সেবার উদার মানসিকতা দেখিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছেন নাসিরনগরের মার্জান ইসলাম (২৬)। স্থাপন করেছেন মানবসেবার উজ্জল দৃষ্টান্ত। নাসিরনগর সদরের গাংকুল পাড়ার নজরূল ইসলামের ছেলে মার্জান। তিনি নিজের বাড়ি পুলিশ সদস্যদের আইসোলেশনের জন্য বিনা ভাড়ায় প্রদান করেছেন। বেসরকারি ইষ্ট ওয়েষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজী সাহিত্যে ¯œাতক পাস করা মার্জান এমন মহত কাজের দ্বারা প্রমাণ করলেন-‘মানুষ মানুষের জন্য।’ স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের আইসোলেশনে থাকার জন্য নাসিরনগর সদরে কোন বাসা পাওয়া যাচ্ছিল না। দেশের দূর্যোগের কথা ভেবে পুলিশ সদস্যদের সেবায় এগিয়ে আসলেন মার্জান। থানা সংলগ্ন গাংকুল পাড়ায় মার্জানদের চারতলা বাড়ি। ওই বাড়ির তৃতীয় তলায় ৮টি কক্ষ বিশিষ্ট ইউনিটটি কোন ভাড়া ছাড়াই পুলিশ সদস্যদের আইসোলেশনের জন্য দিয়ে দিলেন মার্জান। পলিশ সূত্র জানায়, গত ২৮ মে করোনা পরীক্ষার জন্য নাসিরনগর থানার অর্ধশতাধিক পুলিশ সদস্য নমুনা দিয়েছেন। ৩ জুন আরো ৭ জন পুলিশ সদস্যের করোনা পজেটিভ আসে। আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের থানা কমপ্লেক্সে থাকা অন্যদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। থানা কর্তৃপক্ষ সদরের কোথাও বাসা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এক পর্যায়ে মার্জানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন থানা কর্তৃপক্ষ। বৈশ্বিক এ মহামারির সময়ে করোনায় আক্রান্ত রোগীর কথা শুনলে যে কেউই যখন চমকে ওঠেন। ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে পড়েন। সেই দু:সময়ে ভয় ভীতি কাবু করতে পারেনি মার্জানকে। মানুষের উপকারে বীরদর্পে এগিয়ে আসেন মার্জান। মার্জান নিজে থেকে পুলিশ সদস্যদের বিনা ভাড়ায় তার বাসা দিতে এগিয়ে আসেন। মার্জানদের চারতলা বাড়িটির নীচ ও দ্বিতীয় তলায় উপজেলা সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের অস্থায়ী কার্যালয়। আর চতুর্থ তলায় যুবক মার্জান পরিবার নিয়ে নিজেই থাকেন। তাই তিন তলার ৮টি কক্ষ পুলিশ সদস্যদের আইসোলেশন হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে। মার্জান বলেন, যতদিন করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব থাকবে ততদিন আমার এই বাড়িটি করোনায় আক্রান্ত মানুষের জন্য উম্মুক্ত থাকবে। নাসিরনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজেদুর রহমান বলেন, মার্জানের দেওয়া ওই বাড়িটিতে করোনায় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যরা আইসোলেশনে আছেন। তিনি নিজেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন। যতটুকু সম্ভব সেখানে অবস্থানরত লোকদের দেখা শুনা করছেন। আমরা মার্জানের কাছে কৃতজ্ঞ।