তানোরে ডিভোর্স দেয়ায় গলাই দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এক গৃহবধু প্রেমিকা। ঘটনার পর থেকে প্রেমিকার স্বামী প্রেমিক থানা মোড়ের শুভ স্টুডিও’র মালিক মোস্তাফিজুর রহমান পলাতক রয়েছে।
ওই প্রেমিকা গৃহবধুর নাম সাহানাজ বেগম (২২)। তিনি তানোর উপজেলার কামারগাঁ গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম চাপা ক্ষোভ অসন্তোষের পাশাপাশি ব্যাপক চাঞ্চ্যের সৃষ্টি হয়েছে।
তানোর থানা পুলিশ মহানগর ক্লিনিকের ৩য় তলার ভাড়া করা বাসা থেকে ওই গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়েছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান।
এলাকাবাসীসহ প্রত্যক্ষদর্শি ও পুলিশ সত্রে জানা গেছে, ওই প্রবাসী স্ত্রী (১ মেয়ে সন্তানের জননী) সাহানাজ বেগম (২২) মেয়েসহ তার মাকে নিয়ে উপজেলার উত্তর পার্শ্বের জৈনক ইউনুস আলীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন।
প্রবাসী স্বামী প্রতি মাসেই নিয়মিত ভাবেই তার কাছে বিকাশে টাকা পাঠাতেন। বিকাশ থেকে ওই টাকা তোলার জন্য প্রবাসীর স্ত্রী সাহানাজ বেগম থানা মোড়ের শুভ স্টুডিওতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন।
এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের সুত্র ধরে দৌহিক সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং স্টুডিও’র মালিক মোস্তাফিজুল রহমান ১লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এমন খবর শুনে প্রবাসে থাকা স্বামী তার স্ত্রী সাহানাজ বেগমকে ডিভোর্স দিয়ে মেয়েকে দাদার বাড়ি পাঠিয়ে দেন এবং শ্বাশুড়ীও চলে যান তার নিজ বাড়িতে।
এঘটনায় ওই গৃহবধু মোস্তাফিজুরের কাছে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য তানোর থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু কোন ডকুমেন্ট বা স্বাক্ষী না থাকায় টাকা আদায় করা যায়নি।
চলতি বছরের ২৫জুন ওই গৃহবধু বিয়ের দাবিতে থানা মোড়ের শুভ স্টুডিওতে অনশন শুরু করার পর শুভ স্টুডিও’র মালিক মোস্তাফিজুর রহমান ওই গৃহবধু প্রেমিকাকে বিয়ে করে মহানগর ক্লিনিকের ৩য় তলার ভাড়া করা বাসায় সংসার শুরু করেন।
এ অবস্থায় গত কোরবানি ঈদের পর থেকে মোস্তাফিজুর তার প্রেমিকা স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ ও যাতায়াত বন্ধ রাখেন এবং গত (৯ই আগষ্ট) রোববার কোর্টের মাধ্যমে তার প্রেমিকা গৃহবধু সাহানাজকে ডিভোর্স দেন।
গত বৃহস্পতিবার ওই গৃহবধু মোস্তাফিজুরের ডিভোর্স পত্র হাতে পান। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আপোষের চেষ্টা চলছিলো। আজ (১৪ই আগষ্ট) শুক্রবার দুপরের যেকোন একসময় ভেতর থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে নিজ ঘরে গলাই দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন গৃহবধু প্রেমিকা সাহানাজ বেগম।
বিকাল ৩টার দিকে ক্লিনিকের লোকজনসহ প্রতিবেশীরা ডাকা-ডাকি করেন। কিন্তু সাহানাজ ঘরের দরজা না খোলায় তানোর থানা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। তবে, প্রেমিক মোস্তাফিজুরের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে তার মোবাইল ফোন ও স্টুডিও বন্ধ রয়েছে।
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, ময়না তদন্তের জন্য লাশ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সাহানাজের মাকে খবর দেয়া হয়েছে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের প্রস্তুতি চলছে।