রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার চরে সনাতন ধর্মের ৭৫ বছরের এক বৃদ্ধার করোনায় নয়, স্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হয়। লোক না পেয়ে ১৬ ঘন্টা পর উপজেলা হিন্দু বৈদ্ধ খ্রিস্টান ঔক্য পরিষদের পক্ষ থেকে সৎকাজ করা হয়েছে। শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর চরে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, বাঘা উপজেলার পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের চকরাজাপুর চরে দুটি হিন্দু পরিবারের লোকজন বসবাস করে। এই দুই পরিবারের লোক সংখ্যা ছোট বড় দিয়ে ৮ জন। এক পরিবারে ৫ জন, আরেক পরিবারে ৩ জন। এরমধ্যে নারায়নচন্দ্র শিলের স্ত্রী মুনুরানী শীল (৭৫) বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নিজ বাড়িতে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর তাকে সৎকাজের কোন লোক পায়নি। অবশেষে চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাঘা উপজেলা হিন্দু বৈদ্ধ খ্রিস্টান ঔক্য পরিষদের সভাপতি সুজিত কুমার বাকু পান্ডেকে অবহিত করেন। তিনি কয়েকজন লোক নিয়ে গিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে বাঘা মন্জু ডাইগোনেষ্টিক সেন্টারের মালিক ডাক্তার মিঠুন কুমার শীলের তত্ববধানে প্রায় ১৬ ঘন্টা পর শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় কালিদাসখালী পদ্মার নদীর ধারে হিন্দু ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী তাকে সৎকাজ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা হিন্দু বৈদ্ধ খ্রিস্টান ঔক্য পরিষদের সভাপতি সুজিত কুমার বাকু পান্ডে বলেন, চকরাজাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে জানতে পেরে কয়েকজনকে সাথে নিয়ে প্রায় ১৬ ঘন্টা পর মৃত ওই বৃদ্ধাকে সৎকাজ করা হয়েছে। সে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ভেবে কেউ প্রথমে তার কাছে ভয়ে যায়নি। পরে স্থানীয়দের কাছে তথ্য নিয়ে জানতে পারি তার স্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, এই সময়ে কারোনাতে না, কোন ভাবেই যেন কারো মৃত্য না হয়, এটাই কামনা করি।
চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, তাদের তেমন কোন আত্মীয় স্বজন নেই। তারা শীল বংশের মানুষ। বাজারে চুল-দাঁড়ি কাঁটার কাজ করে এবং সাধারণভাবে জীবন যান করে। পদ্মার চরে দুটিই মাত্র হিন্দু পরিবার। এই পরিবারে এক বৃদ্ধার মৃত্যুর খবর জেনে উপজেলা হিন্দু বৈদ্ধ খ্রিস্টান ঔক্য পরিষদের সভাপতি জানালে তিনি কয়েকজন লোক নিয়ে এসে সৎকাজ করেন।