বগুড়ায় করোনাকে জয় করে একজন নারী সহ মোট ৫ব্যাক্তি বিজয়ীর বেশে নিজ বাড়ীতে ফিরে গেলেন। গতকাল বুধবার বিকালে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের করোনা ইউনিট থেকে তাদের ছাড়পত্র দেয়া হয় । এনিয়ে মোট ৭জন কোভিড-১৯এর আক্রান্তরা শুস্থ্য হয়ে বাড়ী ফিরলেন।
হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার নার্স সহ বিভিন্ন কর্মীরা তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও ’আমরা করবো জয়’এমন জয়গানের সুরে সুরে করোনা জয়ী ৫জনকে বিদায় জানান।একই সময়ে সন্দেহ ভাজন হিসাবে শহরের সবুজবাগ এলাকার মৌসুমী নামের এক নারীর নমুনা পরীক্ষা রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় তার হাসপাতাল থেকে ছুটি দেয়া হয় । বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও)শফিক আমিন কাজল ।
এদিকে বগুড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনা বিজয়ী ৫জনের প্রত্যককে ১০হাজার টাকার চেক তুলে দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা )মুহা মাসুম আলী বেগ। এসময় সেখানে খুশি আর আনন্দের পাশাপাশি এক আবেগ ঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
বিদায়ী অনুষ্ঠানে এসময় উপস্থিত ছিলেন, বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের তত্বাবধায়ক এটিম নূরুজ্জামান সঞ্চয়, বগুড়া সদর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সামির হোসেন মিশু ,বগুড়ার ডিপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজার রহমান তুহিন , হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও)শফিক আমিন কাজল সহ বিভিন্ন ডাক্তার,হাসপাতালের সকল সিনিয়র নার্স ও সংশ্লিষ্টরা।
করোনা বিজয়ীরা হলেন সারিয়াকান্দির নারচী এলাকার রিপন (২৫) তিনি নারায়নগঞ্জের পপুলার ডায়াগনেষ্টিক কর্মরত । করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে তিনি বগুড়ায় আসেন এবং ২২এপ্রিল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। গতকাল ৬মে হাসপাতালের ল্যাবে তার দ্বিতীয় বারের পরীক্ষা রির্পোট নেগেটিভ পাওয়া যায় ।
একই উপজেলার গনকপাড়ার মামুনূর রশিদ (২৮)ঢাকার একটি কলেজে প্রভাষক হিসাবে কর্মরত। করোনায় আক্রন্ত হবার পর বগুড়ায় আসেন । পরে গত ২৪ এপ্রিল তারিখে তাকে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়। ৬মে তার দ্বিতীয় বারের নমুনা পরীক্ষা রির্পোট নেগেটিভ পাওয়া গেলে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়
সোনাতলা উপজেলার আচারের পাড়া গ্রামের কাহিনূর বেগম । তিনি ঢাকার বেড়াতে গিয়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরে তিনি বগুড়ায় আসেন এবং গত ২২এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন । ৬এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় তার শরীরের নমুনা রির্পোট নেভেটিভ পাওয়া যায় । এদিকে মাকে নিতে আসেন তার এক মাত্র মেয়ে তাসলিমা খাতুন (২০)।
ধনুটের মথুরাপাড়া এলাকার আব্দুর রশিদ(২৮)একজন গার্মেন্টস কর্মী। তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে বগুড়ায় আসেন এবং গত ২৩ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি হন। তার দ্বিতীয় দফার পলীক্ষা রির্পোট নেগেটিভ আসায় তাকে ছাড়পত্র দিয়ে হয়।
বগুড়া শহরের সবুজবাগ এলাকার জাহিদুল হাসান(৪০),তিনি একটি প্রতিষ্ঠানের সেলস ডিষ্টিবিউটর হিসাবে কর্মরত ।গত ৩০ এপ্রিল তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। ৬মে তার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়।
এদিকে হাসপাতালের সূত্রে জানানো হয় , জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী মৌসুমী বেগম (২৮) স্বামীর সংস্পর্শে থাকায় সম্ভাব্য হিসাবে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল । কিন্তু তারও শরীরের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় স্বামীর সাথে তাকেও হাসপাতাল থেকে ছুটি দেয়া হয়।
উল্লেখ্য ইত্ব পূর্বে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধিন দু’জন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগী করোনাকে জয় করে তাদের বাড়ী ফিরে গেছেন। তাদের মধ্য একজন জেলার আদমদীঘি উপজেলার শাওইল গ্রামের বাসিন্দা এবং পুলিশ সদস্য আহসান হাবিব । যিনি ঢাকা মেট্রোপলিটার পুলিশে কর্মরত । অন্যজন রংপুর সদরের ধাপ এলাকার বাসিন্দা শ্রমজীবি শাহ আলম(৪৫)। ঢাকা থেকে জ্বর শর্দি কাশি শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত অবস্থায় বাড়ী ফেরার পথে তাকে বগুড়া রংপুর মহাসড়কের মহাস্থান এলাকায় ট্রাক থেকে নামিয়ে যাওয়া হয়েছিল ।প্রথমে তাকে শজিমেক হাসপাতালে ও পরে মোহম্মদ আলী হাসপাতালে করোনা ইউনিটে বর্তি করা হয় । প্রায় ২৫দিন চিকিৎসাধিন থাকা অবস্থায় তিনি করোনা জয়ী হয়ে বাড়ী ফেরেন। এসময় তার সেবায় সাথে ছিলেন তার স্ত্রী ,তিনি কিন্তু করোনায় আক্রান্ত হননি।
হাসপাতালের একটি দায়িত্বশীল জানান, হাসপাতালের করোন ইউনিটের আইসোলেশনে এখনো কোভিড-১৯এ সংক্রামক রয়েছেন।