ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে চাঞ্চল্যকর দরিদ্র পরিবারের কন্যা তাকমীনাকে (১৯) বাড়ি থেকে ডেকে এনে গণধর্ষণ শেষে হত্যা করে লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখা মামলায় তৃতীয় আসামি মাদ্রাসা শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলামকে (১৯) গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪। গত শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১৪ ময়মনসিংহের বিশেষ টিম পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা থেকে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। ফলে এই মামলার প্রধান আসামি মসজিদের মুয়াজ্জিন আশিকুলসহ সবাই ধরা পড়লো। এর আগে একই ঘটনার অপর সহযোগী আসামি মাদরাসা শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান (১৮) গ্রেফতার করা হয়। পরে মাহফুজ ময়মনসিংহ ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এরপর গত ২৯ মার্চ পৌর শহরের মহিলা কলেজ রোডস্থ অধ্যক্ষ আক্তার হোসেন কিন্ডার গার্টেনের পিছনের একটি বাসায় থেকে মামলায় প্রধান আসামি মুয়াজ্জিন আশিকুলকে (১৯) গ্রেফতার করে পুলিশ।
জানা যায়, উপজেলার পুখুরিয়া দারুল আরাবিয়া কাছিমুল উলুম মাদরাসায় পড়ার সুবাদে স্থানীয় ধোপাঘাট গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে মাহফুজুর রহমান এর নান্দাইল উপজেলার উত্তর তারাপাশা গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে আরিফ ও আয়নাল হকের ছেলে আশিকুলের বন্ধুত্ব হয়। তিন বন্ধুর মধ্যে আশিকুল যশরা ইউনিয়নের পাড়া ভরট জামে মসজিদে মুয়াজ্জিনের চাকরি করে। প্রায় এক বছর আগে পার্শ¦বর্তী আঠারোদানা গ্রামের দরিদ্র আবদুল মতিনের এসএসসি পাশ মেয়ে তাকমিনার সাথে আশিকুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে আশিক বহুবার মেয়েটির সাথে শারিরীকভাবে মিলিত হয়। গত ২৩ মার্চ রাত সোয়া ২টার দিকে বন্ধু মাহফুজুর রহমান ও আরিফ যোগসাজসে মোবাইলে মেসেজ দিয়ে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে ডেকে পারাভরট জামে মসজিদের পাশের নিয়ে আসে। পরে আশিকুল এবং তার বন্ধু মাহফুজুর রহমান ও আরিফ মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। পরে তিন জন মিলে মেয়েটিকে মাটিতে ফেলে বুকে চেপে বসে ও মুখ চাপা দিয়ে হত্যার পর লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখে। ঘটনার পর ফজরের সময় আশিকুল ওজু-গোসল ছাড়াই আযান দেয় এবং নামাজের ইমামতি করে। ভোরের দিকে লাশ ঝুলে থাকার খবর ছড়িয়ে পরলে লোকজন আসতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় পরে নিহতের বাবা ২৪ মার্চ গফরগাঁও থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গফরগাঁও থানার ওসি অনুকূল সরকার বলেন, ঘটনার ১১ দিনের মাথায় প্রধান আসামি আশিকুলসহ তিনজনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।