গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে করোনার মধ্যে জম্ম নেয়া ৫শ’ সুবিধা বঞ্চিত শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে বাড়িতে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
প্রসূতি মা পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেলেই পুষ্টি পাবে শিশু। এ ভাবেই সুস্থ সবল হয়েই বেড়ে উঠবে আগামী প্রজম্ম। সদ্য নবজাত শিশুর মায়ের পুষ্টির চাহিদা পুরণ করতেই কাশিয়ানী উপজেলা প্রশাসন ও পরিষদ এ উদ্যোগ গ্রহন করেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ, উপজেলা চেয়ারম্যান সুব্রত ঠাকুর হিল্টু পদস্থ কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ জানান, করোনার মধ্যে কাশিয়ানী উপজেলায় এ পর্যন্ত ৫শ’ টি শিশু জম্ম গ্রহণ করেছে। করোনা মহামারীর মধ্যে এসব শিশুকে অপুষ্টির হাত থেকে রক্ষা করতে ও তাদের সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে শিশুদের বাড়িতে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন ও পরিষদ। সরকারি বরাদ্দকৃত ১ লাখ ৮ হাজার টাকার সাথে উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তাদের প্রতি মাসের বেতনের একটি অংশের দান করা টাকায় শিশুর বাড়িতে হরলিকস, চাল, ডাল, লবন, তেল, ফল, সবজি ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
এসব খাবার খেয়ে প্রসূতি মা পুষ্টি পাচ্ছেন। শিশুরা মায়ের বুকের পর্যাপ্ত দুধ পেয়ে সুন্দরভাবে বেড়ে উঠছে। তারা এ মহামারীর মধ্যে অপুষ্টির হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে। সুবিধা বঞ্চিত পরিবারের প্রসূতি মাকে এ পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। করোনা মহামারীর মধ্যে যত শিশু জম্ম নেবে, প্রতিটি শিশুর মা এ সুবিধ পাবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছে।
তিনি আরো জানান, মা ও শিশুর চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য পরিবার পরিকল্পনা বিভাগকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রসূতি মায়ের কাছে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মোবাইল নম্বর দেয়া হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান সুব্রত ঠাকুর হিল্টু জানান, এ সময়ে জম্ম নেয়া শিশুদের আত্মীয়-স্বজনরা তাদের দেখতে আসতে পারছেন না। এ অবস্থায় তারা নবজাতকের বাড়িতে যাচ্ছেন। পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন। এতে সুবিধা বঞ্চিত পরিবারের মা ও শিশু উপকৃত হচ্ছে।
কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ কাইয়ূম তালুকদার বলেন, ‘প্রসূতি মা সুস্থ থাকলে শিশুও সুস্থ থাকবে। এ ধারণা থেকে এ উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়েছে। করোনা মহামারীর মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগ সুবিধা বঞ্চিত পরিবারের মা ও শিশুকে অপুষ্টির হাত থেকে রক্ষা করবে। ভবিষ্যৎ প্রজম্ম সুন্দরভাবে বেড়ে উঠবে। সুস্থ সবল জাঁতি গঠনে এটি ভূমিকা রাখবে।
কাশিয়ানী উপজেলার সাজাইল গ্রামের প্রসূতি লিমা বেগম, পারুলিয়া গ্রামের লাকী বেগম ও শিফা বেগম বলেন, করোনার মধ্যে আমাদের সন্তানরা জম্ম গ্রহন করেছে। তাদের মামা বাড়ির থেকে কেউ তাদের দেখতে আসতে পারেনি। উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও সহ অন্যন্যরা আমাদের বাড়িতে এসেছেন। আমাদের সন্তানদের দেখেছেন। এ ছাড়া তারা আমাদের জন্য উন্নতমানের খাবার নিয়ে আসছেন। এ খাবার খেয়ে আমরা সুস্থ আছি। সন্তানরা বেশি বেশি বুকের দুধ পাচ্ছে। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে ফোন দিলেই তারা আমাদের চিকিৎসা ও পরামর্শ দিচ্ছে। আপতত আমাদের কোন রোগবালাই নেই। আমরা সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খুবই ভাল আছি। উপজেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।