বরগুনার পাথরঘাটায় কোষ্টগার্ড ও বন বিভাগ যৌথ অভিযান চালিয়ে চারটি পাইপগানসহ (দেশীয় বন্দুক) দুই জন জলদস্যুকে আটক করেছে। শনিবার (২২/০৭/২০২০) রাত সাড়ে নয়টার দিকে পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের হরিনঘাটা সৃজিত বনের ভিতরে পাঁচ তলা বিশিষ্ট ওয়াচ টাওয়ারের নীচতলা থেকে তাদের আটক করা হয়। এ সময় ৩০ মিনিট ধরে জলদস্যু ও কোষ্টগার্ডের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। জলদস্যুরা হলেন, কালমেঘা ইউনিয়নের ছোটপাথরঘাটা গ্রমের আঃ মন্নান মিয়ার ছেলে রাজু (২৫) ও মোঃ মহসিন মিয়ার ছেলে রিয়াজ (২৩)। পাথরঘাটা কোষ্টগার্ডের ষ্টেশন কমান্ডার লে.মেহেদী হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
কোষ্টগার্ডের ষ্টেশন কমান্ডার লে. মেহেদী হাসান রাত ১১ টায় সংবাদ ব্রিফিং কালে বলেন, সাগরে জেলেদের মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিশেধাজ্ঞা বৃহস্পতিবার শেষ হবে। ভোর রাতে পাথরঘাটায় অবস্থানরত বরগুনা জেলার প্রায় সাড়ে ৩ হাজার জেলে ট্রলার পর্যাক্রমে ইলিশ মাছ ধরার জন্য সমুদ্রে যাত্রা করবে। ওই ট্রলার গুলে সাগর মোহনা থেকে ডাকাতি করার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ৮/১০ জন জলদস্যু হরিণঘাটা বনাঞ্চলের ভিতরে একত্র হয়ে গোপন বৈঠকের পরিকল্পনা করছে মর্মে আমাদের কাছে তথ্য আসে। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়ে রাত নয়টার দিকে ঝূঁকি নিয়ে হরিণঘাটা বনাঞ্চলের ভিতরে প্রবেশ করি। এ সময় কোষ্টগার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে জলদস্যুরা কোষ্টগার্ডকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে। কোষ্টগার্ডও পাল্টা গুলি চালায়। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে গোলাগুলির পর দু’টি পাইপগান ও ৬ রাউন্ড তাজাগুলিসহ দুই জলদস্যুদেরকে আটক করি। পরে কোষ্টগার্ড ও বন কর্মীরা ঘটনা স্থলে তল্লাশী চালিয়ে আরো ২টি পাইপগান ও দু’টি ছোরা (দেশীয় অস্ত্র) উদ্ধার করা হয়। আটক জলদস্যুদের বরাত দিয়ে জানান, তারা পার্শ্ববর্তী তালতলী উপজেলার জলদস্যু রিপন বাহিনীর সদস্য। তারা দলে ৮-১০ জন ছিল। বাকীরা পালিয়ে গেছে।
হরিনঘাটা বন কেন্দ্রের বিট কর্মকর্তা গোলাম কাওসার জানান, ঘটনাটি ঘটেছে আমদের অফিস থেকে ১শ গজ দুরে। পৌনে নয়টার দিকে আমরা গোলাগুলি শব্দ শুনে অস্ত্রসহ বন প্রহরিদের নিয়ে অফিস থেকে বের হই। এ সময় কোষ্টগার্ড আমাদের দেখতে পেয়ে তারা আমাদের সহযোগিতা চাইলে আমরা অস্ত্র নিয়ে তাদের অভিযানে সহযোগিতা করি। ধারনা করা হচ্ছে জলদস্যু রিপন বাহিনী তাঁরা তাদের পাথরঘাটার কিছু সদস্য আগাইয়া নিতে এসে তারা ধরা পড়েছে। সকালে তাদের অস্ত্রসহ থানায় সোপার্দ করা হবে।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাবুদ্দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে বলেন,‘ঘটনাটি আমরা শুনেছি। কোস্টগার্ড আসামীদের থানায় নিয়ে এসেছে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’