কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর ও নিকলী হাওড় বেষ্টিত উপজেলার নদীর পাড়ের মানুষেরা গত কয়েক দিন ধরে সিলেট হতে নেমে আসা ঢলের কারণে বিপাকে পড়ে আছেন। ঘোড়াউত্রা নদীর পানি গত দুই দিনে ২-৩ ফুট পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে নদী ভাঙ্গণে কবলিত হয়েছে প্রায় কয়েকশ পরিবার। সোমবার সকালে বাজিতপুর উপজেলার দিঘীরপাড়, কৈলাগ, মাইজচর, হুমাইপুর ও নিকলী উপজেলার ছাতিরচর, সিংপুর, দামপাড়ার একটি অংশ নদী বেষ্টিত গরীব মানুষেরা একদিকে করোনা ভাইরাস অন্যদিকে নদীর ভাঙ্গণে কবলিত হয়ে দিশেহাড়া হয়ে পড়েছেন। কেও কেও নদীর পাড়ে এপার ওপার নৌকা দিয়ে এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে মানুষদেরকে পারাপারে প্রতিদিন ২০০-৩০০ টাকা রোজগার করে সংসার চালাতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন। তাদের মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছ থেকে ঋণ এনে এখন বেকায়দায় আছেন। এই মধ্যস্বত্বভোগীদের ঋণের দাগিদে কেও কেও আবার গ্রাম ছেরে অন্যত্র চলে গেছেন। এই দুই উপজেলায় গত ২০ বছরে অন্তত নদী বেষ্টিত নি¤œ আয়ের মানুষ নদী ভাঙ্গণে ১০০০-২০০০ লোকজন সবকিছু হারিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন বিভাগীয় অঞ্চলে কেও রিক্সা চালক, কেও আবার তাদের স্ত্রীকে দিয়ে বাসা বাড়ির ঝী এর কাজ করে কোনরকম সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন। আবার কেও কেও এসব শহরে ভিক্ষাবৃত্তি করছেন। নিকলী উপজেলার ঘোড়াউত্রা নদীর পাড়ে অবস্থিত ছাতিরচর ইউনিয়নটি। এই ইউনিয়নেরই ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে ঘোড়াউত্রা নদীর কবলে পড়ে ১ শহ¯্রাধিক গ্রামবাসী বাড়ীঘর হারিয়েছে। উত্তর পাড়ার মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড গ্রাম রক্ষার জন্য কয়েক শত বালির বস্তা দিয়ে গ্রামটিকে রক্ষা করার চেষ্টা চালিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত পানি বাড়ার কারণে গ্রামটি ভেঙ্গে বিলীন হওয়ার পথে চলেছে। এলাকাবাসী জানায়, এই উত্তরপাড়া গ্রামটি গত ২০-২৫ বছর ধরে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে উত্তর পাড়া হতে কিছু কিছু লোক দক্ষিণ পাড়ায় চলে গেছেন। কিন্তু দুই তৃতীয়াংশ গ্রামবাসী বাড়ী-ঘর হারিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কেহ শ্রমিকের কাজ করে পরিবারকে কোন রকম বাচিয়ে রেখেছেন। আবার কেহ কেহ এইসব শহবে ভিক্ষা বৃত্তিও করছেন। এই এলাকার মধ্যে মেহেদী হাসান মুক্তার বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে উত্তর পাড়ায় কিছু জিপির মাটির ব্যাগ দিয়ে ভাঙ্গন রক্ষা করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর পরেও উত্তর পাড়ার ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে উল্লেখ করেন।