দুই বছর আগের জুয়ার বকেয়া টাকার জন্য জুয়ারীদের হামলায় তিন ব্যবসায়ি সহ আহত হয়েছে ৯ জন। উপজেলার পাকশিমুল গ্রামে ইউপি সদস্য মো. মোতালিব মিয়ার নেতৃত্বে গত রোববার এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তবে ইউপি চেয়ারম্যান বলছেন বাবুল শাহেদ সহ এখানে একটি বলয় গড়ে ওঠেছে। এ বলয় দাপটের সাথে পাকশিমুল গ্রামে জুয়া মাদক ও নারী গঠিত ব্যবসা করছে দীর্ঘদিন ধরে। বারবার প্রশাসনের কাছে জানিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানায়, এখানে যারা জুয়া, মাদক ও নারীর ব্যবসা করে তারা সকলেই ইউপি সদস্য মোতালেব মিয়ার আপনজন ও স্বজন। তাদের দাপটের কাছে স্থানীয় লোকজন বরাবরই অসহায়। ২০১৮ সালে জুয়ার ঘরে আঙ্গুর মিয়াকে ২৭ হাজার টাকা ধার দিয়েছিল মোতালেব মেম্বারের সহোদর ভাই বাবুল। শর্ত ছিল এক সপ্তাহ পর লাভ দিতে হবে ৩ হাজার টাকা। লাভে আসলে টাকা দিয়েছিল ২০ দিন পর। এ বিষয়টি সহজ ভাবে নেয়নি বাবুল। গত কিছুদিন আগে অরূয়াইল বাজারে আঙ্গুর মিয়ার কাছে ২০১৮ সালের টাকার আরো সুদ ৫ হাজার টাকা দাবী করে বসেন বাবুল। বোকা বনে যান আঙ্গুর মিয়া। বিষয়টি নিয়ে ঝামেলা বাঁধতে পারে মনে করে সাবেক চেয়ারম্যান কাছম আলী হস্তক্ষেপ করেন। তিনি আঙ্গুর মিয়াকে বুঝিয়ে ৫ হাজার নেন। পরে মোতালিব মেম্বার ও বাবুলসহ তাদেরকে টাকা নেওয়ার জন্য খবর দেন। আসছি আসছি বলে সময় ক্ষেপন করেন। হঠাৎ করে গত রোববার সকালে মোতালিব মেম্বার, বাবুল সহ গোটা বলয়ের ১০-১২ জন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আঙ্গুর মিয়ার উপর হামলা চালায়। এতে আঙ্গুর মিয়া (২৮), তার বৃদ্ধ পিতা হাজী রজব আলী (৮০) ও শন্তু মিয়াকে (৫০) পিটিয়ে আহত করে। হামলায় বাঁধা দেওয়ায় পাকশিমুল বাজারের ব্যবসায়ি এনামুল হক (২৬), এলাছ মিয়া (৩৫) ও শাহিদ মিয়া (৫০) কে মারধর করে তারা গুরূতর আহত করে। আহত ৩ ব্যবসায়ি জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ইউপি সদস্য মো. মোতালিব মিয়া বলেন, জুয়া মাদক নারী এসব মিথ্যা অভিযোগ। জুয়ার নয় ৮০ হাজার কর্জ নিয়েছিল। বাকী ৫ হাজার টাকা চাওয়ায় আমার ভাই বাবুলকে প্রথমে গালমন্দ ও পরে মারধর করেছে। তাদের হামলায় আ. ছালাম (১৫), আ. হাসিম (৩৫) ও বাবুল (৩২) আহত হয়েছে। এখন তারা আমাদেরকে বাজারে যেতে দেয় না। পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এখানে মোতালিব মিয়া, তার সহোদর ভাই ও স্বজনদের সমন্বয়ে একটি বাহিনী গড়ে ওঠেছে। তাদের কাজই হচ্ছে জুয়া, মাদক ও নারীর ব্যবসা পরিচালনা করে টাকা কামাই করা। আমি এসব বিষয় একাধিকবার প্রশাসনকে জানিয়েছি। আজও কোন প্রতিকার পায়নি। প্রসঙ্গত: গত আইন শৃঙ্খলা সভায় সাংবাদিক মো. শফিকুর রহমান বলেছেন, মোতালিবের নেতৃত্বে পাকশিমুল এলাকায় বড় বড় জুয়ার আসর চলছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোতালিব বলেন, যেভাবে চলছে। এভাবেই চলবে। থানার ওসি আমার পকেটে থাকে।