করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী মুসলমান ব্যক্তিদের লাশ স্বেচ্ছায় দাফন করতে প্রস্তুত সরাইলের ওরা ১৫ জন। তাই তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শীর্ষ আলেমদের পরামর্শে নিজেরাই ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির নাম দিয়েছেন ‘সরাইল কওমী স্বেচ্ছাসেবক কমিটি’। এ কমিটির বিষয়ে তারা গত ১৪ এপ্রিল মঙ্গলবার সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জকে লিখিত ভাবে অবহিত করেছেন। কমিটির নির্বাহী উপদেষ্টা হলেন মাওলানা মঈনুল ইসলাম খন্দকার ও সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক মো. জহিরূল ইসলাম। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগি হয়ে দাফন কাজ সম্পন্ন করাই তাদের মূল লক্ষ। এজন্য তাদের সুরক্ষা সরঞ্জামের ব্যবস্থা করার আবেদনও করেছেন। ওই কমিটি সূত্রে জানা যায়, করোনা ভাইরাস ছোঁয়াচে রোগ। তাই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিনই খবর আসছে করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় বৃদ্ধ মহিলা বা পুরূষকে রাস্তার পাশে ফেলে চলে গেছে স্বজনরা। কোন কোন সময় জঙ্গলেও ফেলে দিয়ে যাচ্ছেন। আর মারা যাওয়ার পর লাশের কাছে কোন স্বজন যাচ্ছেন না। এমন কি কেউ দেখতেও আসছেন না। অধিকাংশ লাশের দাফন করছেন পুলিশ সদস্যরা। এমতাবস্থায় সরাইলের মাওলানা জহিরূল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছেন। তারা ভয়কে জয় করার প্রত্যয় নিয়েছেন। তারা একটি কমিটিও করে ফেলেছেন। এই কমিটির লোকজনের কাজ হচ্ছে সরাইল উপজেলায় করোনায় মৃত যেকোন ব্যক্তির লাশের জানাযা ও দাফন করবেন তারা। কে ওই লাশের সাথে থাকল আর কে থাকল না এটা কোন বিষয় না। ইসলামি বিধি বিধানমতে সকল কাজ সম্পন্ন করে লাশটি দাফন করাই হবে তাদের মূল কাজ। এ কাজ সুন্দর ভাবে করতে পারলে দুনিয়া ও আখেরাতে তারা ফজিলত পাবে। এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন-টীম প্রধান মুফতি আ: রাকিব শিকদার, সমন্বয়ক মো. মাহন সর্দার, মুফতি কামাল উদ্দীন, গাজী মাও: মাহফুজ মাদানী, হাফেজ আব্দুল্লাহ, মাও: হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ আঙ্গর মিয়া, মোহাম্মদ মহরম আলী, মাও: সুলাইমান সাদী,কাজী ফাহীম আহমদ পাপন, মোহাম্মদ মুন্না, মোহাম্মদ শাহিন ও হাফেজ জামাল মিয়া।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহাদাত হোসেন টিটো বলেন, স্থানীয় ভাবে জেলার আলেমদের সাথে কথা বলে একটি কমিটি তারা জমা দিয়েছেন। তাদের কমিটিকে আমরা গ্রহন করব। সুরক্ষা সরঞ্জামের চিন্তাও করছি। এখানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনেরও ৭ সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। আর আমরা তো তাদের সাথে থাকবই। মূল কথা হলো সরাইলে করোনায় মৃত্যু ও জানাযা আমাদের কাম্য নয়।