লক্ষ্মীপুরে স্কুল ছাত্রী হিরা মনিকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার বিচার দাবীতে মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। শনিবার দুপুরে স্থানীয় পালের হাট বাজারে আধা ঘন্টা সময়জুড়ে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে পালেহাট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাক্তর ছাত্র-ছাত্রী ফোরাম ও অল ইয়ুথ সোসাইটি নামের সংগঠন। সংগঠন ছাত্র-ছাত্রী ফোরামের দাবী যে কোন সময় দ্রুুত আসামি গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আর দিনে বেলায় ঘটনা ধষর্ণেও পর শ্বাসরোধে ১৪ বছরের নবম শ্রেণির স্কুল ছাত্রী হত্যার ঘটনা একদিন অতিবাহিতসহ মামলার পরও অভিযুক্ত আটক হয়নি। এটা দু:খজনক। খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তারসহ সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন থেকে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ফোরাম ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
এদিকে শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান। এ সময় নিহতের স্বজনসহ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ সময় খুব শীঘ্রই ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ জড়িতদের গ্রেফতারের বিষয়ে তাদের আশ্বস্ত করেন জেলার পুলিশ প্রধান।
এসময় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা নেয়া হয়েছে। সন্দেহ জনকভাবে দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উৎঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।
পুলিশ জানান,আটকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার বিকালে সদর উপজেলার দক্ষিন হামছাদী ইউনিয়নের নন্দনপুর গ্রামে স্থানীয় মো. হারুনুর রশিদের মেয়ে ও পালের হাট উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী হিরা মনিকে ঘরে একা পেয়ে দূর্বৃত্তরা ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়। শনিবার সকালে হিরা মনির মা ফাতেমা বেগম লাকী বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় নিদ্দিষ্ট করে কোন আসামি করা হয়নি। তবে এ ঘটনায় রাতেই আরিফ ও সুমন নামের দুজনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে নিহতের মা মামলার বাদী মা ফাতেমা বেগম জানান, বছর খানেক আগে হিরা মনিকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে পাশবর্তী এলাকার অয়ন নামের একটি ছেলে উত্তক্ত করে। বিষয়টি জানতে পেরে অয়নকে ডেকে এনে সতর্ক করেন হিরা মনির মা। বেশ কিছু দিন ধরে তাদের পাশ্ববর্তী বাড়ীর আটককৃত সুমন নামের এক যুবকের কাছে আসা-যাওয়া করছিলেন অয়ন। হত্যাকারীর দ্রুত গ্রেপ্তার হোক হত্যার বিচার দাবী করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে নিহতের মা।
নিহতের স্বজনরা জানান, হিরা মনি শুক্রবার সকালে একই গ্রামের তার নানা বাড়ী থেকে আজিম উদ্দিন পাটোয়ারী নিজ বাড়ীতে আসেন। তার বাবা হারুনুর রশিদ ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ জনিত অবস্থায় ঢাকা হাসপাতালে ভর্তি থাকায় মাসহ সবাই ঢাকায় অবস্থান করছেন। অসুস্থ বাবাকে দেখতে ঢাকায় যাওয়ার জন্য জামা কাপড় নিতে বাড়ীতে আসলে দুপুরে ওই বাড়ীতে ঘরের ভিতরের একা পেয়ে দূর্বৃত্তরা তাকে ধর্ষণ করে হত্যা করে। পরে দুপুরের খাবার খেতে নানার বাড়ীতে না যাওয়ায় তার নানী ওই বাড়ীতে এসে তাকে বিবস্ত্র অবস্থায় মৃত পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তার চিৎকারে আশে পাশের লোকজন এসে পুলিশে খবর দেয়। পরে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
স্থানীয়রা জানান,কয়েকদিন আগে হিরামনি‘কে তার নানার বাড়িতে রেখে ক্যান্সার আক্রান্ত অসুস্থ বাবাকে চিকিৎসার জন্য তার মা ঢাকায় নিয়ে যান। শনিবার সকালে হিরা মনি ঢাকার যাওয়ার কথা ছিলো। শুক্রবার বিকেলে নিজ ঘরের ভেতরে দুর্বৃত্তরা তাকে একা পেয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
সদর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (তদন্ত) মোসলেহ উদ্দিন বলছেন,স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে।দ্রুত গ্রেপ্তার হবে হত্যাকারী। উৎঘাটন হবে হত্যার রহস্য।