স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও স্বীকৃতি পায়নি একসাথে ৫ জন স্বজন হারানো মুক্তিযোদ্ধার পরিবারটি। স্বজন হারানো আর বোমার স্পিলিন্টারের আঘাত আজও মনে করিয়ে দেন সেদিনের সেই ভয়াবহ দিনের কথা। এত বছর পেরিয়ে গেলেও আজও স্বীকৃতি মেলেনি তাদের। ভাতা বা সুযোগ সুবিধা নয়, পরিবারটি শুধু চায় সম্মান। এভাবেই সেদিনের সেই ভয়াবহ দিনের কথার বর্ননা দিচ্ছিলেন উপজেলার গিলাবাড়ীয়া গ্রামের চায়না খাতুন। কথা বলতে গিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি।
সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল বারী বলেন, সেদিন ১৯৭১’র ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখ দুপুর। গিলাবাড়ীয়া গ্রামের মোকছেদুর রহমান স্ত্রী ও ৩ সন্তান নিয়ে বসে ছিলেন বাড়ীর উঠানে। পাকিস্থানি বিমান বাহিনীর একটি বিমান তাদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় মোকছেদুর রহমানের দেহ। আহত হয়ে কিছুক্ষন পর মারা যায় স্ত্রী ছকিনা খাতুন মেয়ে রানু খাতুন, ২ ছেলে তোতা মিয়া ও পাতা মিয়া। আহত হয় ছোট মেয়ে চায়না খাতুন। ভাগ্যক্রমে বাড়ীর বাইরে অবস্থান করায় বেঁচে যান ছেলে মিজানুর রহমান। পরিবারের ৫ সদস্যকে হারিয়ে বোন চায়না খাতুন ও মিজানুর রহমান হয়ে পড়েন অসহায়। সেসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের জন্য ২ হাজার টাকা অনুদান দেন। গ্রামবাসীর সহযোগিতায় চলে তাদের সংসার। মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য দেওয়া ও নানা ভাবে সহযোগিতা করায় এ হামলা বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা।নিহত মোকছেদুর রহমানের নাতি ছেলে শাহিনুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার এতগুলো বছর পার হলেও আজও স্বীকৃতি মেলেনি তাদের। ভাতা বা সুযোগ সুবিধা নয়, পরিবারটি শুধু চায় সম্মান।
সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিদ্দিক আহমেদ বলেন, স্বাধীনতায় ওই পরিবারের অবদান ছিল। স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য তারা। রানিং মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় এন্টি করে তাদের সরকারের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা পওয়ার দাবি জানান।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ বদরুদ্দোজা শুভ জানান, নতুন ভাবে তালিকাভুক্ত করার কোন চিঠিপত্র আমাদের কাছে আসেনি। এ ধরনের কিছু আসলে অবশ্যই যথাযত কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো এবং যাচাই বাচাই সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
এ ব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টিতে স্বজন হারানো পরিবারটি মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি পাবে এমনটি আশা করেন এলাকাবাসী।