বগুড়ার শেরপুরের ছোনকা উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফেরদৌসজামান মুকুল ও প্রধান শিক্ষক এএসএম রাশিদুল হাসানের বিরুদ্ধে ২কোটি টাকা আত্মসাৎ সহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এর প্রেক্ষিতে ২৩ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে সচেতন এলাকাবাসী।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার ছোনকা দ্বি-মুখী উচ্চবিদ্যালয়ের অধীনে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। আর এসব সম্পত্তি ঢাকাণ্ডবগুড়া মহাসড়ক সংলগ্ন ও বাজার থাকায় পজিশন বরাদ্দের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ের অনুকুলে সম্পত্তি থেকে ৫০-৬০ পজিশন(দোকান, শো-রুম, হোটেল- রেস্তরা)সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করার কাজে ব্যবসায়িক পক্ষদের কাছ থেকে বছরে প্রায় দেড় কোটি আসে। চলতি বছরে বিদ্যালয়ের সম্পত্তির অনেকাংশই ঢাকাণ্ডবগুড়া মহাসড়কের বর্ধিতকরণে ৪ লেনের সম্প্রসারণ কাজে প্রায় ১ একর ৩ শতাংশ জমি অধিগ্রহন করে।
ঢাকাণ্ডরংপুর মহাসড়কটি ৪ লেনে উন্নীতকরণে সরকারিভাবে ওই বিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহনের অনুকুলে প্রায় ২কোটি টাকা মুল্য নির্ধারণ করে সড়ক উন্নয়নকল্পে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান(সাসেক)। আর এসব অর্থ বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে ফান্ডে জমা না দেখিয়েই বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফেরদৌসজামান মুকুল ও প্রধান শিক্ষক এএসএম রশিদুল হাসান নিজেরাই আত্মসাৎ করেছে মর্মে এলাকাবাসীর মাঝে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও বিদ্যালয়ের অধীনে সম্পত্তি(ওয়াকফ্) হওয়ায় ১৯৮৬ সালের ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশনের ব্যবসার ক্ষেত্রে বরাদ্দকৃত পজিশন মালিকরা ওই সম্পত্তির উপরে স্থায়ীভাবে দ্বিতল ভবনও নির্মাণ করতে পারবেনা। সেখানে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে স্থায়ীভাবে দ্বিতল-ত্রিতল ভবন নির্মাণ করছে পজিশন হোল্ডাররা। এছাড়াও বিদ্যালয়ের সম্পত্তি হস্তান্তর করে বসতবাড়ী নির্মাণ করার অভিযোগ রয়েছে বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। ওই বিদ্যালয়ের সম্পদ রক্ষা ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে গত ২৩ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে বিদ্যালয়ের দাতা সদস্যসহ সচেতন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে ওই প্রধান শিক্ষক এএসএম রশিদুল হাসান বলেন, বিদ্যালয়ের অনুকুলে অনেক সম্পত্তিই রয়েছে, তার মধ্যে ১ একর ৩শতাংশ জমি মহাসড়কের ৪ লেনের কাজে সরকার অধিগ্রহন করেছে। অধিগ্রহনকৃত সম্পত্তির সরকারিভাবে জমি হস্তান্তর মুল্যে ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। তবে ওই সম্পত্তির অধিকাংশতেই মামলা থাকার কারণে সাসেকের দেয়া অর্থ অদ্যাবধি হস্তান্তর করা হয়নি।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফেরদৌস জামান মুকুল বলেন, বিদ্যালয়ের সম্পত্তি নিয়ে কোন অনিময় বা দুর্নীতি নিয়ে দুদকে অভিযোগ দিয়েও লাভ করতে পারবেনা কুচক্রীমহল।
এ প্রসঙ্গে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ওই বিদ্যালয়ের সম্পদ নিয়ে একটি অনিয়ম ও দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েছি। তবে অভিযোগটি প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে, অনুমোদন হলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।