টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের ভুল সাট ডাউনের কারণে মাস্টাররোলে চাকুরী করা শ্রমিক খন্দকার হায়দার আলী (৪৫) ৮দিন মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা উত্তরা ১১নং সেক্টরে আল-আশরাফ প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে গেছে। সে পোড়াবাড়ী গ্রামের খন্দকার সোহরাব আলীর ছেলে। হায়দর আলী বর্তমানে টেপিকুশারিয়া শ্বশুর বাড়ীতে বসবাস করতেন।শুক্রবার সকাল১০টায় তার লাশ সন্ধানপুর ই্উনিয়নের টেপিকুশারিয়া গ্রামে দাফন করা হয়। গত মাসের ২৪/০৬/২০২০ তারিখে তাকে ঢাকার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
এলাকার সরেজমিনে গেলে ঐ ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আঃ বাছেদ, গৌরিশ্বর গ্রামের জিন্নত আলী, আঃ হালিম, বাদশা মিয়া, আক্তার হোসেন ও প্রত্যক্ষদর্শী হায়দর আলী ও আবু সাইদ জানায় ঘটনার দিন রাত ৯ টা পর্যন্ত শ্রমিক হায়দর আলী তার ঘরেই শোয়া ছিল। ঐদিন এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকার ফলে অফিস থেকে মোবাইলে ডেকে হায়দার আলীকে লাইন মেরামতের দায়িত্ব দেয়। প্রত্যক্ষদর্শী হায়দর আলী আরো জানায় এ নিয়ে তাদের মধ্যে অফিসের সাথে একাধিকবার কথাও হয়। পরে আনুমানিক ১০.০০ ঘটিকার সময় হায়দার আলী ১১ হাজার লাইনে কাজ করতে যায়। কিছুক্ষন পর কোন প্রকার যোগাযোগ ছাড়াই অফিস থেকে লাইনে সংযোগ দেয় যার ফলে সট করে প্রায় ২৫ ফুট উপর থেকে মাটিতে ফেলে দেয়। তার গায়ে আগুন লেগে প্রায় ৮০ ভাগ পুড়ে যায়। পরে এলাকাবাসী প্রথমে ঘাটাইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা উত্তরা ১১নং সেক্টরের আল-আশরাফ প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরদিন তার মাথা ও মুখ অপারেশন করে আইসিসিতে রাখা হয়। এলাকাবাসীর অনেকের অভিযোগ অফিস ইচ্ছে করেই হায়দার আলীকে মারার জন্য এমন বেইআইনী কাজ করেছে।
ঐদিন ডিউটিরত লাইনম্যান খলিলুর রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার শরীর অসুস্থ থাকায় আমি ঐদিন অফিসে ছিলাম না। পরে লাইম্যানের সাহায্যকারী আবু ইউসুফের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন এসব বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
এসব বিষয়ে ঘাটাইল বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরন বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মিলন আকন্দের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন যাদের ঐদিন ডিউটি ছিল তারাই ভাল বলতে পারবে তবে এটা একটা দুর্ঘটনা।
সর্বশেষ ঘাটাইল বিদ্যুৎ বিক্রয় বিতরন ও বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম খানের নিকট ডিউটি রোস্টার ও শার্টডাউনের খাতা দেখতে চাইলে তিনি অনিয়মের পক্ষে সাফাই গেয়ে খাতা না দেখিয়ে বলেন, হয়তোবা পল্লী বিদ্যুৎ এর সাথে গ্রাহকের লাইন সংযোগের কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে কাজের স্বার্থে আমাদের অনেক কিছুই করতে হয়।