আমফান তান্ডবে কুয়াকাটা সৈকত লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। সৈকতের বেলাভূমে উপড়ে গেছে শত শত গাছ। ভেসে গেছে অন্তত অর্ধশত ক্ষুদে দোকানির টং দোকানসহ দোকানের মালামাল। কয়েক কোটি টাকার সম্বল হারিয়ে ফেলেছে এসব মানুষ। বুধবার শেষ বিকেলে রেখে যাওয়া ছোট্ট দোকানগুলো রাতের জলোচ্ছ্বাসের ঝাপটায় লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। জীবিকার চাকা সচল রাখার অবলম্বন হারিয়ে মানুষগুলো নিঃস্ব হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ফেরা মানুষগুলো যেন সব হারিয়ে ফেলেছে। সৈকত জুড়ে প্রকৃতি এবং মানুষের জীবকার অবলম্বন হারানোর ধংসের দৃশ্য পড়ে আছে। কুয়াকাটা সৈকতের শুন্যপয়েন্টের পূর্বদিকে উপড়ে লাশের মতো পড়ে আছে তাল, নারিকেল, ছইলা-কেওড়া, ঝাউসহ বিভিন্ন প্রজাতির শত শত গাছ। আর পশ্চিম দিকে মানুষের দোকানপাট উপড়ে, ভেঙ্গে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। কেউ বা ফের গোছাচ্ছেন, কেউ খুজে বেড়াচ্ছেন। আচার বিক্রেতা মোঃ শামিম জানান, তার তিন লক্ষাধিক টাকার মালামাল জলোচ্ছ্বাসের ঝাপটায় ভেসে গেছে। আব্দুল মোহাম্মদ পান্না জানান, তার কমপক্ষে ৭০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। হোটেল সানরাইজ এর মালিক শাহজালাল মিয়া জানান, তার নিজের ২২ জন ভাড়াটিয়ার দোকান মালামালসহ ভেসে গেছে। প্রত্যেক দোকানে ৫০ হাজার থেকে দুই লক্ষাধিক টাকার মালামাল ছিল। চা-কফিসহ কোল্ডড্রিংক বিক্রি করতেন মিরাজ মৃধা। জানালেন এক আমফানে এখন নিঃস্ব। একই দশা হুমায়ুনের। এভাবে ঝিনুস সামগ্রী, চটপটি, ফুচকা, চা-কফিসহ মাছ-কাকড়া ফ্রইয়ের কমপক্ষে ৫০ দোকানি আমফানের তান্ডবে এখন নিঃস্ব হয়ে গেছে। একেতো করোনার প্রভাবে দেড় মাসের বেশি সময় ব্যবসা ছিল না। লোকসানে কাহিল মানুষগুলো আমফানে পুঁজিহারা হয়ে গেল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ভেসে যাওয়া নষ্ট হওয়া দোকানপাটের স্ট্রাকচার খুঁজতে দেখা গেছে এসব ক্ষুদে দোকানিদের। কেউ কেউ আবার কাঠমিস্ত্রি এনে অন্তত দোকানের পজেশনের জায়গাটি ঠিক রাখছেন। দোকানিদের ভাষ্য জলোচ্ছ্বাসের এমন তান্ডব তারা আর আগে কখনও দেখেননি। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।