করোনা ভাইরাসের এই দুর্দীনে সাধারণ চিকিৎসার জন্য বরিশাল জেলার দশটি উপজেলায় এখন একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে হোমিও চিকিৎসকেরা। আবহাওয়া জনিত জ্বর, সর্দি, কাশি ও পূর্বের এ্যাজমা রোগীরা হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ছুটে চলছেন হোমিও চিকিৎসকদের কাছে। তাদের দেয়া ওষুধ সেবনের পর সুস্থ্য হওয়ায় এসব সাধারণ রোগীদের কাছে এখন হোমিও চিকিৎসকরাই বড় ভরসা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনাভাইরাস আতঙ্কের কারণে বরিশালের প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগী দেখছেন না। প্রতিনিয়ত ওইসবস্থানে চিকিৎসার জন্য মানুষ গিয়েও সেবা না পেয়ে ফিরে আসছেন। চলমান পরিস্থিতির পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত অধিকাংশ চিকিৎসকেরা ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখবেন না বলে ঘোষণাও দিয়েছেন। ফলে চিকিৎসক না পেয়ে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পরেছেন মৌসুমি নানা রোগে আক্রান্তরা।
দীর্ঘদিন থেকে লকডাউনের মধ্যে থাকা গৌরনদী উপজেলার সীমান্তবর্তী কালকিনি উপজেলার রমজানপুর গ্রাম থেকে গৌরনদী বাসষ্ট্যান্ডের নিউ অপরাজিতা হোমিও হলের চিকিৎসক ডাঃ মণীষ চন্দ্র বিশ্বাসের কাছে চিকিৎসা নিতে আসা মাহিনুর বেগম বলেন, তিনি গত কয়েকদিন থেকে সর্দি জ্বরে ভুগছেন। প্রায় মৌসুমে তার এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রথমে তার কাশির পরিমাণ সামান্য বেশি হলে তিনি একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসক দেখানোর উদ্দেশ্যে যান। কিন্তু কোন চিকিৎসককে না পেয়ে শুক্রবার তিনি হোমিও চিকিৎসকের কাছে এসেছেন। তার কাছ থেকে ওষুধ নিয়ে তিনি বাড়ি ফেরেন। মাত্র একদিনেই ওষুধ সেবনের পর তার সর্দি ও কাশি অনেকটা কমে এসেছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ আতঙ্কের কারণে প্রাইভেট হাসপাতালের চেম্বারে বিশেষজ্ঞরা না আসার কারণে মাহিনুর বেগমের মতো অনেকেই ছুটছেন হোমিও চিকিৎসকের কাছে। ক্রান্তিকালে হোমিও চিকিৎসকরাই এখন সাধারণ রোগীদের কাছে ভরসা হয়ে পরেছে।
হোমিও চিকিৎসক ডাঃ মণীষ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, হোমিও চিকিৎসকেরা সারাবছরই মানুষের পাশে থেকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন। নিজেদের পেশাকে তারা মানবসেবা হিসেবে মনে করেন। তাই দেশের এই ক্রান্তিকালেও তারা ঘরে বসে না থেকে স্বল্পমূল্যে রোগীদের পাশে রয়েছেন। দূরত্ব বজায় রেখে সবধরনের রোগীকে তারা চিকিৎসাসেবা প্রদান করেছেন। গুরুতর রোগীদের বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিচ্ছেন।
নগরীর হোমিও চিকিৎসক ও বঙ্গবন্ধুর বোনের নামে প্রতিষ্ঠিত গৌরনদী আমেনা বেগম হোমিও কলেজের শিক্ষক ডাঃ শাহানাজ রুবি বলেন, রোগীদের সাধ্যমতো সেবা প্রদান করছি। রোগীদের অবস্থা বুঝে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাস আতঙ্কে সারাদেশ কাঁপছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অনেকেই ঘরে বসে সময় কাটাচ্ছেন। চলমান করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও আগের চেয়ে বর্তমানে বেশি সময় ঘরে চিকিৎসা কেন্দ্র খোলা রাখছি। অনেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখাতে না পেরে ছুটে আসছেন। হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের সুস্থ্য করে তোলা হচ্ছে।