প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মাঠে নেমেছে রাজশাহীর তানোর থানা পুলিশ। মানুষ যখন বিপদে ও ক্রান্তি লগ্নে পরিবার-পরিজন থেকে বিছিন্ন। ঠিক সেই মূহুর্তে মানুষের পার্শ্বে থেকে আপনজনের আপনজন হয়ে সেবা আর সাহায্য দিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। বর্তমান পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুকি নিয়ে চলতি বছরের ১৫ মার্চ থেকে মানুষের সেবায় দিনে ও রাতে পরিশ্রম করে চলেছে এ বাহিনী।
তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুকি মোকাবেলায় থানা পুলিশের তৎপরতা বেড়েছে। এরইমধ্যে সারাদেশের ন্যায় তানোর উপজেলার সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানই তাদের কার্যক্রম সীমিত করে রেখেছে। আবার কোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বন্ধও করা হয়েছে। কিন্তু থানা পুলিশ ২৪ ঘন্টা জরুরি সেবা প্রদান করছে। এছাড়াও করোনা মোকাবেলায় তাদের নতুন করে যুক্ত হয়েছে বাড়তি দায়িত্বও।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় বিদেশফেরত যাত্রীদের হাতে অমোচনীয় কালি দিয়ে কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য সিল দেয়ার দায়িত্বটি পালন করছেন পুলিশ সদস্যরাই। পাশাপাশি এসব ব্যক্তির গতিবিধি নজরদারিতে রাখতে হচ্ছে। এ অবস্থায় তানোরে লগডাউন ঘোষনা না হলেও অনেক ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে গিয়ে লাঞ্ছনা ও বঞ্ছনার শিকারও হতে হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের।
তথ্যমতে, এ উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। এতোসব মানুষের সেবা প্রদান ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তানোর থানায় ও মুন্ডুমালা পুলিশ ফাঁড়িতে মাত্র ৭০ জন পুলিশ রয়েছেন। জনসংখ্যার তুলনায় এত স্বল্প সংখ্যক পুলিশ অপরাধ নিয়ন্ত্রণের পাশাপশি করোনা মোকবেলায় জনসচেতনা ও মানবসেবাই সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থেকে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।
সম্প্রতি প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মানব সেবায় পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় থানা পুলিশ তাদের বেতনের কিছু অর্থ হতে সমাজের হতদরিদ্র প্রতিবন্ধী, অসহায় দুস্থ ও নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী এবং হাত ধৌত করার সাবান সহ মাস্ক ও গ্লোবস বিতরণ অব্যহত রেখেছেন। থানায় আশা দর্শনার্থীদের ছাড়াও বিভিন্ন গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দূরত্ব বজায় রেখে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসচেতনতায় চালানো হচ্ছে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা ও মাইকিং।
এব্যাপারে তানোর কৃষি ও প্রযুক্তি ইন্সটিটিউট কলেজের জুনিয়র ইন্সপেক্টটর আরিফুজ্জামান মোল্লা বাচ্চু বলেছেন, করোনা যুদ্ধ মোকাবেলায় থানা পুলিশের ভূমিকা প্রশংসনীয়। মানবসেবায় দিনে রাতে ২৪ ঘন্টা জরুরি সেবা প্রদান করছে পুলিশ। আমরা বিভিন্ন ভাবে তা উপলব্ধি করছি। আশাকরি, আগামী দিনে পুলিশ আরও আন্তরিক হয়ে এধরণের সেবায় নিয়োজিত থাকবেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে উপজেলার প্রতিটি স্কুল কলেজের শিক্ষক ও সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যদি পুলিশের ন্যায় মানুষের পাশে দাঁড়ান তবে, করোনা মোকাবেলায় নতুন ইতিহাস গড়বে তানোর বলে জানান বাচ্চু মোল্লা।
তানোর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেছেন, পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ মহোদয়ের নির্দেশনায় সম্প্রতি মহান আল্লাহপাককে স্বরণ করে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মাঠে নেমেছে রাজশাহীর তানোর থানা পুলিশ। মানুষ যখন বিপদে ও ক্রান্তি লগ্নে পরিবার-পরিজন থেকে বিছিন্ন। ঠিক সেই মূহুর্তে মানুষের পার্শ্বে থেকে আপনজনের আপনজন হয়ে সেবা আর সাহায্য প্রদানে আন্তরিক তানোর থানা পুলিশ। বর্তমান পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুকি নিয়ে চলতি বছরের ১৫ মার্চ থেকে মানুষের সেবায় দিন-রাত পরিশ্রম করে চলেছেন এ বাহিনী। আগামীতেও এ ধারা অব্যহত থাকবে বলে জানান ওসি রাকিবুল হাসান।