সর্দি, কাশি ও জ্বর নিয়ে বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বন্দকাটি ফতেপুর গ্রামে ৩৩ বছর বয়সী এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। পাশবর্তী দক্ষিন শ্রীপুর গ্রামে স্বামীর বাড়ি হতে চারদিন আগে জ্বর জনিত অসুস্থতা নিয়ে তিনি পিত্রালয়ে আসেন। বুধবার ভোরে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা এলাকায় আতংক দেখা দেয়। মারা যাওয়া ঐ গৃহবধুর আড়াই ও চার বছর বয়সী দুটি সন্তান রয়েছে।
বিড়ম্বনার শংকায় বাড়িতে রেখে তার চিকিৎসা চলছিল বলে জানায় তার পরিবার। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান কর্মকর্তা জানিয়েছেন মারা যাওয়া নারীর মধ্যে করোনার লক্ষন ছিল না।
মৃতের স্বজনদের সুত্রে জানা গেছে মারা যাওয়া নারীর স্বামী ঢাকাস্থ একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। সম্প্রতি তিনি স্বামীর কর্মস্থলে বেড়াতে যাওযার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ২৭ মার্চ বাড়িতে ফেরেন। এক পর্যায়ে জ্বর বৃদ্ধির পাশাপাশি সর্দিজনিত সমস্যা দেখা দিলে গত ২৮ মার্চ গ্রাম্য চিকিৎসক রুহুল আমিনের শরনাপন্ন হয়। এসময় তাকে প্যারাসিটামলসহ এন্টিবায়োটিক এবং একটি কাশির সিরাপ দেয়ার পর তিনি দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।
মারা যাওয়া নারীর পিতা মাওলানা আব্দুস সালাম জানান, শনিবার থেকে তার মেয়ের জ্বর বেড়ে যায়। এসময় সর্দি ও কাশি দেখা দিলে নিজের ছাত্র রুহুল আমিনকে ডেকে চিকিৎসা পত্র নেন। সরকারি হাসপাতালে না নেয়া প্রসংগে তিনি জানান, চারিদিকে করোনা রোগী নিয়ে নানা বিড়ম্বনার কথা কানে আসায় ভয়ে সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করেনি। তবে শ্বাষকষ্টসহ করোনার অন্যকোন উপস্বর্গ ছিল না বলে তিনি দাবি করেন।
বিষ্ণুপুর ইউপি সদস্য লাইলি বেগম জানান, সকালে ঐ গৃহবধুর মারা যাওয়ার খবরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌছে নমুনা সংগ্রহ করেন। কিন্তু করোনার কোন লক্ষন দেখা না যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে দাফনের নির্দেশনা দেন। এসময় পারিবারিকভাবে কয়েজনের অংশগ্রহনে জানাযা শেষে মরহুমাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শৈখ তৈয়েবুর রহমান জানান, সাধারন জ্বর এর কারনে ঐ নারীর মৃত্যু হয়েছে। তারপরও এলাকাবাসীর শংকা দুর করতে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে পরীক্ষাগারে পাঠানোর জন্য।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোজাম্মেল হোসেন রাসেল জানান স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যেয়ে তার পরিবারের সাথে কথা বলে করোনা সংত্রমণের কোন লক্ষন মেলেনি। পরে স্থানীয়দের তদারকিতে তাকে দাফনের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। একইসাথে আতংকিত না হয়ে সকলকে সরকারের সামাজিক জনসমাগম সংক্রান্ত নিদের্শনা মেনে চলতে অনুরোধ করা হয়েছে।