করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পীরগঞ্জে সরকারী ত্রানের (জিআর) চাল বিতরনে তেলেসমাতি ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যেই ৫৫ মে. টন চাল এবং সোয়া ৯ লাখ টাকার হদিস মিলছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এর যথাযথ জবাব দিতে পারেনি। অপরদিকে উপজেলার ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা ক্ষুব্ধ হয়ে ত্রাণের চাল হরিলুট হওয়ার অভিযোগ করছেন। প্রতিদিন ত্রাণের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের বাড়ি বাড়ি ছুুটছে নিরন্ন অসহায় মানুষ। উপজেলায় ত্রাণ হিসেবে ২৫১ মে. টন চাল এবং ওই নগদ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (পিআইও) মিজানুর রহমান জানান, গত ২৪ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত পীরগঞ্জে কয়েক দফায় ত্রাণের ২৫১ মে. টন চাল এবং ৯ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। প্রতিটি বরাদ্দই ইউনিয়নে বিভাজন করে ইউপি চেয়ারম্যানদের নামে ডি.ও দেয়া হয়। প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ১ম পর্যায়ে ১’শ ২৫ জন, ২য় পর্যায়ে ২’শ জন এবং ৩য় পর্যায়ে ৩’শ জন করে প্রত্যেককে ১০ কেজি করে মোট ১’শ মে. টন চাল দেয়া হয়। অথচ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, বুধবার পর্যন্ত উপজেলা দুটি খাদ্য গুদাম থেকে ৯০ মে. টন চাল সরবরাহ দেয়া হয়েছে। ৪র্থ দফায় প্রতিটি ইউনিয়নে ১০ কেজি করে ৬’শ পরিবারকে চাল দেয়া হবে। এজন্য ৯৬ টন চাল বরাদ্দ আসে। যা বিতরনের প্রক্রিয়াধীন। এ নিয়ে মোট ১’শ ৯৬ টন চাল বিতরন হবে। কর্তৃপক্ষের দেয়া এ তথ্যানুযায়ী ৫৫ টন চাল এবং ৯ লাখ ২০ হাজার টাকার কোন হদিস মিলছে না। এ ব্যাপারে বড়আলমপুর ইউপির চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান বলেন, আমার নামে বরাদ্দকৃত ৯ মে. টন চাল ইউএনও স্যার নিয়েছে। তিনি কোথায় দিয়েছেন, তা আমি জানি না। রায়পুর ইউপির চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান দুলাল চৌধুরী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারী ত্রাণ এখানে হরিলুট করা হচ্ছে। আর আমরা দরিদ্র মানুষের অত্যাচারে বাড়ীতে থাকতে পারছি না। সদর ইউপির চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ময়না মাস্টারের নামে ১০ মে. টন চালের ডিও ইস্যু হলেও তিনি ওই চাল উত্তোলনে অপারগতা প্রকাশ করেন। ফলে ৩ চেয়ারম্যানের নামে ২৭ টন চালের ডিও নিয়ে এক নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে ত্রাণ হিসেবে ৯ লাখ ২০ হাজার টাকা কোথায় কিভাবে ব্যয় করা হয়েছে,তার কোন হদিসই মিলছে না। এ ব্যাপারে মিঠিপুর ইউপি চেয়ারম্যান এসএম ফারুক, শানেরহাট ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, চতরা ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহীন বলেন, পিআইও কে নগদ টাকার কথা বললেও তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি। টাকা পেলে হয়তো আরও অনেক নিরীহ মানুষকে সহায়তা দেয়া যেত। পিআইও বলেন, ৩ ইউপি চেয়ারম্যানের নামে ২৭ টন চাল ডিও করে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষকে দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, জিআর ও নগদ অর্থ বিতরনের বিষয়টি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদেরকে অবহিত করার সরকারী নির্দেশনা থাকলেও পীরগঞ্জ উপজেলায় তা উপেক্ষিত হয়েছে রহস্যজনক কারনে।