ননদের স্বামীর লালসার শিকার হয়ে এবং ননদ ও শাশুড়ির নির্যাতনে জীবন গেল এক গৃহবধূর। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের রায়কোট উত্তর ইউনিয়নের ছগরীপাড়া গ্রামে। গতকাল বুধবার ময়নাতদন্ত শেষে জেসমিন আক্তার (২৪) নামক ওই গৃহবধূর লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে উপজেলার ছগরিপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল মালেকের ছেলে বাহরাইন প্রবাসী বাবলুর সাথে ঘাসিয়াল গ্রামের মানিক মিয়ার মেয়ে জেসমিনের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের জিহাদ (৬) ও মরিয়ম (৪ নামে দুই সন্তান রয়েছে। বছরখানেক পূর্বে বাহরাইন প্রবাসী স্বামী বাবলুকে জেসমিন তার মোবাইল থেকে স্বামী-স্ত্রীর কিছু অন্তরঙ্গ ছবি পাঠায়। পরবর্তীতে ননদ তাসলিমার স্বামী জেলার লাকসাম উপজেলার চন্দনা গ্রামের টাইলস মেস্ত্রী ওয়াসিম কৌশলে জেসমিনের মোবাইল থেকে ছবিগুলো চুুরি করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে ছবিগুলো দিয়ে ওয়াসিম জেসমিন ও তার স্বামী বাবলুকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে তাদের পরিবারের কলহ চলে আসছিল। এ ঘটনা জানাজানি হলে শাশুড়ি আলেয়া বেগম, ননদ তাছলিমা ও তার স্বামী ওয়াসিমসহ পরিবারের লোকজন মিলে গৃহবধূ জেসমিনকে ইতোপূর্বে দফায় দফায় মারধর করে। এরই মধ্যে চলমান সমস্যা মীমাংশা করতে স্বামী বাবলু দেশে আসেন। দেড়মাস দেশে অবস্থানের পর অমীমাংশিত অবস্থায় তিনি গত ৭ মার্চ পুনরায় কর্মস্থল বাহরাইন ফিরে যান। মঙ্গলবার স্থানীয়দের দেয়া
তথ্যের ভিত্তিতে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে গৃহবধূ জেসমিনের ঘরের সিলিংয়ের সাথে ঝুলে থাকা লাশ উদ্ধার করেন। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। জেসমিনের বাবা মানিক মিয়া ও ভাই জসিম উদ্দিন এটাকে পরিকল্পিত হত্যা বলে দাবী করে তারা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিচার দাবী করেন।
নাঙ্গলকোট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে আসলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।