করোনা ভাইরাসের প্রভাবে মানুষ যেমন কর্মহীন হয়ে পড়ছে। বাড়ছে নানা দূর্ভোগ। তেমনি গ্রামাঞ্চলে নারী নির্যাতনের ঘটনায় বাড়ছে। যৌতুকের দাবিতে ঘরবধূদের উপর নেমে আসছে নির্যাতন। এমনই নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে পাবনার চাটমোহরে। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অমানুষিক নির্যাতনে ঘর ছাড়া হয়েছেন প্রবাসীর স্ত্রী মর্জিনা খাতন (২৫)। ওই গৃহবধূকে শাশুড়ি ও ননদসহ অন্যরা মারপিট করে হত্যার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। হাসপাতাল লকডাউন করায় স্থানীয় পল্লী চিকিৎকের কাছে তাকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। নির্যাতনের বিষয়ে ওই গৃহবধূ চাটমোহর থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অসহায় ওই গৃহবধূ শ্বশুরবাড়ি থেকে বিতারিত হয়ে দরিদ্র ভাই শফিকুলের বাড়িতে অবস্থান করছেন। অভিযোগে জানা যায়,প্রায় ৬ বছর আগে উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে মর্জিনা খাতুনের সাথে ২০১৫ সালে বিয়ে হয় দুবাই প্রবাসী একই উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের সুইগ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে রেজাউল করিমের সাথে। বিয়ের পর মাত্র ২ মাস ২৫ দিন রেজাউল স্ত্রীর সাথে ছিলেন। এরপর দুবাই চলে যান। বিগত ৫ বছর সে আর দেশে ফেরেননি। বিয়ের ৬ মাস পরেই মর্জিনার উপর শাশুড়ি ও ননদদের নির্যাতন শুরু হয়। বিষয়টি মর্জিনা তার প্রবাসী স্বামী রেজাউলকে জানালেও তা আমলে না নিয়ে নানা কথা বলেন। মর্জিনা জানান,মাঝে মধ্যেই যৌতুকের জন্য তার স্বামী দুবাই থেকে চাপ দেয়। শাশুড়ি ও ননদসহ তার আত্মীয়রাও গালমন্দ করতে থাকে। একপর্যায়ে শারিরীক নির্যাতন শুরু হয়। তাকে দেশের আসার কথা বললে,সে আসবে না বলে জানায়।
গৃহবধূ মর্জিনা আরো জানান,তাকে শ্বশুর বাড়ি থেকে কয়েক বার তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এলাকার প্রধান ও আত্মীয়স্বজন বিষয়টি সমাধান করতে ব্যর্থ হয়। অবশেষে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ১২ মে বিকেলে চাটমোহর থানায় এসে মর্জিনা খাতুন একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সুইগ্রামে মর্জিনার শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম,ননদ আমেনা ও জামেনাসহ আলতাব,খোকনসহ অন্যরা মর্জিনা মারপিট শুরু করে। তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। মর্জিনার চিৎকারে এলাকার লোকজন এসে তাকে রক্ষার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মর্জিনাকে উদ্ধার করে তার ভাই শরিফুল ইসলামের বাড়িতে রেখে আসেন। এ সময় মর্জিনার শাশুড়িসহ অন্যরা পালিয়ে যায়। অসহায় মর্জিনা খাতুন তার উপর নির্যাতন ও যৌতুকের দাবির বিষয়টি স্থানীয় ব্রাক’র নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলে জানিয়েছন বলে জানান।
এ ব্যাপারে মর্জিনার শাশুড়ির সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
চাটমোহর থানার এসআই রবিউল করিম জানান,মর্জিনাকে নির্যাতনের বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।