নওগাঁর পোরশায় কৃষি ফসলী জমির মাটি কেটে নতুন পুকুর খনন করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন মৌজায় বিগত এক বছরে অসংখ্য কৃষি জমি পুকুরে পরিনত হয়েছে। ফলে অবাধে ফসলি জমির শ্রেণি বা প্রকৃতি পরিবর্তন করে পুকুর খনন করায় খাদ্য শস্য উৎপাদন কমে যাওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয় সচেতনমহল। কৃষি জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করা যাবেনা মর্মে সরকারী নীতিমালা থাকলেও নওগাঁর শস্য ভান্ডার খ্যাত এ উপজেলার ফসলি কৃষি জমি গুলোকে গভির পুকুরে পরিণত করছে কিছু অসাধু মুনাফা ভোগী মৎস চাষী। স্থানীয় কিছু চাষী তাদের কৃষি জমিতে শ্রম ব্যায় না করে ঝামেলাহীন ভাবে অর্থ উপার্জনের জন্য মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পুকুর খনন করার জন্য মৎস চাষীদের কাছে তাদের কৃষি জমি লিজ দিচ্ছেন। উপজেলার ছাওড়, নিতপুর ও মশিদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মৌজায় কৃষি জমিতে পুকুর খননের প্রবনতা বেশী লক্ষ করা গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসনের উদাসীনতা ও অবহেলার কারনে এই পুকুর খননের প্রবনতা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক শ্রেণির পুকুর খননকারীরা কৃষকদের লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে দিন-রাত খননকৃত পুকুরের মাটিগুলো ইট ভাটায় বিক্রি করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এতে কৃষক তার ফসলি জমির উর্বরতা হারাচ্ছেন আর অন্যদিকে পুকুর ব্যবসায়ীরা হচ্ছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। সরজমিনে ছাওড় ইউনিয়নের কুশুককুন্ডা মৌজার বাবুপুর এলাকায় এক পুকুর খননকারী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার ব্যবসায়ী সুমনের ম্যানেজার শফিকুলের সাথে কথা হয়। তিনি জানান, সুমন মহাডাংগা গ্রামের আব্দুল ওহাব নামের এক কৃষকের প্রতিবিঘা ১১হাজার টাকা দরে ১২বছরের জন্য ৮৮বিঘা জমি লিজ নিয়ে পুকুর খনন করছেন। সে জমিতে খননযন্ত্র(স্কেবেটর) দিয়ে তারা মাটি কেটে পুকুরের চারপাশে ৮-১০ফুট উঁচু করে মাটি দিয়ে পুকুরটি মৎস চাষের উপযোগী করছেন। তবে তিনি কৃষি জমিতে পুকুর খননের অনুমতি আছে কিনা তা বলতে পারেননি। পুকুর খননকারী সুমনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তার পুকুর খননের কোন পূর্বানুমতি নেই বলে জানান। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহফুজ আলম জানান, এভাবে পুকুর খনন করলে এক সময় কৃষি জমি কমে যাবে ফলে আমাদের ফসল উৎপাদন কমবে। এতে খাদ্য ঘাটতিও দেখা দিতে পারে। সুতরাং কৃষি জমিতে পুকুর খনন অবিলম্বে বন্ধ করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করনছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হামিদ রেজা জানান, ভূমি ব্যবহার নীতিমালায় কৃষি জমিতে পুকুর খনন করা যায়না। তবে কেউ আবেদন করলে তিনি ব্যবস্থা নিরেবন বলে জানান। অপরদিকে নওগাঁ জেলা প্রশাসক হারুন-অর রশিদ মোবাইল ফোনে বলেন, করোনা সময় শেষ হলে এগুলো বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।