা। তাই বাইর থেকে এসে, টয়লেট থেকে এসে, হাঁচি কাশি দিলে, কোন কাজ করে আসলে, অন্যকে স্পর্শ বা সবার ব্যবহৃত জিনিস ধরলে যেমন একই দরজা-গেইট ধরলে, এমনকি পূরনো বা ব্যবহৃত টাকা আদান-প্রদান করলেও হাত ধোয়া দরকার। যেহেতু মুখমন্ডল, নাক-চোখ-মুখ খুব সংবেদনশীল যার মাধ্যমে ভাইরাস প্রবেশ করে সেই মুখমন্ডলে হাত ছোয়ানোর পরও হাত ধোয়া দরকার। দ্বিতীয়ত: শর্দি কাশি- জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দুরত্বে অবস্থান করা, নিজে হাঁচি- কাশির আদবকেতা মানা যা অন্যকে ছোঁয়া দিতে পারে রোগী পরিচর্যার পর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া, ভীড় বা জনসমাবেশ যথাসম্ভব বর্জন করা, বাসে কম চলাফেরা, ইত্যদি বিষয় মেনে চলা প্রতিরোধে সাহায্য করবে। ঘরের বাইরে যত কম যাওয়া যায়, খাবার তৈরীতে এবং খাওয়ায় সতর্ক থাকা, লেবু, কলা এবং ফলের রস, ভিটামিন সি বেশী গ্রহণ করা সহায়ক । ভ্রমনের ক্ষেত্রে বা বাইরে চলাফেরা করার সময় মাস্ক ব্যবহার করা এবং ভীড়ের থেকে দূরে থাকার ব্যপারে নির্দেশনা রয়েছে। এই কারনেই পৃথিবীর অনেক দেশে বিভিন্ন শহর বা এলাকা ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এমনকি ঐসব শহর থেকে বাহিরে যাওয়াও নিষিদ্ধ। এছাড়া, স্কুল কলেজ বন্ধ করা হয়েছে, জনসমাবেশ ও অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। জ্বর, শর্দি - কাশি হলে স্বাস্থ্য কর্মী ও ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। এছাড়া, করোনা ভাইরাস বিষয়ে নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ করে সে অনুযায়ী চলা অপরিহায্য। প্রতিদিনই পত্র-পত্রিকা, সভা সমাবেশ, সংবাদ ব্রিফিং- এর মাধ্যমে এই তথ্যগুলো জানা যায়।
উপসংহার
কেভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাস যে নামেই সম্বোধন করি না কেন এটি একটি ভয়াল ও প্রাণঘাতি রোগ যা একটি বিশ্ব মহামারী এবং যা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। ইতোপূর্বে ১৭২০ সালের প্লেগ, ১৮২০ সালের কলেরা, ১৯২০ সালের স্পেনীয় ফøু বা উদরাময় মহামারী হিসেবে ছড়িয়েছিল। প্রতিটি মহামারীতে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যায় কিন্তু তা বিশ্বব্যপী ছিল না, সেগুলো ছিল কোন দেশ বা মহাদেশে। ইতোমধ্যে আমরা এইচআইভি, এভিয়ান ফ্লু সোয়াইন ফ্লু, জিকো, ডেংগু, চিকনগুনিয়া, ইবোলা, নিপা ভাইরাসের প্রদুর্ভাব দেখেছি, কলেরা-বসন্তের মহামারী দেখেছি। সেসব একেবারেই অতীত হয়নি, কোন কোনটি চলমান রয়েছে। সেসবের চিকিৎসা হয়েছে। কিন্তু কোভড ১৯-এর সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা বা টিকা আবিষ্কৃত হয়নি, এর বিনাশী আগ্রসন আর কতবছর যাবে তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। এসবই আমাদের চোখে আংগুল দিয়ে দেখাচ্ছে মানবজাতি যেন সাবধান হয়। আমরা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এসব কিছুকে ছাপিয়ে প্রাকৃতিকভাবে যে আমরা আগ্র সনের শিকার হতে পারি তা ভেবে দেখছিনা। ধামি কেরা একে বালা মুছিবত বা গজব বলে আখ্যায়িত করেন। মানুষ যখন প্রকৃতিকে ধ্বংশ করে, প্রাকৃতিক ব্যবস্থাপনাকে উপেক্ষা করে, বিধি- বিধানমত না চলে অনিয়ম, অশোভন, অন্যায় করে, জলবায়ু দুষণে লিপ্ত থাকে তখন প্রকৃতি এভাবেই প্রতিশোধ নেয়। এই প্রকৃতির যিনি নিয়ন্তা, সর্বশক্তিমান তাঁর নির্দেশনা মত চলা যে প্রয়োজন সেটি আমরা বুঝতে চাইনা। আমাদের নিজেদের যেমন সতর্কতামুলক ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে হবে। তেমনি পরিত্রাণের জন্য সর্বশক্তিমানের সাহায্যও কামনা করতে হবে।
১৮ মার্চ বাংলাদেশে একজনের মৃত্যুর সংবাদ আমাদের ইংগিত দিচ্ছে যে এদেশেও করোনায় আগ্রাসন শুরু হতে দেরী নেই। আমাদের আর ভাবার সময়ের জন্য অপেক্ষা করা সময় ক্ষেপন হবে। এখনই ক্রাশ প্রোগ্রাম প্রস্তুত করা এবং জরুরী অবস্থা ঘোষণা করার সময় এসেছে। গন চলাচল, মিটিং-মিছিল, বাজার নিয়ন্ত্রণ, অপরিচ্ছন্নতার বিরুদ্ধে অভিযান, বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন, প্রতিষ্ঠান, অফিস, বাড়ীঘরে, হাটে-বাজারে হোটেলে স্যানিটাইজার ব্যবহার ও তাপমাত্রা মাপা, ব্যপকভাবে মাস্ক ব্যবহার, নির্মাণ কাজ স্থগিত করা, পশু-পাখির বাজার, ফার্মে স্বাস্থ্য বিধি আরোপ করা- এসব কিছু এখন আইন-শৃংখলা বাহিনীর মাধ্যমে হলেও কার্যকর করা প্রয়োজন। চীন ও দক্ষিন কোরিয়া কি ভাবে সামলিয়েছে সে শিক্ষা গ্রহন করে আমদের পদক্ষেপ নির্ধারণ করা অপরিহায্য। বিশ্বের বাঘা বাঘা শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর বেহাল অবস্থা, সেখানে আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশের জনবহুল দেশগুলো কিভাবে সামলাবে তা আমাদের চিন্তিত করে। আমরা হয়তো কঠিন ও দু:সময়ের মুখোমুখি হতে পারি। মহান সর্বশক্তিমান আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন। আমীন।
অধ্যক্ষ ও কলাম লেখক