প্রয়াত কৃষকনেতা মাস্টার ইমান আলীর ১২তম মৃত্যু বার্ষিকীতে করনো মহামারীতে কর্মহীন ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ, ডিজেলের মূল্য কমানোর দাবি এবং অর্থনীতি রক্ষার নামে অপরিকল্পিত ভাবে চলাচল নুতন করে বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সমালোচনা করেন কৃষক সংগ্রাম সমিতির নেতৃবৃন্দ
মঙ্গলবার কৃষক সংগ্রাম সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি প্রয়াত কৃষকনেতা মাস্টার ইমান আলীর ১২তম মৃত্যু বার্ষিকী পালন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় কালীগঞ্জ উপজেলার মল্লিকপুরস্থ সমাধিতে পুষ্পমাল্য অপর্ন, ১ মিনিট নিরবতা, শপথ পাঠ ও কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফিজুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হক লিকু, কেন্দ্রীয় সদস্য ও ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি ডাঃ ওলিয়ার রহমান এবং ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ ঝিনাইদহ জেলা সম্পাদক মানবেন্দ্র দাস মিন্টু প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে করোনায় কর্মহীন ও বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে হতাহত ও ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ, দ্রুত উপকূলীয় বাঁধ সংস্কার, ক্ষতিগ্রস্থ’ ঘরবাড়ি মেরামত-পুনঃনির্মাণ এবং নতুন করে ফসল উৎপাদনে কৃষককে বিনামূল্যে পর্যাপ্ত উপকরণ সরবরাহ দাবি করেছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা মহামারীতে এমনিতেই কৃষকসহ দেশবাসী বিপর্যস্ত। এমতাবস্থায় বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলার ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই উপকূল জুড়ে আবার ব্যাপক তান্ডব চালাল সুপার সাইক্লোন আম্ফান। নেতৃবন্দ উপকূলীয় অঞ্চলসহ ক্ষতিগ্রস্থ সকল জেলা ও অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক-জনতাকে ক্ষতিপূরণের আওতায় আনার জোর দাবি জানান। বিশ্বে বর্তমানে তেলের দাম সর্বনিম্ন হলেও সরকার জ্বালানী তেলের দাম কমায়নি। সরকার নিজে একটি মুনাফাখোর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ সময় দেশে করোনা সংক্রমণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, দেশ ক্রমান্বয়ে বেশি সংক্রমণের দিকে (পিক) যাচ্ছে। আর সরকার ইউরোপ-আমেরিকার লকডাউন তুলে নেওয়ার উদাহরণ টেনে দেশে 'সাধারণ ছুটি' তুলে নিতে চাইছে। আমেরিকা-ইউরোপে সর্বোচ্চ সংক্রমণের পর সংক্রমণ কমার সময় পর্যায়ক্রমে পরিকল্পিত ভাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছে। মূলত সরকার প্রথম থেকে কোন পরিকল্পনা ছাড়া যখন যা খুশি তাই করছে, এখনও সে পথেই ভারতকে অনুসরণ করে চলেছে। মূলত রপ্তানী বাণিজ্যে সরকারের প্রতিদ্বন্দ্বি ভিয়েতনামের পথ অনুসরণ না করে অধিক সংক্রমণের বিপদ বৃদ্ধি করছে। অন্যদিকে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা এমনিতেই দেশে কখনও ভাল ছিল না। ধনীরা নির্ভর করতো সিঙ্গাপুরসহ ইউরোপ-আমেরিকার ওপর আর মধ্যবিত্তরা নির্ভর করতো পাশ্ববর্তি ভারতের ওপর। নিম্নমধ্যবিত্তসহ সাধারণ মানুষ নির্ভর করতো দেশের সরকারী-বেসরকারী হাসপাতালগুলিতে। আর হতদরিদ্ররা গ্রাম্য চিকিৎসকসহ কবিরাজ-ঝাড়ফুকের ওপর। করোনা মহামারীকালে যেমন করোনার চিকিৎসা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তেমনি অন্যান্য রোগের চিকিৎসা মূলত হচ্ছে না। এমতাব¯’ায় জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ব্যর্থতার দায় ডাক্তারসহ সংশ্লিষ্টদের ওপর চাপিয়ে এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানায় দায় জনগণের ঘাড়ে চাপিয়ে দেশকে ব্যাপক সংক্রমণ ও মৃত্যু ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে এবং ডাক্তারসহ স্বাস্থ্য বিভাগকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। এমতাবস্থ’ায় নেতৃবৃন্দ সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের পথ পরিহার করে জনগণকে রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানান।