পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হকসহ পুলিশ সদস্যদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে আসামি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই পুলিশসহ ৬ জন আহত হয়েছে।
সোমবার সকাল নয়টার দিকে কলাপাড়ার পায়রা বন্দর সংলগ্ন রাবনাবাদ নদীর পশুরবুনিয়া গ্রামের স্লুইস ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
হামলাকারীদের নিক্ষেপ করা ইটের আঘাতে কলাপাড়া থানা পুলিশের এএসআই জামান হোসেন, কনস্টেবল হায়দার, তহশিরদার জব্বার আকন, পেশকার জাফর প্যাদা, স্পিডবোট চালক মো. আফজাল হোসেন, কর্মচারী সাগর আহত হয়েছে। তাদের কলাপাড়া হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
পুলিশ ও কোষ্টগার্ড সদস্যরা এ হামলায় জড়িত থাকার অপরাধে বাল্ক হেডের মালিক লিটন গাজী (৩৮), তাঁর সহযোগী রানা মিয়া (৩৭) কে গ্রেপ্তার করেছে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, লিটন গাজী ও তাঁর সহযোগীরা রাবনাবাদ নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে বহুদিন ধরে অবৈধভাবে বালু কাটার কাজ করে আসছে। এ চক্রটি বালু কেটে ৮টি বাল্কহেড বোঝাই করে লালুয়া ইউনিয়নের পশুরবুনিয়া স্লুইস এলাকায় এসে বালু খালাস করতে ছিল বলে খবর পায়। ইউএনও পুলিশ সদস্যদের নিয়ে সেখানে যায়। বাল্ক হেডগুলো সাথে সাথে আটক করা হয়। এ সময় অবৈধভাবে বালু কাটার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে ৮ জন শ্রমিককেও আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতে ঘটনাস্থলেই তিন মাস করে কারাদ- দেয়া হয়।
সাজাপ্রাপ্ত শ্রমিক হিরন হাওলাদার (২৫), ওমর ফারুক (২০), জহিরুল ইসলাম (৩১), হানিফা (১৮), বশির আহমেদ (৩২), জহিরুল ইসলাম (৩০), মাসুদ রানা (২৭) এবং মো. মিরাজকে(৩০) কলাপাড়ায় নিয়ে আসার চেষ্টা করলে বাল্ক হেডের মালিক লিটন গাজীর নেতৃত্বে ৪০-৫০ জন শ্রমিক লাঠিসোটা নিয়ে তাঁদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। আটক শ্রমিকদের হামলাকারীরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় হামলাকারীরা বৃষ্টির মতো ইট-পাথরের টুকরো নিক্ষেপ করে। এতে ইউএনওকে বহনকারী স্পিডবোটের কাঁচ ভেঙ্গে যায়। হামলায় স্পিডবোটটির ইঞ্জিনসহ অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। এ সময় স্থানীয় গ্রামবাসীরা এগিয়ে আসলে বাল্ক হেডের মালিক লিটন গাজী একটি ট্রলারে করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে নদীতে টহলরত কোস্টগার্ড সদস্যরা ধাওয়া করে রাবনাবাদ নদী থেকে লিটন গাজী ও রানা মিয়াকে আটক করে কলাপাড়া থানায় সোপর্দ করে।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ভ্রাম্যমান আদালত বালু ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ৪ ধারায় ৮ শ্রমিককে তিন মাসের কারাদ- প্রদান করেছে।
এ ছাড়া সরকারি কাজে বাঁধা দান, সশস্ত্র হামলা, আসামি ছিনতাইয়ের চেষ্টার অপরাধে বাল্ক হেডের মালিক টিয়াখালী ইউনিয়নের ইটবাড়িয়া গ্রামের লিটন গাজী এবং তাঁর সহযোগী পটুয়াখালীর জৈনকাঠি এলাকার রাজা মিয়াসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে ২৫-৩০ জনের বিরুদ্ধে কলাপাড়া থানায় মামলা করা হয়েছে।