একদিকে করোনার ছোবলে গত দু’মাস ধরে চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এ পরিস্থিতিতে বাগেরহাটের চিতলমারীতে শত শত গ্রাহকদের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। ‘এ যেন মরার উপর খাড়া’র ঘা’। এ বিল পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিষয়টি প্রতিকারের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয় পল্লীবিদ্যুৎ গ্রাহকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক মাস ধরে বিদ্যুৎ অফিসের নানা অনিয়ম ও অবস্থাপনার কারণে বিদ্যুৎ বিলের জন্য অতিরিক্ত মাশুল গুণতে হচ্ছে লোকজনকে। বিদ্যুৎ অফিস ব্যতীত অন্য কোন ব্যাংক কিংবা বিকাশে বিল পরিশোধ করা হলেও সেটি অফিসের কম্পিউটারে যথা সময়ে যোগ করা হচ্ছে না। ফলে গ্রাহকদের পরিশোধকৃত বিল পরবর্তী মাসে বিলের কাগজে নতুন করে যুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। এতে করে সাধারণ গ্রহকে প্রতিমাসে দ্বিগুণ বিল গুণতে হচ্ছে।
এছাড়া গত দু’মাসে করোনার প্রভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা। কর্মহীন লোকজন দুর্বিসহ সময় পার করছেন। এ অবস্থায় আয়-রোজগারের সব পথই তাদের বন্ধ রয়েছে। অনেকেই চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছেন। এ অবস্থায় গত মাসে গ্রাহকদের বিদ্যুৎবিল অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি আসায় সেটি পরিশোধে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
উপজেলার চিংগুড়ি গ্রামের হোসেন শেখ জানান, প্রতিমাসে ২ শ’ থেকে ২৫০ টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে আসছেন, কিন্তু গত মাসে প্রায় ৬ শ’ টাকা বিল এসেছে তার। শ্যামপাড়া গ্রামের গৃহবধূ শোভা ম-ল জানান, প্রতি মাসে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল দিয়ে থাকেন কিন্তু এ মাসে প্রায় ৫শ’ টাকা বিল এসেছে। চিতলমারী বাজারের ব্যবসায়ী সুভাস কীত্তুনিয়া জানান, গতমাসে অন্য সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ বিল এসেছে তার। এমন শত শত গ্রহকদের একই অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি প্রতিকারের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।
বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন জানান, তিনি নিজেই এ পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছেন। তার বাসায়ও গত মাসে অতিরিক্ত বিল এসেছে। করোনার কারণে সঠিক ভাবে অনেক স্থানে বিদুুৎ বিল নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। পাশাপাশি এ সময়টায় বিদ্যুতের ব্যবহার বেশি থাকায় বিল অতিরিক্ত হয়ে থাকতে পারে বলেও জানান তিনি। তবে অতিরিক্ত কোন বিল হলে সেটি অফিসের সাথে পরামর্শ করে সমাধান করতে গ্রাহকদের অনুরাধ জানিয়েছেন তিনি।