ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম বিল্লাহকে (৩২) গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ঢাকাণ্ডসিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছে তার সমর্থকরা। বুধবার সকালে সরাইল উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা ইশতিয়াক আহমেদ বাপ্পির নেতৃত্বে মহাসড়কের সরাইলের কুট্রাপাড়া এলাকায় শতাধিক কিশোর যুবক এ অবরোধ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছে। তবে পুলিশ বলছে প্রশাসনকে না জানিয়ে ইচ্ছেমত মহাসড়ক অবরোধ করা বিধি সম্মত নয়। আমরা বিষয়টি ভালভাবে তদন্ত করে আইনি পক্রিয়ায় দেখব।
পুলিশ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত মঙ্গলবার বিকেলে মহাসড়কের যে জায়গায় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম বিল্লাহর মটরবাইক আটক করেছিল পুলিশ সেই জায়গায়ই গতকাল অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে তার সমর্থকরা। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কুট্রাপড়া উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে বাপ্পির নেতৃত্বে মহাসড়ক অবরোধ করে ফেলে শতাধিক কিশোর ও যুবক। অবরোধ কারীদের তান্ডবে মহাসড়কের দুই দিকে আটকা পড়ে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী কোচ, বাস, ট্রাক, অটোরিকশা সহ সকল যানবাহন। তারা সড়কের উপর টায়ারে আগুন জ্বলিয়ে দেয়। একসময় ঢাকাণ্ডসিলেট, কুমিল্লা-সিলেট, চট্রগ্রাম-সিলেট, ময়মনসিংহ-সিলেট ও সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কে দীর্ঘ যানজট বেঁধে যায়। তিন দিকে প্রায় ৬ কিলোমিটার জায়গা পর্যন্ত গাড়ি আটকা পড়ে। অবরোধকারীরা বলেন, জেলা ছাত্রলীগ নেতা মাসুম ষড়যন্ত্রের শিকার। পুলিশের এ এস আই মো. আলাউদ্দিন ইচ্ছে করে মাসুমকে ফাঁসিয়েছেন। সম্পূর্ণ মনগড়া ভাবে পুলিশ মাসুমকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়েছেন। নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার সত্যতা উৎঘাটনের দাবী জানিয়েছে অবরোধকারীরা। ঘটনাস্থলে হাজির হন সহকারি পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) মো. আনিছুর রহমান, বিশ্বরোড (খাটিহাতা) হাইওয়ে থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরূজ্জামান ও সরাইল থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) মো. নাজমুল ইসলাম। দুপুর ১২টার পর অবরোধকারীরা আস্তে আস্তে সরে যায়। তবে বেলা ১টার পর যানজটমুক্ত হয় মহাসড়কটি। ছাত্রলীগ নেতার বিরূদ্ধে করা মামলার বাদী আলাউদ্দিন বলেন, আমি তো মাসুম বিল্লাহকে চিনিই না। দেহ তল্লাশি করে মাদক পেয়েছি। তার সাথে তো আমার কোন পূর্ব বিরোধ নেই। এখন আমাকে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্নজন দেখে নেয়ার হুমকি দিচ্ছেন। সরাইল থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) মো. নাজমুল আহমেদ বলেন, মাসুম বিল্লাহ’র বিরূদ্ধে এএসআই মো. আলাউদ্দিন বাদী হয়ে সরাইল থানায় দুটি মামলা দায়ের করেছেন। আমরা অবরোধের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিব। প্রসঙ্গত: গত মঙ্গলবার বিকেলে মাদকের নিয়মিত অভিযানে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মহাসড়কের কুট্রাপাড়া এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন এএসআই মো. আলাউদ্দিন। দুইজন আরোহীসহ জেলা শহর অভিমুখী একটি মটরবাইককে দাঁড়াতে সিগনাল দেন তিনি। নিজের পরিচয় দিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন আরোহী মাসুম। আলাউদ্দিন তা হতে দেননি। পুলিশের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে কিলঘুষি দিতে থাকেন। পরে মাসুম বিল্লাহর দেহ তল্লাশী করে ৬ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করে পুলিশ। সরাইল থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ ঘটনাস্থলে এসে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে মাসুম ও এনাম হককে নিয়ে যান থানায়। নানা নাটকিয়তা ও তদবিরের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে পুলিশ জানায় মাসুমের বিরূদ্ধে মাদক ও পুলিশের কর্তব্য কাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগে দুটি মামলা হয়েছে। আর বুধবার সকাল ৮টার দিকে মাসুমকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।