পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর দীর্ঘ ১৫ বছরের জলাবদ্ধতা থেকে পরিত্রান পেতে চলেছে গোপালগঞ্জের তিন গ্রামের এক হাজার পরিবার। বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী একেএম অহেদউদ্দীন চৌধুরী গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গয়লাকান্দি নামক স্থানে এমবিআর চ্যানেলের বেড়ীবাধের নীচ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের কাজের উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি বেড়ীবাধের নীচ দিয়ে পানি নিষ্কাশন করে নদীতে পানি বের করে দেয়ার ক্ষেত্রে পদস্থ কর্মকর্তাদের নানা দিক নির্দেশনা দেন। এবং জরুরী ভিত্তিতে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে এখানে একটি স্থায়ী লকগেট করার ঘোষনা দেন তিনি।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে প্রধান প্রকৌশলী একেএম অহেদউদ্দীন চৌধুরী বলেন, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের এই এলাকার প্রায় এক হাজ্রা পরিবার পারিবন্দী ছিল ও প্রায় দেড়শ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছিল। আমরা এমবিআর চ্যানেলের বেড়ীবাধের নীচ দিয়ে নদীতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। এতে এই এলাকার মানুষের দীর্ঘ বছরের সমস্য দূর হবে এবং এখানকার জমিতে আবার সঠিকভাবে চাষাবাদ হবে, পানি নিয়ে কৃষকের আর কোন সমস্যা হবেনা।
তিনি আরো বলেন, আমরা পশ্চিম গোপালগঞ্জ সমন্বিত পানি ব্যবস্বথাপনা প্রকল্পের জন্য ১২০ কোটি টাকার এবং গোপালগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলার খাল পুর:খনন , সেচ, পানি নিষ্কাশন ও বন্যা নিয়ন্ত্রন অবকাঠোমো নির্মান পূনর্বাসন, নদীতীর সংরক্ষন প্রকল্পের জন্য ৯৭২ কোটি টাকার দু’টি ডিপিপি পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ে পাঠিয়েছি। এই প্রকল্প দুটি অনুমোদন হলে গোপালগঞ্জে জলাবদ্ধতার আর কোন সমস্য থাকবেনা এবং গোপালগঞ্জের সকল নদী ও খাল আবার সচল হবে বলে তিনি াাশা প্রকাশ করেন।
এসময় পাউবো ফরিদপুর অঞ্চলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল হেকিম, গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ণ বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ শাহিনুর আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক হায়দার হোসেন, মুকসুদপুর কৃষকলীগ নেতা সরদার মজিববুর রহমান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাফিকুল মোল্লা, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম মাতুব্বর প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য: গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গোহালা ইউনিয়নের গয়লাকান্দি, গঙ্গারামপুর ও খালিয়া গ্রামে এক হাজার পরিবার দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ পানিবন্দি ছিল। এসব গ্রামে এক সময় তিন ফসল হতো। পানি অপসারণের কোন ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতো। এবং ওই এলাকার প্রায় ২’শ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছিল। স্থানীয়দের দাবী ছিল গয়লাকান্দিতে খালের উৎস মুখে একটি স্লুইচগেট নির্মাণ করলে তারা এই জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পাবে। বিষয়টি সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এর পরই বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নজরে আসে।