লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে করোনা সংক্রমণ ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি উপেক্ষা করে লঞ্চ ও ট্রলারে চারগুণের বেশি যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে কয়েকদিন ধরে একটি সি-ট্রাকসহ দুটি লঞ্চ লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল নৌরুটে চলাচল শুরু করে। তবে প্রশাসনের তদারকি না থাকায় নিষিদ্ধ অসংখ্য নৌকা ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে অতিরিক্ত যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।
সোমবার দুপুরে মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, একটি সি-ট্রাক ও এমভি দোয়েল পাখিলঞ্চ -১ ও এমভি পারিজাত লঞ্চে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। লঞ্চ ও সি-ট্রাক ঘাটে আসামাত্রই হুড়োহুড়ি করে গা ঘেঁষেই লঞ্চে উঠছেন যাত্রীরা। লঞ্চের ছাদে পর্যন্ত যাত্রীবোঝাই করে পারাপার করা হচ্ছে। আবার অনেকে লঞ্চে যেতে না পেরে ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে যাচ্ছেন।
এমভি পারিজাত লঞ্চের মাস্টার নজরুল ইসলাম জানান, গাদাগাদি করে নৌকায় যাত্রী পারাপারে করোনাভাইরাস সংক্রমণের মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌবন্দর সহকারী পরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন, লঞ্চগুলোকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহন করতে হবে। কেউ তা না মানলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সদরের ইউএনও সফিকুর রিদোয়ান আরমান শাকিল জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহন করতে হবে।
জানাগেছে,লক্ষ্মীপুর-ভোলা,বরিশাল দক্ষিনাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ এ নৌ-রুটে চলাচল করছে। পর্যাপ্ত ফেরী, সী-ট্রাক ও লঞ্চ না থাকায় এ নৌ-রুটে বর্তমানে কনক চাপা,কিষাণী,কাবেরী তিনটি ফেরী ও এমভি দোয়েল পাখি-১ ও এম,ভি,পারিজাত লঞ্চসহ একটি সি ট্রাক চলাচল করছে হাজার হাজার যাত্রী। অথচ লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুটে ইঞ্জিন চালিত নৌ-যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকা সর্ত্বেও তা মানা হচ্ছে না। প্রতিদিন নৌকায় ও ট্রলারে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে হচ্ছে হাজার হাজার মানুষকে। এতে করে অহরহ ঘটেছে দুর্ঘটনা। ছোট ছোট মাছ ধরার ট্রলারে যাত্রী বহন করার কারণে ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে লক্ষ¥ীপুর-ভোলা নৌ রুট।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাজারো যাত্রী প্রতিদিন ট্রলারে চড়ে লক্ষ্¥ীপুর হয়ে ভোলা ও বরিশাল ও লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার হয়ে-হাতিয়া,গজারিয়া,দৌলদিয়াসহ নৌ রুটে বরিশাল উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিচ্ছেন হাজারো মানুষ। কিন্তু কোন নিষেধাজ্ঞায় মানছেনা তারা। প্রতিটি যাত্রীবাহি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার ও নৌকায় লাইফ জ্যাকেট থাকার নিয়ম রয়েছে বাধ্যতামূলক। কিন্তু বাস্তবে দুই একটি নৌকায় ছাড়া অন্যগুলোতে নেই।সব নৌযান বন্ধ না হওয়ার জন্য নজরদারির অভাবের পাশাপাশি দায়ী করা হচ্ছে প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত নৌযানের অভাবকে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন যাত্রী ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
তবে বিআইডাব্লিউটিএর কর্মকর্তা বলছেন, ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর ৭ মাস পর্যন্ত এ নৌ-রুটে সকল ধরনের ইঞ্জিন চালিত নৌকা বা ট্রলার চলাচল নিষিদ্ধ রয়েছে। এসময়ে যেন নৌ-যান চলাচল করতে না পারে এবং যাত্রীদের নিরাপত্তার বিঘœ ঘটে এমন কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীরর হাট লঞ্চ ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে একটি সি ট্রাক ও এমভি দোয়েল পাখিলঞ্চ -১ ও এম,ভি,পারিজাত লঞ্চটি যাত্রী আনা নেয়ায় উপচেপড়া ভীড়। এমভি দোয়েল পাখি-১ লঞ্চ ভোলা থেকে যাত্রী নিয়ে লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চঘাটে পৌঁছলেও চারগুণ যাত্রি নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি জবাবদিহিতার ভয়ে এম,ভি,পারিজাত লঞ্চটি ভোলা-বরিশাল থেকে এসে লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চঘাটের ২ কিলোমিটার আগেই যাত্রীদের না পৌঁেছই তুলে দিচেছন নৌকায়।অথচ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গেলো ২ মাসের বেশী সময় ধরে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকার পর ৩১ মে থেকে ফের চলাচল শুরু হয়। লঞ্চ চালুর পর থেকে অধিকাংশ রুটেই স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে না। বিশেষ করে ভোলা-লক্ষèীপুর নৌ রুটে স্বাস্থ্য বিধি মানার কোন বালাই নেই। লঞ্চ ও সি ট্রাক ঘাটে আসা মাত্রই হুড়োহুড়ি করে গা ঘেষেই লঞ্চে উঠে। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে লঞ্চের ছাদে পর্যন্ত যাত্রী বোঝাই করে পাড়াপাড় করছে। অনেকে সিট না পেয়ে লঞ্চের বারান্দায় দাঁড়িয়ে পর্যন্ত গন্তব্যে যাচ্ছে। আবার অনেকে লঞ্চে যেতে না পেরে চরম ঝুঁকি নিয়ে ট্রলাওে পর্যন্ত যাত্রী পারাপার করছে। ফেরিতে যানবাহনের চাপ ছিল অত্যধিক।
চলাচলে যাত্রীরা জানান, কিছুই করার নাই তাদের। প্রশাসনের তদারকি না থাকায় তারা প্ররিস্থিতি বাধ্য হয়েই বরিশাল থেকে লঞ্চে এসেও লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীরর হাট পৌছঁতে ২ কিলোমিটারের জন্য গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা এমনকি দূুর্ঘটনাসহ করোনা স্বাস্থ্যবিধি ঝুঁকি নিয়ে গাঁধাগাধি করে যাতায়েত করতে হচেছ নৌকায়।
অপরদিকে যাত্রীদের এমন অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে লঞ্চের মাষ্টারা বলছেন,নৌকায় চলাচলে স্বাস্থ্য বিধি মানার কোন বালাই নেই।
এছাড়া লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুটে যাত্রীদের জনস্রােত স্বাস্থ্য ও দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে উপেক্ষা করে চারগুণ যাত্রি নিয়ে লঞ্চ ও নৌকায় পারাপার করা হচ্ছে হাজার হাজার যাত্রী। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শর্ত স্বাপেক্ষে কয়েকদিন ধরে একটি সি ট্রাকসহ দুটি লঞ্চ লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল নৌ-রুটে চলাচল শুরু করে। প্রশাসনের তদারকি না থাকায় যাত্রী বহনের প্রতিযোগীতায় কাঠের তৈরি নৌকাসহ রয়েছে লঞ্চও। এতে করে নদীতে ডুবে যাওয়াসহ লঞ্চে উঠতে দুর্ঘটনার ঝুঁিকও।