চোখ গড়িয়ে জল পড়ছিল, ক্ষনেই মুর্ছা যাচ্ছিলেন। স্বজনেরা বুকে জড়িয়ে সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করছেন। স্বজনেরাও কান্না ধরে রাখতে পারেননি। ছেলেকে হত্যা করায় মা ফজলুত বেগমের বুকফাটা আহাজারি ও অশ্রুসজল কান্না থামছেনা। তার দু-চোখের পানি অঝরে ঝরছে। নিহতের স্ত্রী আছমা বেগম ও তাদের দু- শিশু সন্তান কাঁদছে। শোকে কাতর পরিবারটি। কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার জামালকান্দি গ্রামের আশু মিয়া বেপারীর একমাত্র ছেলে ফারুক মিয়াকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে ঐ এলাকার দূর্বৃত্তরা।
জানা যায় ফারুক চার বোনের এক ভাই। ফারুক মুহুরীর কাজ করতো। কষ্ট করে সংসার চালাতো। এলাকায় মতবিরোধ থাকায় হত্যার স্বীকার হন ফারুক। অভাবী সংসারে নিহত ফারুকের ঘরে ৭ বছর ও ৫ বছরের দুই শিশু পুত্র সন্তান রয়েছে। হত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দাউদকান্দি মডেল থানায় মামলা করেছে পরিবার। নিহতের মা ফজলুত বেগম অশ্রুসজল চোখে বলেন আমাদের অভাবের সংসার, আয় রোজগার এখন কে করবে। কি থেকে কি হয়ে গেল। কিছুই ভেবে পারছিনা। এখন কি নিয়ে বাঁচবো বুঝতে পারছিনা। ছেলেকে হারিয়ে মা ফজলুত বেগম মানসিক ভাবে দিশেহারা। তাদের ঘিরে অন্য স্বজনেরাও কাঁদছে।
মামলার বাদী ও নিহতের পিতা আশু মিয়া বেপারী জানায় আসামিরা বেপরোয়া ও দুষ্টু প্রকৃতির লোক। তাদের অন্যায় ও অপকর্মের প্রতিবাদ করায় আমার ছেলেকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। নিহত ফারুকের স্ত্রী আসমা বেগম জানায় কিভাবে চলবো, কিভাবে খাবো। দু শিশু সন্তানকে কেমনে চালাবো। আমার সব কিছু শেষ হয়ে গেল। জীবন এখন হুমকির মুখে। তার দু-চোখের পানি অঝরে ঝরছে। স্বামীকে হারিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও দিশেহারা স্ত্রী আসমা বেগম। কান্নায় কথা বলতে পারছিলনা তবুও স্ত্রী আসমা বললো স্বামী হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তি চাই, বিচার চাই।
মামলার বিবরণে জানা জানা যায় সম্প্রতি বাড়ীতে আসার পথে দাউদকান্দি মডেল থানাধীন সোনাকান্দা ও খৈয়াখালীর মধ্যখানে ব্রীজ সংলগ্ন রাস্তার উপর পৌছলে পূর্বে মতবিরোধ থাকায় একই এলাকার মৃত নিজাম মিয়ার ছেলে তারেক জুনায়েদ জনি (৩০), জসিম হাসানের ছেলে সায়মান রিয়াদ জয় (২৬), জিহানুল হক জিদান (২৪), শুভ মিয়া, জিলানী (৪৮), মশিউর রহমান বাশি (৩৮), গরিব নেওয়াজ (৫৫) এজাহার ভূক্ত ১৪ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪-৫ জন ধারালো অস্ত্র দ্বারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে ও পিটিয়ে ফারুক মিয়াকে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। জখমীকে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ফারুক মারা যায়। এ বিষয়ে দাউদকান্দি মডেল থানায় ফারুক হত্যা মামলা করা হয়েছে। প্রথমে স্ত্রী আসমা বেগম অভিযোগ দাখিল করেন ও পরে নিহতের পিতা আশু মিয়া বেপারী ১৪ জনকে আসামি করে গং সহ হত্যা মামলা দাখিল করেন।