করোনার সংক্রমণের দিক থেকে ‘গ্রীন সিটি’ খ্যাত রাজশাহী মহানগরী ইতিমধ্যেই রেড জোনে ঢুকে পড়েছে। তবে এখনই আসছে না লকডাউন। কারণ লকডাউন ও রেড জোন ঘোষনার ক্ষেত্রে শর্ত অনেকটাই আলাদা। এদিকে স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে প্রেরিত গত ২৪ ঘন্টার (২৪ জুন পর্যন্ত) প্রতিবেদন মতে, রাজশাহী জেলা ও মহানগরীতে ৩২৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৯ জনই আছে রাজশাহী মহানগরীতে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক বুধবার (২৪ জুন) দুপুরে বলেন, রাজশাহী মহানগরীতে প্রায় ৮ লাখ মানুষ বসবাস করেন। রেড জোনের শর্ত অনুযায়ী প্রতি লাখ মানুষের ভেতর ১০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলে সেই এলাকা রেড জোনে পড়বে। বিগত ১৪ দিনের তথ্য অনুসারে রাজশাহী মহানগর এখন রেড জোনে রয়েছে। আর জেলার চারঘাট, বাঘা, তানোর, পবা ও মোহনপুর উপজেলা পড়ছে রেড জোনে। অন্য উপজেলাগুলো রেড, ইয়েলো ও গ্রীন জোনের মধ্যে উঠানামা করছে। তবে বেশিরভাগ সময়ই থাকছে ইয়েলো জোনে। তবে রাজশাহীর কোথাও এখনই লকডাউন ঘোষণা করা হচ্ছে না।
সিভিল সার্জন বলেন, রেড জোন ঘোষণার শর্ত এক আবার লকডাউন ঘোষণার শর্ত আরেক। লকডাউন ঘোষণা করতে হলে বিবেচনা করতে হবে রোগীরা কোথায় আছেন, কোন পাড়া-মহল্লায় কতজন রোগী- এ রকম নানা বিষয় বিবেচনা করতে হয়। দেখা যাচ্ছে, কোন উপজেলায় ১৫ জন রোগী। কিন্তু তিনটি বাড়িতেই ১২ জন। তাহলে তিনটি বাড়ির জন্য গোটা এলাকা বা উপজেলা লকডাউনের প্রয়োজন হবে না।
কারণ, ওই তিনটি বাড়িই তো লকডাউন আছে। একইভাবে রাজশাহী শহরের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ রোগী আছেন হাসপাতালে। কিছু কিছু রোগী বাড়িতে আছেন। তাদের বাড়িগুলোই লকডাউন অবস্থায় আছে। তাই গোটা শহর লকডাউনের প্রয়োজন নেই। কিন্তু ল্যাবে করোনা শনাক্তের পর রোগীর যে মোবাইল নম্বর দেয়া হচ্ছে তাতে কিছু কিছু ব্যক্তিকে পাওয়া যাচ্ছে না। নম্বরটি বন্ধ দেখাচ্ছে। ফলে ওই রোগীর বাড়ি লকডাউন করা যাচ্ছে না। এ রকম চলতে থাকলে বিপদ। যদি বেশি সংখ্যক রোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করা না যায় তাহলে লকডাউনের বিকল্প নেই। তাই নমুনা সংগ্রহের সময়ই রোগীর পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা নিতে হবে।
সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজশাহী জেলা ও মহানগরে ৩২৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৯ জনই আছে রাজশাহী সিটিতে। এর বাইরে জেলার পুঠিয়ায় ১২, দুর্গাপুরে ৭, বাগমারায় ১৩, তানোরে ১৭, গোদাগাড়ীতে ২, বাঘা ও চারঘাটে ১৫ জন করে এবং পবা ও মোহনপুরে ২৩ জন করে শনাক্ত হয়েছেন। রাজশাহী জেলা ও মহানগরে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৬৫ জন। মারা গেছেন ৬ জন। আর করোনার সঙ্গে লড়াই করছেন ২৫৫ জন।