করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতার মাঝে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের পরিকোট গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আমির হোসেন মোল্লাার বিরুদ্ধে ষ্ট্যাম্পে বায়না দলিলের মাধ্যমে বিক্রয়কৃত জমি কবলা না দিয়ে নির্মাণকৃত বাড়ি থেকে জন্নাতুল ফেরদাউস নামে এক মহিলাকে তার বৃদ্ধা মাসহ ও ছেলেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করার অভিযোগ উঠে। এ ছাড়া আমির হোসেন মোল্লার বিরুদ্ধে তার এক বোন ও এক ভাইকে ষড়যন্ত্রমুলকভাবে তার বাড়িতে প্রবেশ করানোরও অভিযোগ উঠেছে।
গত ৭ এপ্রিল মঙ্গলবার এ উচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। বাড়ি থেকে উচ্ছেদের কারণে গত ৪দিন জান্নাতুল ফেরদাউস তার বৃদ্ধা মা কয়ের বানু এবং একমাত্র ছেলে আবদুল রহিমকে নিয়ে বাঙ্গড্ডা বটতলা প্রাইভেট হসপিটাল হলি ফ্লাওয়ারের বারান্দায় খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। জান্নাতুল ফেরদাউস সমাজপতিদের দ্বারে-দ্বারে ঘুরেও বাড়িতে উঠতে পারছেন না। এনিয়ে ফেরদাউস থানা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করলে তারা করোনা পরিস্থিতিতে অভিযোগ নিতে পারবেন না বলে তাকে জানান।
স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পরিকোট গ্রামের লেদু মিয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফোরদাউস ফেরী করে ব্যাগ বিক্রি করে একই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আমির হোসেন মোল্লার নিকট থেকে ৭ শতক পুকুর স্ট্যাম্পে বায়না দলিলের মাধ্যমে ক্রয় করেন। পরে সে জমি ভরাট করে বাড়ী নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলেন। আমির হোসেন মোল্লা গত বছর হজ্ব থেকে এসে জমির কবলা দেয়ার কথা বলেন। পরে হজ্ব থেকে এসে জমির কবলা না দিয়ে টালবাহানা করে আসছে। গত ৭ এপ্রিল মঙ্গলবার করোনা ভাইরাসের সতর্কতার মাঝে আমির হোসেন মোল্লা তাকে বাড়ী থেকে বের করে তার বোন পারভীন ও ভাই তনু মিয়াকে বাড়িতে প্রবেশ করিয়ে দেয়। এ সময় আমির হোসেন মোল্লার সহযোগিতায় ফেরদাউসকে তার ভাই তনু মিয়া মারধর করেন।
এ ব্যাপারে জান্নাতুল ফেরদাউস বলেন, আমাকে হজ্ব থেকে এসে সাবেক ইউপি সদস্য আমির হোসেন মোল্লা জমি কবলা দিবে বলে ১০ মাস যাবৎ হয়রানি করে বাড়ী থেকে জোর পূর্বক বের করে দেয়। সে আমার বাড়ির গাছপালাও কেটে নিয়ে যায়। আমি এখন মহামারি করোনা ভাইরাসের মাঝে আমার বৃদ্ধা মাসহ পরিবার নিয়ে অসহায় হয়ে রাস্তায় বসবাস করছি।
সরেজমিনে পরিকোট গ্রামে গিয়ে অভিযুক্ত আমির হোসেন মোল্লা দেখা না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
পরিকোট গ্রামের সমাজপতি মোতালেব হোসেন রিপন মোল্লা বলেন, ইউপি সদস্য ইস্রাফিল মোল্লা, আমি এবং ডাক্তার রুহুল আমিনের স্বাক্ষীতে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে জান্নাতুল ফেরদাউস টাকা পরিশোধ করে বায়না দলিল করে আমির হোসেন মোল্লা থেকে জমি ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছেন। বর্তমানে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় করোনা পরিস্থিতিতে ছিন্নমুল পরিবারটি অমানবিকভাবে জীবন যাপন করছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান মজুমদার বলেন, জান্নাতুল ফেরদাউসের জমি ক্রয় করার বিষয়টি সঠিক। আমির হোসেন মোল্লা তাকে জমি কবলা না দিয়ে বাড়ী থেকে বের করে দিয়েছে। আমি স্থানীয় ইউপি সদস্য ইস্রাফিল মোল্লাকে বিষয়টি মিমাংসা করে দিতে অনুরোধ করেছি।