রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির দূর্গম সাজেক এলাকায় রিজার্ভ ফরেষ্টর শত শত একর সংরক্ষিত পাহাড়ী বনাঞ্চল ও আশপাশের পাহাড়ে জুম চাষের নামে আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে ঔষধি নানা প্রজাতির লতা-পাতা ও গাছপালা। জুম চাষের নামে জুমিয়াদের এ ধ্বংসলীলা চলছে বছরের পর বছর। ফলে প্রকৃতি হারাচ্ছে তার ভারসাম্য, বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বন্য প্রাণী, পাখি ও কীট-পতঙ্গ। ঘটছে পরিবেশ বিপর্যয়, যার দায়ভার বহন করতে হচ্ছে সাজেকসহ পাহাড়ে বসবাসরত লক্ষ লক্ষ মানুষকে।
সরজমিনে দেখা গেছে, পাহাড়ে জুম চাষের নামে আগুনের লাগাম হীন লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ছে পাহাড় থেকে পাহাড়ে আর শত শত একর সংরক্ষিত পাহাড়ী বনাঞ্চল ও আশপাশের ঘর বসতি এলাকায়। এতে করে অনেক সময় এইসব ঘর বসতিগুলোতেও আগুনের লেলিহান শিখা থেকে বাদ পড়ছে না। এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র। অবাদে বনাঞ্চাল ধংসের ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পাহাড়ী ছড়া ও কুয়ায় দেখা দিচ্ছে চরম পানির অভাব, ফলে বাড়ছে পাহাড়ে পানি বাহিত রোগবালাই। তবে পাহাড়ে আগুন দেয়া থেকে স্থানীয়দের দুরে রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রায়ই দেয়া হয় কঠোর বার্তা, তাতেও লাগামটানা যাচ্ছে না এই জুমে আগুন দেয়ার রীতিনীতি।
স্থানীয় সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা ও গ্রাম প্রধানদের দাবী তারা নিরুপায় হয়েই আগুন দেয় পাহাড়ে, তাদের খাদ্যের সংকট রয়েছে, খাদ্যের যোগানে তাদের বিকল্প কোন কর্মসংস্থান নেই, আগুন না দিলে জুমে চাষ না হলে না খেয়ে থাকতে হবে। তাদের দাবী সরকার যদি তাদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেয় তাহলে তারা জুম চাষ ছেড়ে দিবে তখনই পাহাড়ে আগুন দেয়া বন্ধ হবে।
বাঘাইছড়ি পরিবেশে সুরক্ষা কমিটির সভাপতি ও কাচালং সরকারী কলেজের জীব বিজ্ঞানের প্রভাষক আবুল ফজল মনে করেন, জুম চাষের নামে অবাদে বনাঞ্চল ধংস করার পরিনাম হবে ভয়াবহ, পানির স্তর শুকিয়ে যাবে, নেমে আসবে চরম বিপর্যয়, তাই বিকল্প কর্মসংস্থানের মাধ্যমে তাদের জুম চাষ থেকে বিরত রাখতে হবে। তা না হলে পরিবেশ বিপর্যয় মারাত্মক আকার ধারণ করবে।