ঝালকাঠির রাজাপুরের এক ওষুধ ব্যবসায়ীকে কুক দেয়া ও পূর্ব বিরোধের জের ধরে ওষুধ বিক্রেতা ও স্বজনদের দু’গ্রুপের মধ্যে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। শুক্রবার রাতে রাজাপুর থানায় এ মামলাগুলো রেকর্ড করা হয়। পুলিশ এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হল- ইসলামীয়া ফামের্সির মালিক আহসান হাবিব সোহাগের দায়ের করা মামলায় সদরের মহিলা কলেজ এলাকার বাসিন্দা আনিচ কাজির ছেলে রাজাপুর সরকারি কলেজের ছাত্র নায়েব কাজি (১৯) কে গ্রেফতার করা হয়। এ মামলায় ডেইলি স্টারের জেলা প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম জুয়েলকে প্রধানসহ মোট ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। অপরদিকে আফজাল মেডিকেল হলের মালিক আফজালের দায়ের করা মামলায় চর রাজাপুর এলাকার আবুল বাসারের ছেলে রাহাত (২২) ও কৈবর্তখালি গ্রামের জয়নাল ফরাজির ছেলে তাওহীদ (২২) কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ মামলায় ইসলামীয়া ফামের্সির মালিক আহসান হাবিব সোহাগকে প্রধানসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। অপরদিকে ডেইলি স্টারের জেলা প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম জুয়েলের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ইসলামীয়া ফামের্সির মালিক আহসান হাবিব সোহাগকে প্রধানসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এ মামলায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। আফজাল মেডিকেল হলের মালিক আফজাল অভিযোগ করে জানান, ওষুধ বিক্রির ব্যবসায়ীক দ্বন্দে¦র জেরে আফজাল মেডিকেল হলের মালিক আফজালকে দেখলেই ইসলামীয়া ফার্মেসির কয়েক কর্মচারী বিভিন্ন স্থানে বসে কুক দিয়ে উত্ত্যক্ত এবং অকথ্য ভাষায় গালমমন্দ করতো। এ ঘটনা আফজালের ছেলে ইসলামীয়া ফার্মেসির কর্মচারিদেরকে জিজ্ঞাস করতে গেলে এ নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় অপুকে রক্ষা করতে এসে তার কয়েক বন্ধুসহ উভয় পক্ষের কয়েক জন আহত হয় এবং ইসলামীয়া ফার্মেসির লোকজন নায়েবকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। অপর আহত অপু রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে যায়। ডেইলি স্টারের জেলা প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম জুয়েল অভিযোগ করে জানান, ইসলামিয়া ফার্মেসি ও সোহাগ কিøনিকের পরিচালক সোহাগের নির্দেশে তার লোকজন জুয়েলের ভাগ্নে বিকেএসপির বকসিং খেলোয়ার তানভীর অপুকে ইসলামিয়া ফার্মেসির সামনে বসে আটকিয়ে হামলার চালিয়ে আহত করে। সে রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নিচ্ছে এমন খবর পেয়ে বরিশাল থেকে দুপুরের পরে রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান জুয়েল। এ সময় সোহাগের নির্দেশে তার লোকজন জুয়েলের উপর হামলা চালিয়ে আহত করে। এছাড়াও পূর্বে সোহাগ ক্লিনিকের অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে ডেইলি স্টারে সংবাদ করায় পূর্ব থেকে তার উপরে ক্ষিপ্ত ছিল এবং হত্যার হুমকিসহ বিভিন্নভাবে হেয় ও হয়রানি করার চেষ্টা চালাচ্ছিল। এসব ঘটনার জের ধরেই তার উপরে হামলা চালিয়ে হাতের আঙুল ভেঙে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বর্তমানে তিনি রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। এসব বিষয়ে ইসলামিয়া ফার্মেসি ও সোহাগ ক্লিনিক পরিচালক আহসান হাবিব সোহাগ অভিযোগ করে বলেন, কয়েক দিন আগে সোহাগ ফার্মেসী কর্তৃক ঔষধের মুল্য কম রাখার ঘোষনা দিলে অন্য ফার্মেসীর লোকজন তার বিপক্ষে অবস্থান নেয় এবং পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আবজাল ফার্মেসির লোকজন তার ফার্মেসিতে হামলা চালিয়ে কামরুল, হামীম ও রবিউল হাসানকে আহত করে। আহতদের মধ্যে রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নেয় এবং সোহাগ ফার্মেসীর কর্মী রুহুল আমিন তাদের সাথে যায়। এ সময় ডেইলি স্টারের জুয়েল ও তার দলবল অতর্কিতভাবে রুহুল আমিনের উপর হামলা চালায়। রাজাপুর থানার ওসি জাহিদ হোসেন জানান, এ ঘটনায় পৃথক ৩টি মামলা হয়েছে। ২টি মামলায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামীদেরও গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।