হতদরিদ্র নিঃসন্তান গৃহহীন কাচুয়ানী বেওয়া (৮২) কে ঘর নির্মাণ করে দিয়ে মানবিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত দেখালেন পুলিশ কর্মকর্তা আহসান খান। বিগত ২৩ বছর আগে ব্রহ্মপুত্র নদের করাল গ্রাসে ভিটে মাটি হারিয়ে ভিক্ষা করে জীবন চলত কাচুয়ানী বেওয়ার। শেষ আশ্রয় হয় জেলার উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের বালারচর গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর ভাগ্নে আবদুস সামাদের দেয়া একটি ঝুঁপড়ি ঘরে। ভিক্ষা করার সময় গত ৪ বছর আগে আকস্মিক সড়ক দূর্ঘটনায় হাটা-চলার শক্তি হারিয়ে ফেললে ভিক্ষা করাও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর অসুস্থ অবস্থায় ঝুঁপড়ি ঘরে বসে খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে জীবন কাটছিল তার। চিকিৎসা ও খাবার সংকটে নির্ঘূম রাত কেটেছে। গরমের দিনে ঝুঁপড়ি ঘরের বেড়ার ফাঁক গলিয়ে হালকা বাতাস পেলেও শীতের দিনে ছিল না শীতবস্ত্র। বৃষ্টির সময় ঝুঁপড়ির চাল দিয়ে পানি পড়ে ভিজে যেত সবকিছু। এ ছাড়া সরকারের দেয়া সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বয়স্ক কিংবা বিধবা ভাতাও জোটেনি তার কপালে।
অসহায় বৃদ্ধা কাচুয়ানী বেওয়ার এমন দূর্বিসহ জীবন কাহিনি গত ২ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) কালের কন্ঠের অনলাইনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার পাশাপাশি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন অনেকে। খবরটি পুলিশ কর্মকর্তা ডিবি ডিমপি‘র এডিসি মোঃ আহসান খানের নজরে আসেলে তিনি কালের কন্ঠ‘র উলিপুর প্রতিনিধি রোকনুজ্জামান মানুর মাধ্যমে প্রথমে ১৫ দিনের খাবার পৌঁছে দেন তার বাড়িতে। এরপর ওই কর্মকর্তা গত শুক্রবার কালের কন্ঠ‘র এ প্রতিবেদকের মাধ্যমে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক টাকা দিয়ে একটি টিনসেড ঘর ও থাকার বিছানাপত্র দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। সোমবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে কাচুয়ানী বেওয়ার কাছে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়।
সেখানে উপস্থিত অনেকেই বলেন, মানবিকতার এমন দৃষ্টান্ত খুবই কম। সমাজের বিত্তবান মানুষেরা যদি এমন একটি করে গৃহহীন অসহায় পরিবারের পাশে দাড়ান, তাহলে সমাজে আর গৃহহীন কোন মানুষ থাকবে না।
নুতুন ঘর পেয়ে কাচুয়ানী বেওয়া আবেগ্লাপুত হয়ে বলেন,আল্লাহ তোমার ভাল করবে।
আব্দুস সামাদ বলেন,স্যার (ডিবির কর্মকর্তা) আমার মত গরিব মানুষের উপকার করলেন। আমি সারাজিবন তার জন্য দোয়া করব আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ্য ভাবে বেঁচে রাখে।