হাত ভর্তি সার্টিফিকেট, ক্রেস্ট আর গলাভর্তি মেডেল লাভের সাথে ক্ষুদে ক্রীড়াবিদ হিসেবেও জোহরার পরিচিতি লাভ হয়েছে। পুরোনাম মোছাঃ জোহরা খাতুন। চা বিক্রেতা দরিদ্র পিতা মাতা জোমের আলী ও রওশনআরা'র ১ ছেলে ১ মেয়ের মধ্যে ছোট সন্তান সে। বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তিস্তা অধ্যুষিত হাজীরহাট এলাকায়।
শিক্ষা জীবনে এন জামান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক সমাপনীতে উত্তীর্ণ হয়ে কালীগঞ্জের করিম উদ্দিন পাবলিক পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণিতে পড়া লেখা চলছে তার। আর এরই মধ্যে এতসব অর্জন অবাক করেছে শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীরসহ জেলাবাসীর সবাইকে ।
ছোটবেলা থেকেই দুরন্ত জোহরা পড়াশোনার চেয়েও বেশি মগ্ন থাকতো খেলাধুলায়। ফলে জীবনের অল্প সময়েই অর্জিত হয় ৩৩টি কৃতিত্ব সনদ ছাড়াও বহু সংখ্যক মেডেল ও ক্রেস্ট। সাতার প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করায় লাভ হয় কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের সংবর্ধনাও।
জোহরা কৃতিত্ব দেখিয়েছে উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ক্রীড়া ও শুদ্ধসুরে জাতীয় সঙ্গীত প্রতিযোগিতায়। দৌড়, লাফ, সাঁতার, ক্রিকেট, ভলিবল ও ফুটবলেই বেশি কৃতিত্ব জোহরার। এসবের মধ্যে সে মনে মনে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নই লালন করে চলছে সে। কারণ বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফুটবল টুর্ণামেন্ট তাকে খুব বেশি আকর্ষণ করে।
জেলা জুড়েই ক্ষুদে ক্রীড়াবিদের খ্যাতি এসেছে তার। জোহরা, তার পরিবার ও এলাকাবাসীসহ শুভাকাক্সক্ষীদের সবার চাওয়া জোহরার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ুক দেশ ও দেশের বাইরেও। দারিদ্র্যতাসহ শতবাঁধা সত্ত্বেও চেস্টা চলছে লক্ষ্যে পৌঁছারও। এ জন্য প্রয়োজন কিছুটা সহায়তা আর পৃষ্ঠপোষকতার। তবেই এ সংক্রান্ত (ক্রীড়া শিক্ষা)প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে জোহরা পুরন করবে নিজের ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন আর উজ্জ্বল করবে তিস্তাপাড়ের মানুষের মুখগুলো।
করিম উদ্দিন পাবলিক পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খুরশিদুজ্জামান আহমেদ বলেন, জোহরা সত্যি একজন প্রকুত ক্রীড়াবিদ। এ বয়সেই খেলা ধুলোয় সে অনেক গুলো সার্টিফিকেট অর্জন করার পাশাপাশি ম্যাডেল ও ক্রেষ্ট নিজের ঝুলিতে ভরেছে। ভবিষ্যতে সে একজন ভাল মানের ফুটবলার হতে চায়। তাই এই মুহুর্তে তার জন্য একজন পৃষ্ঠপোষক দরকার। তবেই সে তার কাঙ্খিত লক্ষে পৌছুতে পারবে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আবু জাফর জানান, মাত্র ৭ম শ্রেণীতে উঠেছে জোহরা। তাতেই ক্রীড়ায় তার এতো সাফল্য। এছাড়াও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফুটবল টুর্ণামেন্টে সে সবার নজর কেড়েছে। ভবিষ্যতে সে যেন একজন ভাল ফুটবলার হতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।