নাটোরের লালপুরে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে ত্রাণ চাওয়ায় কৃষককে নির্যাতন মামলায় অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সাত্তারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে পাবনার ঈশ্বরদী থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে । নাটোর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে দুপুরে এক প্রেসব্রিফিংয়ে এই গ্রেফতারের কথা জানায় পুলিশ।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, গত ১০ এপ্রিল টিভি স্ক্রিনে সরকারী সহায়তার হটলাইন নাম্বার দেখে ৩৩৩ নম্বরে ফোন দেন নাটোরের লালপুর উপজেলার আঙ্গারিপাড়া গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম। এ সময় তিনি করোনা ভাইরাসের কারণে বেকার হয়ে পড়া তিনিসহ ঐ গ্রামের তিনশথ জন দরিদ্র মানুষের জন্য ত্রাণ সহায়তা চান। এরপর সেখান থেকে সহায়তার আশ্বাস মেলে। ৩৩৩ এর মাধ্যমে অবগত হয়ে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অর্জনপুর-বরমহাটি ইউপি চেয়ারম্যানকে ঐ এলাকায় ত্রাণ সহায়তার নির্দেশ দেন। এর দুইদিন পর গত ১২ এপ্রিল স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সাত্তার চৌকিদার দিয়ে ডেকে এনে কৃষক শহিদুল ইসলামকে ইউপি কার্যালয়ের ভেতর নিজেই লাঠিপেটা করেন। এ সময় চেয়ারম্যান বলেন ৩৩৩ নম্বরে ফোন করায় এলাকার সম্মান নষ্ট হয়েছে। এই ঘটনা কাউকে বললে অসুবিধা হবে বলে হুসিয়ারি দেন তিনি।
স্থানীয়দের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মুল বানীন দ্যুতি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং চেয়ারম্যানকে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। কিন্তু তার জবাব দেননি চেয়ারম্যান। পরে মঙ্গলবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি ভাইরাল হলে দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। তবে কৃষক শহিদুলের পরিবর্তে অন্য একটি রক্তাক্ত ছবি ভাইরাল হয়।
এঘটনায় গত বুধবার কৃষক শহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে চেয়ারম্যান আবদুস সাত্তার, মেম্বার রেজা ও রুবেলের নাম উল্লেখ করে লালপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকেই চেয়ারম্যান ও তার দুই সহযোগী পলাতক ছিল। মামলা দায়েরের পর পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পাবনার ঈশ্বরদী থেকে চেয়ারম্যান আবদুস সাত্তার কে গ্রেফতার করে। তার দুই সহযোগিকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক গোলাম রাব্বি জানান, অভিযুক্ত চেয়ারম্যানকে ক্ষমতার অপব্যবহার ও জনস্বার্থ বিরোধী কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে বরখাস্তের প্রস্তাবনা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে।