জামালপুরে তৃতীয় দফা বন্যার পানি গত রোববার (২৬জুলাই) অপরিবর্তিত রয়েয়েছে। বিকাল ৫ টা পর্যন্ত যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১১২ সেন্টিমিটার ও যগন্নাথগঞ্জ ঘাট পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ ওপানি মাপক গেজ পাঠক আবদুল মান্নান। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ জানিয়েছেন বলেন, আগামী ২৮ জুলাই পর্যন্ত যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। তাতে জামালপুরের বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হতে পারে।অপরদিকে বন্যায় পানির তোড়ে ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালের চর ইউনিয়নের সভারচর এলাকায় একটি সেতু ভেঙে কয়েক গ্রামের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে। সেতু ভাঙার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
এ দিকে দীর্ঘ ২৬ দিন যাবৎ বন্যায় চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে জেলার মানুষ। পানিবন্দি প্রায় ১০ লাখ দিনমজুর ও নিম্নআয়ের মানুষ গুলো খাদ্য সংকটে রয়েছে। বানভাসীদের দূর্ভোগ কমাতে সরকারী ভাবে খাদ্য সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানায় জেলার ৬৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৯টি ইউনিয়নের ৬৭৭টি গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এখন পর্যন্ত দশ লক্ষ মানুষ পানি বন্দি হয়ে আছে। করোনার পর ২৬ দিনের বন্যায় তাদের আয় রোজগার বন্ধ থাকায় খাদ্য সংকটে পড়েছে তারা। জেলার ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা মো.নায়েব আলী জানান, বন্যায় জেলার ২ লক্ষ, ৪৮ হাজার ৬৩৪ টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বন্যায় এ জেলায় ৩৮৬ টি বাড়ি সম্পুর্ণ এবং ১৩ হাজার ৭৩৮ টি বাড়ি অংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ৫ হাজার ৯৭ টি নলকুপ ডুবে গেছে। বন্যার কারণে ৬৬ কিলোমিটার পাকা রাস্ত ও ১’শ ৯৪ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ৫টি ব্রীজ ও কালর্ভাট,২৬৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,৬৫৮টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তথ্যমতে জেলায় ১১ হাজার ৫৩০ হেক্টর ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়েছে। এদিকে দীর্ঘ স্থায়ী বন্যায় জেলার ইসলামপুর উপজেলায় বিভিন্ন বন্যাদুর্গত এলাকায় প্রতিদিন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ফরিদুল হক খান দুলাল।
তবে বন্যায় সব চেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবারকে ইসলামপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ঈদ উপলক্ষে বানভাসী প্রতিটি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া শুরু হয়েছে। এ ছাড়া আশ্রয় কেন্দ্রে প্রতিদিন রুটি,, রান্না করা খাবার ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেয়া হচ্ছে। বন্যার কারণে কেউ অভুক্ত থাকবে না বলে তিনি জানান।