লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের জাওরানী গ্রামে বাজার থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে যুবককে নিযার্তনের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
রোববার (১৭ মে) সমঝোতায় চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনকে আসামী থেকে বাদ দিয়ে এজাহার পরিবর্তন করে নির্যাতিত যুবকের জ্যাঠা আবুল কাশেম বাদী হয়ে নতুন করে অভিযোগ দায়ের করেন। মামলার এজাহারে প্রথমে ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনকে আসামী করা হলেও পরে সমঝোতায় তাকে বাদ দিয়ে তার ভাই, ছেলে ও গ্রাম পুলিশকে আসামী করা হয়।
এদিকে চেয়ারম্যানের বাড়ির ওই কক্ষ থেকে ২৭০ পিচ ইয়াবা উদ্ধার হলেও এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। জিডি করে তদন্তের কথা বলছে পুলিশ।
জানা গেছে, ভেলাগুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের মাদক ব্যবসা ও চেয়ারম্যানের নানা অনিয়ম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্টাটাস দেয় নুরুজ্জামান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যানের ছেলে, চেয়ারম্যানের ভাই মঞ্জু ও গ্রাম পুলিশ শামীম শনিবার দুপুরে জাওরানী বাজার থেকে চেয়ারম্যানের বাড়িতে নুরুজ্জামানকে তুলে নিয়ে আসে। সেখানে নিয়ে তার হাত পা বেধেঁ অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে হাত পা বাধাঁ অবস্থায় একটি কক্ষে আটকে রাখে।
পরে ইউপি চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন আহত যুবক নুরুজ্জামানকে মাদক ব্যবসায়ী সাজিয়ে পুলিশকে দেয়ার কৌশল করে। তার আগেই স্থানীয় লোকজন বিষয়টি পুলিশ ও বিজিবি’কে অবগত করেন।
খবর পেয়ে হাতীবান্ধা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয় লোকজন চেয়ারম্যানের পুরো সাজানো নাটকের ঘটনা বলেন। তারা চেয়ারম্যানের এ সাজানো নাটকের প্রতিবাদ করেন। পরে পুলিশ ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান এবং চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে ২৭০ পিচ ইয়াবাউদ্ধার করেন। ওই যুবকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ পাওয়া গেছে।
একটি সুত্র জানান, রাতে এ ঘটনায় নিযার্তিত যুবক নুরুজ্জামান বাদী হয়ে হাতীবান্ধা থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে প্রথমে ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনকে আসামী করা হয়। পরে সমঝোতায় রবিবার নুরুজ্জামানের জ্যাঠা বাদী হয়ে চেয়ারম্যানকে বাদ দিয়ে তার ভাই, ছেলে ও গ্রাম পুলিশকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করেন। এ ছাড়া ২৭০ পিচ ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। শুধু জিডি করে তদন্ত করা হবে এমন দাবী পুলিশের।
দক্ষিন জাওরানী আবুল লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি দুলাল হোসেন বলেন, ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের বিপক্ষে কেউ গেলে তাকে বিভিন্ন কৌশলে আটক করে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করা হয়। তার ভাইয়ের মাদক পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার অপরাধে ওই যুবককে চেয়ারম্যানের নিদেশে তুলে নিয়ে গিয়ে নিযার্তন করা হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার ওই যুবক নুরুজ্জামান বলেন, আমাকে মিথ্যা অভিযোগ তুলে নিয়ে গিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করেন চেয়ারম্যানের লোকজন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ওই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন বলেন, গ্রাম পুলিশ ইয়াবাসহ ওই যুবককে আটক করেছে। তাকে নির্যাতন করা হয়নি।
হাতীবান্ধা থানার ওসি ওমর ফারুক বলেন, পুরো ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।