টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে বোরো মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ বছর দেলদুয়ার উপজেলায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১ হাজার ৬৪২ মেট্রিক টন। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র ৫ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করেছেন দেলদুয়া খাদ্য গুদাম। কারণ হিসেবে জানা গেছে স্থানীয়ভাবে লটারীর মাধ্যমে বাছাইকরা কৃষকরা খাদ্য গুদামে সরকারের নির্ধারিত মূল্য ২৬ টাকা কেজি দরে ধান সরবরাহে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। খাদ্য বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তারা বার বার অনুরোধ করা স্বত্যেও কেওই ধান নিয়ে খাদ্যগুদামে আসছেন না। ফলে চলতি মৌসুমে বোরো সংগ্রহে এ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। উপজেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায় লটারীর মাধ্যমে কৃষক নির্বাচিত করে ১২ মে থেকে ধান সংগ্রহ শুরু হচ্ছে। যা ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলমান থাকবে। তথ্যমতে এই উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১হাজার ৬৪২ মেট্টিক টন বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বেধে দিয়েছে সরকার। লটারীর মাধ্যমে বাছাই করা ১৬৪২ জন কৃষক প্রত্যেকেই ১ মেট্টিক টন করে ধান সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রতি কেজি ২৬ টাকা হিসেবে ১০৪০ টাকা মণ দরে দাম পাবেন কৃষক। কিন্তু ধানের বর্তমান স্থানীয় বাজার মূল্য ১হাজার টাকার উপরে। এজন্য স্থানীয় কৃষকরা খাদ্য গুদামে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান সরবরাহে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তাছাড়া খোলা বাজারে চালের মূল্য বেরে যাওয়ায় চড়া দাম দিয়ে স্থানীয় বাজার থেকে ধান ক্রয় করছে চাতাল মালিকরা। এ কারণে বেড়ে গেছে ধানের দাম। সরকারী মূল্যেই কৃষকরা খোলা বাজারে শর্তহীন ভাবে ধান বিক্রি করতে পাড়ছেন। তাই খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি না করে খোলা বাজারে বিক্রি করছে তারা।
সরকারী তালিকাভূক্ত কৃষক মোঃ শরিফুল ইসলাম জানান, শর্তবিহীন স্থানীয় বাজারেই ১ হাজার টাকার উপরে ধান বিক্রি হচ্ছে। খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করতে গেলে কিছু শর্ত মানা বাধ্যতামূলক।
স্থানীয় ধান ব্যবসায়ী মোঃ শাহাদত হোসেন জানান, চালের দাম বেশি বলে চাতাল মালিকরা চড়া দামে স্থানীয় বাজার থেকে ধান ক্রয় করছে। স্থানীয় বাজারগুলোয় ধান বিক্রি হচ্ছে হাজার টাকার উপরে।
উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি এলএসডি) বিথী খাতুন জানান, এ বছর দেলদুয়ার উপজেলায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১ হাজার ৬৪২ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত মাত্র ৫ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা গেছে। তালিকাভূক্ত কৃষকদের বার বার আহব্বান করা স্বত্যেও তারা সারা দিচ্ছেন না। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন দেলদুয়ার উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তাছাড়া এই উপজেলায় উৎপাদিত ধানের মান ভাল। খোলা বাজারেই কৃষকরা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন। তাই হয়তো তারা খাদ্য গুদামে ধান বিক্রিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।